হকিং রেডিয়েশন কি? কেন ব্ল্যাক হোল থেকে এটি নির্গত হয়? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+12 টি ভোট
522 বার দেখা হয়েছে
"জ্যোতির্বিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (7,990 পয়েন্ট)

1 উত্তর

+3 টি ভোট
করেছেন (15,710 পয়েন্ট)
হকিং বিকিরণ হল কৃষ্ণগহ্বর হতে নিঃসরিত এক ধরনের বিকিরণ যার উৎস হল কৃষ্ণগহ্বরের আশে পাশের এলাকা। কৃষ্ণবিবরের ঘটনা দিগন্ত হতে এই বিকিরণের যাত্রা শুরু বলে ধরে নেয়া হয়। হকিং বিকিরণ নামকরণ করা হয়েছে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের নাম অনুসারে। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংই ১৯৭৪ সালে একটি অঙ্ক কষে দেখান এর অস্তিত্বের কথা। কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যাকর্ষণ শক্তি এতই বেশি যে সবচে দ্রুত বেগে ধাবমান আলোর কণাও এর মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনা। একবার কৃষ্ণগহ্বরের ঘটনা দিগন্তের (Event Horizon) ব্যাসার্ধের মধ্যে যদি কোন কিছু ঢুকে যায়, ফেরত আসার আর কোন পথ থাকেনা। যেহেতু আলোও এর মধ্য থেকে বের হতে পারেনা তাই কৃষ্ণগহ্বর দেখা যায়না। এমন বৈজ্ঞানিক বিশ্বাসের মাঝে বিজ্ঞানী হকিং বললেন কৃষ্ণগহ্বর থেকেও বিকিরণ সম্ভব। এবং এটা নিয়মিত হচ্ছে। এই বিকিরণের জন্য যে শক্তি দরকার তা ঐ কৃষ্ণগহ্বরই সরবারহ করে। এই বিকিরণকেই হকিং বিকিরণ বলা হয়। বিজ্ঞানী জ্যাকব বেকেনস্টাইন, যিনি কৃষ্ণগহ্বরের এনট্রপি এবং তাপমাত্রা নিয়ে অনেক গবেষণা করে গেছেন এবং বলে গেছেন যে কৃষ্ণগহ্বরের একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও এনট্রপি থাকবে যা শূন্যও নয়, অসীমও নয় বরং সসীম। তাই এই বিজ্ঞানীর নামকে অন্তর্ভুক্ত করে অনেক সময় এ বিকিরণকে হকিং-বেকেনস্টাইন বিকিরণও বলা হয়।

হকিং এর কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৭৩ সালে তার মস্কো পরিদর্শনের পর যেখানে সোভিয়েত বিজ্ঞানী ইয়াকভ যেলদোভিচ এবং অ্যালেক্সেই স্টারোবিনস্কি তাকে দেখান যে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার অনিশ্চয়তার নীতি অনুসারে ঘূর্ণায়মাণ কৃষ্ণগহ্বরের কণা তৈরি এবং নির্গমন করার কথা। হকিং বিকিরণ কৃষ্ণগহ্বরের ভর এবং শক্তি কমায় যেটা black hole evaporation নামেও পরিচিত। এই কারণে, যেসব কৃষ্ণগহ্বরের অন্য কোনো কারণে ভর বৃদ্ধি পায় না তারা ছোটো হতে থাকবে এবং সবশেষে নিঃশেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা হয়। ধারণা করা হয় যে, ছোটো কৃষ্ণগহ্বর বড় কৃষ্ণগহ্বর হতে বেশি পরিমাণে বিকিরণ নিঃসরণ করে এবং তাড়াতাড়ি ছোটো এবং নিঃশেষ হয়।

২০০৮ সালের জুন মাসে নাসা ফার্মি স্পেস টেলিস্কোপ উৎক্ষেপণ করে যেটা প্রান্তীয় গামা রশ্মির খোঁজ করছে প্রাথমিক পর্যায়ের কৃষ্ণগহ্বর থেকে নিঃসৃত বলে আশা করা হয়। এই ঘটনায় লার্জ এক্সট্রা ডাইমেনশন এর তত্বগুলো সঠিক হলে সার্নের লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার হয়তবা ছোটো আকারের কৃষ্ণগহ্বর তৈরি করতে সক্ষম হবে এবং তার নিঃশেষকরণ দেখতে পারবে।

২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দাবি করা হয় যে একটা পরীক্ষাগারে অপ্টিকাল লাইট পালস নিয়ে পরীক্ষনে একটা সঙ্কেত দেখা যায় যেটা কৃষ্ণগহ্বরের হকিং বিকিরণের সাথে খুব সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাও ফলাফলগুলো অপরীক্ষিত এবং বিতর্কিতই থেকে যায়। এই বিকিরণ শনাক্ত করতে অন্য প্রজেক্টও শুরু হয়েছে অ্যানালগ গ্র্যাভিটির কাঠামোতে।

হকিং বিকিরণের ব্যাখ্যা দেয় কোয়ান্টাম বলবিদ্যা। কোয়ান্টাম বলবিদ্যা অনুযায়ী শূন্যস্থান আসলে শূন্য না। সে শূন্যস্থানে অবিরত ভার্চুয়াল কণা নামের কণিকারা জোড়ায় জোড়ায় উৎপন্ন হচ্ছে। এই জোড়ার মধ্যে একটি বাস্তব কণা, অন্যটি প্রতিকণা। এই কণা প্রতিকণা উৎপন্ন হবার পর এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশের মত ক্ষুদ্র সময়েই এরা একটা আরেকটার সাথে মিলে নিঃশেষ হয়ে যায়। সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথেই বিলীন হয়ে যায়। কিন্তু যখন এই ভার্চুয়াল কণারা কৃষ্ণগহ্বরের ঘটনা দিগন্তের কাছে সৃষ্টি হয় তখন কৃষ্ণগহ্বর এই কণাদের প্রভাবিত করে। কৃষ্ণগহ্বর কর্তৃক প্রযুক্ত শক্তির প্রভাবে এই কণাযুগল আর একে অপরের সাথে মিলিত হয়না। দুটি কণার একটিকে নিজের দিকে টেনে নেয় আরেকটিকে বাইরে ঠেলে দেয়। কণাটির বাইরে চলে আসতে যে শক্তির দরকার হয় তা সরবারহ করে কৃষ্ণগহ্বর নিজে।

সূত্রঃ উইকিপিডিয়া

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+15 টি ভোট
1 উত্তর 741 বার দেখা হয়েছে
+12 টি ভোট
1 উত্তর 360 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 1,253 বার দেখা হয়েছে

10,775 টি প্রশ্ন

18,459 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

265,771 জন সদস্য

43 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 43 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Nafis Hasan

    220 পয়েন্ট

  2. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  3. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  4. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  5. WendiDoe070

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...