উত্তরটা হচ্ছে হ্যাঁ; আমাদের মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়।
মস্তিষ্ক আমাদের দেহের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন অঙ্গ যার কার্যকলাপ চলতে শরু করে ভ্রুন অবস্থা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। দৈনন্দিন জীবনে আমরা যত কাজ করি তার সবই মস্তিষ্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই যে দিন-রাত ২৪ ঘন্টা মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ চলতে থাকে তারজন্য কিন্ত বিপুল পরিমান শক্তির প্রয়োজন হয়। মস্তিষ্ক আমাদের দেহের ওজনের মাত্র দুইভাগ হলেও শক্তি খরচের দিক দিয়ে সবচাইতে এগিয়ে। আমাদের ব্রেইন বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ চালু রাখতে দেহে উৎপাদিত মোট দৈহিক শক্তির (এনার্জি) ২০ থেকে ২৫ ভাগ পর্যন্ত একাই খরচ করে থাকে। সংখ্যার হিসেবে একজন লোক দৈনিক প্রায় ৩২০ কিলোক্যালরি খরচ করে শুধুমাত্র চিন্তা করার কাজে। ছোটবেলায় মস্তিষ্ক আরও বেশি ক্ষুধার্ত থাকে। গড়ে পাঁচ থেকে ছয় বছরের শিশুদের শরীরের মোট শক্তির ৬০ শতাংশই চলে মস্তিষ্কের কাজে।
আর মস্তিষ্কের এই শক্তির যোগানদাতা মূলত সরল গ্লুকোজ যা ATP-তে রুপান্তরিত হয়ে মস্তিষ্কের কোষগুলোকে শক্তির যোগান দিয়ে থাকে। কিন্ত দেহে গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দেওয়া কিংবা অন্য কোনো কারনে চাহিদার তুলনায় মস্তিষ্কে গ্লুকোজের সরবরাহ কমে যায় তখন মস্তিষ্কের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এবং ডোমামিন নিঃসরন ব্যাপক হারে কমে যায়। এককথায় বলতে গেলে মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে যায়। আর এই ক্লান্তিভাব কাটানোর জন্য মস্তিষ্ককে একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর বিশ্রামে যেতে হয় আর যেটা আমরা ঘুমের মাধ্যমে পূরণ করি।
মস্তিষ্কের বিস্রামের জন্য ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ন। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুম কম হলে মানুষের মস্তিষ্ক পুরোপুরি কাজ করতে পারে না। এই প্রসঙ্গে ঘুম নিয়ে গবেষণা করা বিজ্ঞানী ওয়েন বলছেন, মস্তিষ্কের যে দুটো অংশ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও স্মৃতি সংরক্ষণে কাজ করে, ঠিক মতো ঘুম না হলে, সেই দুটো অংশ খুব বেশি সক্রিয় হয় না। তাই মস্তিষ্কের ক্লান্তি দূর করার জন্য ঘুম অপরিহার্য।
রেফারেন্সঃ
(1) Marcora, S. M., Staiano, W., & Manning, V. (2009). Mental fatigue impairs physical performance in humans. Journal of applied physiology, 106(3), 857-864.
(2) Secher, N. H., Quistorff, B., & Dalsgaard, M. K. (2006). The muscles work, but the brain gets tired. Ugeskrift for laeger, 168(51), 4503-4506.
(3) https://blog.sciencemuseum.org.uk/take-part-worlds-largest-sleep-study/