হিমোফিলিয়া আসলে কী ? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+2 টি ভোট
442 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (135,490 পয়েন্ট)

5 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (135,490 পয়েন্ট)

হিমোফিলিয়া শব্দটি এসেছে দুটি গ্রিক শব্দ হাইমা এবং ফিলিয়া হতে। হাইমা অর্থ রক্ত এবং ফিলিয়া অর্থ আকর্ষণ। দেহের কোনো অংশে রক্তপাত শুরু হলে সাধারণত সেখানে রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে। মেডিকেলের ভাষায় এই প্রক্রিয়াকে ক্লটিং বলে। ক্লটিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রক্ত জমাট বেঁধে ধীরে ধীরে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়। সত্য বলতে, আমাদের দেহে কোথাও কোনো ক্ষত তৈরি হলে সেই ক্ষতস্থান সময়ের সাথে সাথে শুকিয়ে যাওয়াকেই ক্লটিং বলে। যে পদার্থ রক্তক্ষরণে বাঁধা দেয় তাকে ক্লট বলে। কিন্তু কোনো কারণে ক্ষতস্থানে এই ক্লট তৈরি না হলে সেখান থেকে একাধারে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।

একজন হিমোফিলিয়া আক্রান্ত রোগীর দেহে এই ক্লট সৃষ্টির প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিক নয়। ব্যাপারটি আসলে এমন নয় যে, রোগীর দেহ থেকে অঝোরে এবং খুব দ্রুত রক্তক্ষরণ হতে থাকবে। মূলত একজন হিমোফিলিয়াক (যারা হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত) ব্যক্তির দেহ থেকে দীর্ঘ সময় ধরে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।

image

রক্তের বিভিন্ন প্রোটিন ফ্যাক্টর রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে;

Image Source: Youtube

আরেকটি বিষয় পরিষ্কার করা দরকার। অনেকে হয়তো এখন মনে করছেন যে, এই রোগ হলে হাত, পা, হাঁটু ইত্যাদির কোথাও কেটে গেলেই তা থেকে অনবরত রক্ত ঝরতে থাকবে। ব্যাপারটি ঠিক তা নয়। দেহের বাইরের কোনো ছোটখাটো আঘাত এখানে খুব একটা চিন্তার বিষয় নয়। আসল চিন্তার বিষয় হলো ইন্টারনাল ব্লিডিং বা দেহের অভ্যন্তরীণ কোনো অংশে রক্তক্ষরণ। এই ধরণের রক্তক্ষরণকে হ্যামোরেজ বলে। এটি মূলত দেখা যায় দেহের ভিতরে কোনো সন্ধি যেমন হাঁটু ও গোড়ালিতে। এছাড়া দেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন টিস্যু ও পেশীর মিলনস্থলেও রক্তক্ষরণ হতে পারে। দেহের ভিতরে এমন রক্তক্ষরণ অনেক যন্ত্রণাদায়ক হয় এবং আক্রান্ত অংশ বেশ ফুলতে শুরু করে।

0 টি ভোট
করেছেন (750 পয়েন্ট)
হিমোফিলিয়া সাধারণত একটি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত রক্তক্ষরণ ব্যাধি যেখানে রক্ত সঠিকভাবে জমাট বাঁধে না। এটি স্বতঃস্ফূর্ত রক্তপাতের পাশাপাশি আঘাত বা অস্ত্রোপচারের পরে রক্তপাত হতে পারে। রক্তে অনেক প্রোটিন রয়েছে যাকে বলা হয় ক্লটিং ফ্যাক্টর যা রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্য করতে পারে।
0 টি ভোট
করেছেন (28,740 পয়েন্ট)
সহজভাবে বলা যায়, হিমোফিলিয়া হচ্ছে রক্তপাত বন্ধ না হওয়ার রোগ । অন্য কথায়, রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা কমে যাওয়া। এই রোগটি সম্পর্কে অজ্ঞাত অনেকেই।
0 টি ভোট
করেছেন (340 পয়েন্ট)

রক্ত জমাট বাঁধার জন্য অণুচক্রিকার পাশাপাশি অনেকগুলো, কমবেশি ১৩ টি ক্লটিং ফ্যাক্টর কাজ করে। 

হিমোফিলিয়া এমন একটি সেক্স ক্রোমোজোমাল ডিজিজ যেখানে ফ্যাক্টর ৮ অথবা ৯ ( অ্যান্টিহিমোফিলিক ফ্যাক্টর) এর ঘাটতি থাকে। এটি সেক্স ক্রোমোজম X মাধ্যমে বাহিত হয়, যেখানে X ক্রোমোজোম ত্রুটিপূর্ণ জিন বহন করে । পুরুষের একটিমাত্র X ক্রোমোজোম থাকায় এখানে মিউটেশন হলেই তারা এই রোগে আক্রান্ত হয়। কিন্তু নারীদের দুটি X ক্রোমোজোম থাকায় একটি আক্রান্ত হলেও অন্যটি সুস্থ থাকে, ফলে তারা আক্রান্ত না হয়ে বাহক হয়। বিরল ক্ষেত্রে দুটো ক্রোমোজোমে মিউটেশন হয়ে নারীরাও আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত নারীরা বাহক আর পুরুষরা আক্রান্ত হয়।

যেহেতু ঠিকমতো রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না তাই সহজে রক্তক্ষরণও বন্ধ হয় না। টিস্যুর নিচে, পেশির ভিতরে, মাথার খুলির ভিতরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ বা হেমারেজ হতে পারে৷ প্রস্রাবের সাথে বা বমির সাথেও রক্ত যেতে পারে। সার্জারি বা ছোটোখাটো ট্রমা এমনকি দাঁত তোলার পরেও অনেকক্ষণ ব্লিডিং হতে পারে। 

0 টি ভোট
করেছেন (700 পয়েন্ট)

হিমোফিলিয়া কী?
হিমোফিলিয়া হলো একটি জেনেটিক রোগ, মানে এটা আমাদের জিনের মাধ্যমে বাবা-মা থেকে সন্তানের কাছে চলে আসে। এই রোগে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা ঠিকমতো কাজ করে না। সাধারণত, আমরা যখন কেটে যাই বা আঘাত পাই, তখন আমাদের রক্তের মধ্যে থাকা কিছু প্রোটিন (যাকে বলে ক্লটিং ফ্যাক্টর) রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে, যাতে রক্তপাত বন্ধ হয়। কিন্তু হিমোফিলিয়ায় এই ক্লটিং ফ্যাক্টরগুলোর মধ্যে কোনো একটি ঠিকঠাক কাজ করে না বা একেবারেই থাকে না। ফলে রক্তপাত বন্ধ হতে অনেক সময় লাগে, এমনকি ছোটখাটো কাটাছেঁড়াতেও প্রচুর রক্ত বেরিয়ে যেতে পারে।

বিজ্ঞানের দিক থেকে এটা কীভাবে হয়?
আমাদের শরীরে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম আছে, যেগুলো আমাদের জিন বহন করে। হিমোফিলিয়া সাধারণত X ক্রোমোজোমের সঙ্গে জড়িত। X আর Y ক্রোমোজোম আমাদের লিঙ্গ নির্ধারণ করে—ছেলেদের XY আর মেয়েদের XX থাকে। হিমোফিলিয়ার জন্য দায়ী জিনটা X ক্রোমোজোমে থাকে। যদি এই জিনে কোনো ত্রুটি (মিউটেশন) হয়, তাহলে হিমোফিলিয়া হয়।

ছেলেদের ক্ষেত্রে এটা বেশি দেখা যায় কেননা তাদের শুধু একটা X ক্রোমোজোম থাকে। যদি সেই X-এ ত্রুটি থাকে, তাহলে সমস্যা হয়। মেয়েদের দুটো X থাকে, তাই একটায় ত্রুটি থাকলেও অন্যটা কাজ করতে পারে। এজন্য মেয়েরা সাধারণত শুধু বাহক (ক্যারিয়ার) হয়, আর ছেলেরা রোগটা পায়।

ক্লটিং ফ্যাক্টর কী?
রক্ত জমাট বাঁধার জন্য অনেকগুলো প্রোটিন একসঙ্গে কাজ করে, যাদের নাম দেওয়া হয়েছে ফ্যাক্টর I, II, III এভাবে। হিমোফিলিয়ায় মূলত ফ্যাক্টর VIII (৮) বা ফ্যাক্টর IX (৯) এর সমস্যা হয়।

  • হিমোফিলিয়া A: ফ্যাক্টর VIII কম থাকে বা কাজ করে না। এটা সবচেয়ে সাধারণ ধরন।

  • হিমোফিলিয়া B: ফ্যাক্টর IX এর সমস্যা হয়। এটাকে ক্রিসমাস ডিজিজও বলে।

লক্ষণগুলো কী কী?

  • ছোট আঘাতে বা কাটায় অনেকক্ষণ রক্তপাত।

  • হাঁটু, কনুইয়ের মতো জয়েন্টে রক্ত জমে ব্যথা আর ফোলা।

  • নাক দিয়ে রক্ত পড়া বা মাড়ি থেকে রক্ত বেরোনো।

  • গুরুতর ক্ষেত্রে শরীরের ভেতরে রক্তপাত হতে পারে, যেটা খুব বিপজ্জনক।

কীভাবে চিকিৎসা করা হয়?
আধুনিক বিজ্ঞানে হিমোফিলিয়ার চিকিৎসা অনেক উন্নত। ডাক্তাররা যে ফ্যাক্টরটা কম আছে, সেটা ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে দেয়। এছাড়া জিন থেরাপির গবেষণা চলছে, যাতে ভবিষ্যতে এই রোগ পুরোপুরি সারানো যায়। তবে রোগীদের সাবধানে থাকতে হয়—যেমন খেলাধুলায় আঘাত এড়ানো, নিয়মিত চেকআপ করা।

মজার তথ্য: জানো, রাশিয়ার জার পরিবারে হিমোফিলিয়া ছিল। রানী ভিক্টোরিয়া এর বাহক ছিলেন, আর তার বংশের মাধ্যমে এটা ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য একে “রয়্যাল ডিজিজ”ও বলা হয়।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 170 বার দেখা হয়েছে
04 ডিসেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,490 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 237 বার দেখা হয়েছে
04 ডিসেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,490 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
4 টি উত্তর 1,043 বার দেখা হয়েছে
03 ডিসেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,490 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 278 বার দেখা হয়েছে
03 ডিসেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,490 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 765 বার দেখা হয়েছে
15 জানুয়ারি 2023 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Tasnim Fatema (200 পয়েন্ট)

10,807 টি প্রশ্ন

18,512 টি উত্তর

4,744 টি মন্তব্য

516,078 জন সদস্য

65 জন অনলাইনে রয়েছে
21 জন সদস্য এবং 44 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ

    1280 পয়েন্ট

  2. Dibbo_Nath

    370 পয়েন্ট

  3. Fatema Tasnim

    340 পয়েন্ট

  4. _Polas

    160 পয়েন্ট

  5. Arnab1804

    140 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি মাথা স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে ডিম চাঁদ কেন বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মাছ মশা শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা মস্তিষ্ক ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাংলাদেশ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...