বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা:
যখন দুটি তরল একসাথে হয় তখন তারা তাদের উপাদানগত ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে খুব দ্রুত একে অপরের সাথে মিশে যায়, মিশতে সময় নেয় বা একেবারেই মিশে না। এই মিশে যাওয়া বা না মেশার ব্যাপারটা সেই দুটি তরল পদার্থের বেশ কিছু গুণাবলীর উপর নির্ভর করে, যেমন, তাপমাত্রা, ঘনত্ব, প্রবাহের হার (ফ্লো ভলিউম), প্রবাহের দিক, খনিজ বা অন্যান্য অপদ্রব্যের পরিমাণ, রাসায়নিক গঠন ইত্যাদি। এই পার্থক্য বা পার্থক্যগুলো যতো বেশি হবে, তরলের দুটি ভিন্ন ধারা মিশতে তত বেশি সময় নিবে। বাড়িতে আমরা সাধারণ কলমের কালি এবং পানি নিয়ে খুব সহজেই নিজেরাও পরীক্ষাটা করতে পারি। গরম পানিতে যতো সহজে কলমের কালি মিশে যাবে, ঠাণ্ডা পানিতে তার চেয়ে অনেক বেশি সময় লাগবে। অল্প কালি দিলে মিশতে যতো সময় লাগবে, বেশি পরিমাণ দিলে তার চেয়ে অনেক বেশি সময় লাগবে।
দুটি সাগরের পানির না মিশে যাওয়ার যে ব্যাপারটা, সেটাও এমনই সাধারণ একটি ঘটনা এবং এটি প্রথম নজরে আসে “কেন ব্রুল্যান্ড” নামক এক প্রফেসরের তোলা গালফ অফ আলাস্কার এক ছবির মাধ্যমে, যেটা তিনি তারা গবেষণার কাজে তুলেছিলেন, ২০০৭ এ। সে ছবিতে দেখা যায়, একটা নদী গালফ অফ আলাস্কায় গিয়ে পড়ার পর সেটার পানি না মিশে সাগরের পানির পাশাপাশি অনেকদূর প্রবাহিত হতে থাকে। নদীর পানিতে উপস্থিত অতিরিক্ত আয়রন এবং পলিমাটির কারণে সৃষ্ট ঘনত্বের ভিন্নতার কারণে সেটা মোহনায় গিয়ে সাগরের পানির সাথে সরাসরি এবং দ্রুত মিশে যেতে পারে না, বরং অনেকটা সময় পাশাপাশি চলছে বলে মনে হয়।
ক্রেডিট : যাচাই