হাইপারট্রাইকোসিস বা দেহে অবাঞ্ছিত চুল গজানোর রোগ নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাই। - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+9 টি ভোট
1,312 বার দেখা হয়েছে
"জীববিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (7,950 পয়েন্ট)

1 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (150 পয়েন্ট)

হাইপারট্রাইকোসিস কি?

হাইপারট্রাইকোসিস একটি চর্মরোগ যাতে দেহের কোনো জায়গায় অতিরিক্ত চুল গজাতে পারে।

চর্মবিশেষজ্ঞরা এটিকে নিম্নলিখিত শ্রেণীতে ভাগ করেন:

● জন্মগত (congenital) বা পরে হওয়া (acquired)

● সীমিত (localised) বা ছড়িয়ে পড়া (generalised)

● চুলের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে; অর্থাৎ লানুগো, ভেলাস না টার্মিনাল (lanugo, vellous or terminal)

হাইপারট্রাইকোসিসের সবচেয়ে লক্ষণীয় উপসর্গ হল সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি পরিমাণে চুল গজানো। এই চুল লানুগো (নরম, রংবিহীন চুল যা সদ্যোজাত বাচ্চাদের জন্মের পরের কয়েকদিন দেখা যায়), ভেলাস (পাতলা, সরু চুল), বা টার্মিনাল (যেরকম মোটা চুল পায়ে দেখা যায়) প্রকৃতির হতে পারে।

এই অতিরিক্ত বৃদ্ধি দেহের সর্বত্র হতে পারে বা ছোট, সীমিত জায়গায় হতে পারে। এই বিরল রোগটি মহিলা ও পুরুষ উভয়ের মধ্যে সমানভাবে দেখা যায়। এটি জন্মের সময় প্রকাশ পেতে পারে বা পরবর্তী জীবনে নতুন করে হতে পারে।

প্রকারভেদ ও শ্রেণীবিন্যাস

হাইপারট্রাইকোসিসের কারণগুলি এখনও পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি। তবে চর্মবিশেষজ্ঞরা একে সাধারণতঃ জন্মগত বা পরবর্তী জীবনে শুরু হওয়া-এই দুই ভাগে ভাগ করেন। এই দুটি প্রকারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তফাৎগুলি হল:

জন্মগত (congenital) হাইপারট্রাইকোসিস

এই হাইপারট্রাইকোসিস জন্ম থেকে দেখা যায়, বিভিন্ন সিনড্রোমের (syndrome) বা বংশগত রোগের অংশ হিসেবে। এর সঙ্গে অন্যান্য সমস্যা থাকে যেমন মাড়ির অতিরিক্ত বৃদ্ধি বা মুখের গঠনের অস্বাভাবিকতা।

কিছু ক্ষেত্রে কোনো অন্য শারীরিক সমস্যা ছাড়া একাই এই রোগটি দেখা যেতে পারে, তবে পরিবারে অন্য কারুর হওয়ার ইতিহাস থাকতে পারে।

জন্মগত হাইপারট্রাইকোসিস সীমিত হতে পারে বা সারা শরীরে ছড়াতে পারে।

 

সারা দেহে ছড়ানো (generalised) হাইপারট্রাইকোসিস: এটি একটি বিরল রোগ যার অনেকরকম কারণ থাকতে পারে। জন্মগত সারা শরীরে হাইপারট্রাইকোসিস বিভিন্ন সিনড্রোমের অংশ হিসেবে দেখা যেতে পারে। অ্যামব্রাস সিনড্রোম (Ambras syndrome), কানটু সিনড্রোম (Cantu syndrome) এবং কর্নেলিয়া ডি ল্যাঞ্জ সিনড্রোমে (Cornelia de Lange syndrome) অতিরিক্ত চুলের বৃদ্ধি ছাড়া অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও থাকে।

কিছু অসুখ আছে যেমন জন্মগত হাইপারট্রাইকোসিস লানুজিনোসা (congenital hypertrichosis lanuginosa) এবং ইউনিভার্সাল হাইপারট্রাইকোসিস (universal hypertrichosis) যাতে অস্বাভাবিক চুলের বৃদ্ধিই একমাত্র উপসর্গ। কখনও কখনও গর্ভাবস্থায় হাইড‍্যানটয়েন জাতীয় ওষুধ বা অ্যালকোহলের প্রভাবে বাচ্চার এরকম হতে পারে।

সীমিত (localised) হাইপারট্রাইকোসিস: এই রোগটি মেরুদণ্ডের হাড় বা সুষুম্নার (spinal cord) সমস্যার অংশ হিসেবে দেখা যেতে পারে। জন্মগত মেলানোসাইটিক নেভাস (congenital melanocytic nevus) বা বেকার’স নেভাসের (Becker’s nevus) সাথেও দেখা যেতে পারে।

 

পরবর্তী জীবনে হওয়া (acquired) হাইপারট্রাইকোসিস

এতে মানুষের জন্ম থেকে অতিরিক্ত চুলের বৃদ্ধি থাকে না, পরবর্তী জীবনে দেখা যায়। এটিও সারা দেহে ছড়ানো বা সীমিত হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী অসুখ যেমন ক্যান্সার, থাইরয়েডের সমস্যা বা অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসার (anorexia nervosa) ফলে এই হাইপারট্রাইকোসিস হতে পারে। ত্বকের ক্রমাগত ঘর্ষণ যেমন ভাঙার জন্য প্লাস্টার করে রাখার পরে বা লাগানোর (topical) ওষুধ যেমন স্টেরয়েড (steroid) বা মিনোক্সিডিল (minoxidil) ব্যবহার করার পরেও এটি দেখা যেতে পারে। এছাড়া ডার্মাটোমায়োসাইটিস (dermatomyositis) রোগের অংশ (যখন হাঁটুর উপর হয়) হিসেবেও এটি দেখা যেতে পারে।

হারসুটিজম (hirsutism) ও হাইপারট্রাইকোসিসের মধ্যে কি কোনো তফাৎ আছে?

এই দুটি চর্মরোগের বিশেষ তফাৎগুলি দেখুন:

হারসুটিজম হরমোনের (hormone) জন্য (অ্যান্ড্রোজেন)(androgen) হয়, কেবল মহিলাদের মধ্যে দেখা যায়; কিন্তু হাইপারট্রাইকোসিস মহিলা পুরুষ উভয়েরই হতে পারে

হারসুটিজমে শরীরের চুলগুলি মোটা টার্মিনাল প্রকৃতির হয় এবং পুরুষদের মত করে বিন্যাসিত হয় (male distribution pattern)। হাইপারট্রাইকোসিসে চুল মোটা বা পাতলা হতে পারে এবং সারা শরীরে ছড়াতে পারে।

চিহ্নিত করা (diagnosis)

চর্মবিশেষজ্ঞরা হাইপারট্রাইকোসিস চিহ্নিত করার জন্য খুঁটিয়ে অতিরিক্ত চুল বৃদ্ধির প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করেন, এবং রোগীর বয়স, লিঙ্গ, জাতি ও তার অ্যান্ড্রোজেন সেনসিটিভিটির (androgen sensitivity) সঙ্গে তুলনা করেন।

চিকিৎসা পরামর্শর সময় চর্মবিশেষজ্ঞ আপনার মেডিক্যাল হিস্ট্রি (medical history) ও পরিবারের ইতিহাস, জীবনশৈলীর অভ্যাস ও সাম্প্রতিক ওষুধ খাওয়ার ব্যাপারে বিশদ আলোচনা করতে পারেন ও লিখে রাখতে পারেন যাতে সঠিক কারণ চিহ্নিত করতে সাহায্য হয়।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 193 বার দেখা হয়েছে
21 জুন 2022 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Nishat Tasnim (7,950 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 313 বার দেখা হয়েছে
20 জুন 2022 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Nishat Tasnim (7,950 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 842 বার দেখা হয়েছে
20 জুন 2022 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Nishat Tasnim (7,950 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 406 বার দেখা হয়েছে
19 জুন 2022 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Nishat Tasnim (7,950 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 253 বার দেখা হয়েছে

10,776 টি প্রশ্ন

18,469 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

272,691 জন সদস্য

31 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 30 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Shariar Rafi

    420 পয়েন্ট

  2. Tazriyan

    190 পয়েন্ট

  3. Shourov Viperr

    110 পয়েন্ট

  4. Khandoker Farhan

    110 পয়েন্ট

  5. Eyasin

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...