মাছের ক্ষেত্রে সর্দি না হলেও তাদের জ্বর হতে পারে, কিন্তু এই জ্বর আবার কোনো জীবানুর আক্রমণে হয়না। এটি হয় মাছের 'স্ট্রেস' বা চাপ অনুভূত হবার কারণে, বিজ্ঞানীরা একে নাম দিয়েছেন 'ইমোশনাল ফিভার'।
অতীতে এই প্রবণতা বৃহদাকার প্রাণী, পাখি ও নির্দিষ্ট কিছু সরীসৃপের মধ্যে দেখা গেলেও মাছের ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণ নতুন।
‘ইমোশনাল ফেভার’ বিষয়ক গবেষণাটিতে নেতৃত্ব দেন ইউনিভার্সিটি অব স্টারলিংয়ের তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত ইনস্টিটিউট অব অ্যাকুয়াকালচারের গবেষক ডা. সোনিয়া রে।
জেব্রাফিশ যখন ‘স্ট্রেস’ বোধ করে, তখন পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া হিসেবে তাদের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। জেব্রাফিশ ২৮ ডিগ্রি সে. (৮২ ডিগ্রি ফা.) সাঁতার কাটতে পছন্দ করে। গবেষণায় একদল মাছকে এই তাপমাত্রার পানিতে রাখা হয় এবং অন্য দলকে ‘স্ট্রেসফুল’ পরিস্থিতিতে ২৭ ডিগ্রি সে. (৮১ ডিগ্রি ফা.) ১৫ মিনিট রাখা হয়।
একটা সময় পরে তাদের মুক্ত করা হলে দেখা যায়, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে থাকা মাছগুলো ওই তাপমাত্রায় সাঁতার কাটতে থাকে আর যাদের ‘স্ট্রেসফুল’ পরিস্থিতিতে রাখা হয়েছিল, তাদের শরীর তপ্ত হওয়ায় ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সে. (৩৬ থেকে ৩৯ ডিগ্রি ফা.) তাপমাত্রায় স্বস্তিবোধ করে।
ব্রিস্টলের ইউনিভার্সিটি ট্যাট অটোনমা ডি বার্সেলোনা (ইউএবি) ও স্টারলিংয়ের গবেষকরা একমত পোষণ করেন, মাছের এই বোধ ‘ইমোশনাল ফেভার’ এর প্রমাণ।
এই ইমোশনাল ফেভার আবেগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। গবেষকরা বিষয়টির ব্যাখা দিয়েছেন, চেতনার এই বোধকে বলা হয় ‘আবেগজনিত জ্বর’। সাধারণত যা মানুষের মধ্যে দেখা যায়। ‘স্ট্রেস’ অনেক সময় মানুষের জ্বরের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এতে কোনো সন্দেহ নেই- এই বোধ মনের চেতন অবস্থা থেকে সৃষ্টি হয়। মানুষের ক্ষেত্রেও দেখা যায়, স্ট্রেসবোধ হলে তারা উষ্ণ কাপড়ে নিজেদের আবৃত করতে পছন্দ করে। যদিও এই প্রশ্নে একমত হতে পারেননি অনেক গবেষক। আবেগ ও চেতনা প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত কি-না তা নিয়ে তর্ক চলছেই।
তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন