রাজা রায় চৌধুরী-
পাহাড় বেয়ে ওঠা নিঃসন্দেহে দুঃসাহসিক কাজ। মানুষের পক্ষে চার হাত পায়ে পাহাড় বেয়ে ওঠা খুবই কষ্ট সাধ্য কাজ। যারা এই কাজ করতে পারে তাদের আমরা সাহসী মানুষ বলি। তাহলে যে ছাগল অনায়াসে পাহাড় বেয়ে উপড়ে উঠে পড়ে, তাকে আপনি কি বলবেন? আর যদি বলি পা দিয়ে নয়, শিং ব্যবহার করে এইসব ছাগল পাহাড়ের চুড়োয় উঠে যায়, তাহলে আমাদের বিস্ময়ের মাত্রা যাবে বেড়ে। এটা কোন কল্পনা নয়, ইউরোপ আমেরিকার অনেক দেশে এই ধরনের ছাগল দেখতে পাওয়া যায়। এদেরকে বলা হয় মাউন্টেইন গোট বা পাহাড়ি ছাগল।
পাহাড়ে ওঠার বিষয়টা অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষের কাছে একটি অত্যন্ত আকর্ষনীয় বিষয়। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ পর্বতারোহণের নেশায় ছুটে বেড়ান বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। সাংঘাতিক ঝুঁকি উপেক্ষা করে পাহাড়ের চুড়ায় ওঠার মজাটাই নাকি একেবারে অন্য রকম!
কিন্তু সফল পর্বতারোহণের জন্য চাই উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, একাধিক আধুনিক সরঞ্জাম এবং অনেক টাকা। কারণ, পর্বতারোহণ যেমন ঝুঁকিপূর্ণ, তেমনই খরচসাপেক্ষ। কিন্তু যদি দেখেন, আপনি কষ্ট করে পাহাড়ে উঠছেন আর আপনার পাশ দিয়ে গটগট করে উঠে চলে গেল একটি ছাগল, তাহলে কেমন লাগবে? অনেকেই ভাবতে পারেন- ছাগল আবার পাহাড়ে চড়ে নাকি?
হ্যাঁ, এই ছাগল পাহাড়ে ওঠে, এবং অনায়াসেই উঠতে পারে। এদের নাম মাউন্টেইন গোট, বাংলায় পাহাড়ি ছাগল। এরা প্রতিদিন হাজার হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ে অনায়াসে উঠে যায়। আবার নেমে আসে কোন বিপদ ছাড়াই। পাহাড়ি অঞ্চলে খাবার সংগ্রহের জন্য এমনটা করতে হয় তাদের। পৃথিবীর নানা প্রান্তে এ ধরনের ছাগলের দেখা পাওয়া যাবে। সবচেয়ে বেশি পাহাড়ি ছাগলের দেখা পাবেন আমেরিকার কলোরাডো, আইডাহো, মন্টানা, আলবার্টা এবং অ্যালাস্কা রাজ্যে। সাদা পশম আর বড় বড় শিং ওয়ালা এই একদল ছাগল অনায়াসে পাহাড় বেয়ে উঠে যায়- এই দৃশ্য দেখে মানুষ হতবাক হয়ে যায়।
ইতালি ও এর পাশ্ববর্তি কিছু দেশের পাহাড়ি এলাকায় বড় বড় শিং এবং খয়েরি রঙের পশমের এক ধরনের পাহাড়ি ছাগলের দেখা পাওয়া। এদের নাম, অ্যালপাইন আইবেক্স (Alpine ibex)। এই ছাগলরা এদের শিং এর উপর ভর করে খাড়া পাহাড় কিংবা নদীর পাশের বাধ বেয়ে উপড়ে উঠে যায়। যেকোনো মানুষের পক্ষে এই পাহাড় বেয়ে ওঠা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার।