গ্রামের বাড়িতে যেসব বাড়িতে ছোট বাচ্চা আছে সেখানে গেলে প্রায়ই দেখা যায় অনেক বাচ্চাদের একটা কমন সমস্যা রয়েছে। আর সেই সমস্যাটা হচ্ছে জিওফ্যাগি (Geophagy)।এটি এমন একটা ব্যাধি যে এই সমস্যায় ভুক্তভোগীদের মাটি খাওয়ার প্রতি তীব্র প্রনণতা দেখা যায়। শুধু বাচ্চাই নয় গর্ভবতী নারী এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্করাও এই সমস্যাটিতে ভোগে। কারো কাছে এই সমস্যাটি সমসাময়িক আর কারো কাছে দীর্ঘস্থায়ী।
এমনিতে মাটিতে তেমন খুব একটা পুষ্টি উপাদান নেই। তবে অনেক দেশেই গর্ভবতী নারীরা দেহের খনিজ লবণের অভাব পূরণে এটি খেয়ে থাকে। তাছাড়া "কাঁদামাটি বিষাক্ত পদার্থ শোষণ করতে পারে"এইরকম ধারনা থেকেও অনেকেই ফুড পয়জনিং থেকে উপক্রম পেতে মাটি খাওয়াকে সমর্থন করে থাকে।কিন্তু আসল সত্যটা হচ্ছে, মাটির খাওয়ার কারণে উল্টো ক্ষেত্রবিশেষে নানা ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে। যেমনঃ
সায়েন্স ডিরেক্ট জার্নালের এক গবেষণাপত্র বলছে যে মাত্রাতিরিক্ত মাটি খাওয়ার কারনে হাইপোক্যালামিয়া (পটাশিয়ামের ঘাটতিজনিত রোগ) এর বিকাশ ঘটতে পারে। কারন কাঁদামাটি খাদ্য হিসেবে গ্রহণের কারণে দেহ থেকে প্রচুর পরিমান পটাশিয়াম মলের সাথে বেরিয়ে যায়।
আবার,আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান (ICDDRB) এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্স হপক্নিস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে যে, জিওফ্যাগির কারনে বাংদেশের বহু শিশু স্বাস্থ্যঝুকিতে আছে কেননা মাটিতে নানা ধরনের ক্ষতিকর জীবাণু থাকে। বিশেষ করে বাচ্চারা যে স্থানে থাকে এবং খেলাধুলা করে সে সকল স্থানের মাটি পরীক্ষা করে গবেষকরা ইকোলাই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি লক্ষ্য করেছেন। যার কারণে যে সকল বাচ্চারা মাটি খায় তাদের অন্ত্রের অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে।
তথ্যসূত্রঃ
https://www.sciencedirect.com/topics/pharmacology-toxicology-and-pharmaceutical-science/geophagia
https://www.researchgate.net/publication/275586206_Geophagy_Is_Associated_with_Environmental_Enteropathy_and_Stunting_in_Children_in_Rural_Bangladesh