স্যাপিওসেক্সুয়াল : শারীরিক সৌন্দর্য নয়, আকর্ষণ যখন বুদ্ধিমত্তা!
স্যাপিওসেক্সুয়ালকে "বুদ্ধিমত্তার প্রতি যৌন আকর্ষণ" দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়। অর্থাৎ কোন মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও যৌনতার অনুভূতি যদি বুদ্ধিমত্তা থেকে আসে তবে তাদেরকে স্যাপিওসেক্সুয়াল বলে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ শারীরিক সৌন্দর্য ও চেহারা দেখে কারোর প্রেমে পড়ে। কিন্তু স্যাপিওসেক্সুয়ালরা কেবলমাত্র মেধা ও বুদ্ধি দিয়েই মানুষকে বিচার করে। শারীরিক সৌন্দর্যের প্রতি তাদের আকর্ষণ সাময়িক।
Sapiosexual শব্দটি এসেছে ল্যাটিন sapien শব্দ থেকে যার অর্থ জ্ঞানী। স্যাপিওসেক্সুয়ালকে বাংলায় ধীকামীতাও বলা হয়। সায়েন্স ডিরেক্টের এক গবেষণা মতে, ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যে মাত্র ১ থেকে ৮ শতাংশ মানুষ স্যাপিওসেক্সুয়াল হয়। তাছাড়া বেশিরভাগ সমকামী, বাইসেক্সুয়াল, হেটেরোসেক্সুয়াল, অ্যাসেক্সুয়াল মানুষ নিজেকে স্যাপিওসেক্সুয়াল বলে দাবী করেন।
স্যাপিওসেক্সুয়াল'দের বৈশিষ্ট্যঃ
১. স্যাপিওসেক্সুয়ালরা হুট করে কারোর প্রেমে পড়েন না। বরং তারা প্রথমে একজন মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করেন, মন-মানসিকতা বুঝার চেষ্টা করে। বিপরীত মানুষটির বুদ্ধিমত্তা যদি একজন স্যাপিওকে আকর্ষণ করতে পারে তবেই তারা প্রেমে পড়েন।
২. স্যাপিওসেক্সুয়ালদের শারীরিক আকর্ষণ খুবই সাময়িক। দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কের জন্য তারা বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে মেধা ও বুদ্ধিকে বেশি প্রাধান্য দেন। স্যাপিওরা কাউকে পছন্দ করলে তার ব্যাপারে যথেষ্ট সিরিয়াস থাকেন।
৩. বোকামি বা অযৌক্তিক কথা বলা মানুষ স্যাপিওদের পছন্দ না। পাশাপাশি যারা অল্পতেই রাগ দেখান, চিৎকার-চেচামেচি করেন, পরিস্থিতি শান্তভাবে সামলাতে পারেন না তারা স্যাপিওদের অপছন্দের কাতারে পড়ে।
৪. স্যাপিওরা নিজের সঙ্গীকে নিয়ে যত বেশি জানতে পারেন তাদের প্রতি আকর্ষণ তত বেশি বৃদ্ধি পায়। সঙ্গীর সাথে গঠনমূলক বিষয়ে আলোচনা তাদেরকে যৌন মিলনের মতো আনন্দ দেয়।
৫. স্যাপিওসেক্সুয়ালরা নিজের সঙ্গীর সাথে বিতর্ক করে বেশ আনন্দ পান। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আলোচনা তাদের পছন্দ না। তারা নিজের সঙ্গীর সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন এবং বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেন।
৬. ধীকামী এইসব মানুষ অনেকটা বাঁচাল স্বভাবের হন। যেকোন বিষয়ে বিষদ আলোচনা, প্রশ্ন করতে পছন্দ করেন তারা। কম কথা বলা মানুষ তাদের অপছন্দ। পাশাপাশি স্যাপিওরা জ্ঞান আহরণের প্রতি আগ্রহী।
৭. যেকোনো ব্যাকরণগত ভুল, বানানের ভুল স্যাপিওরা অপছন্দ করেন এবং তাদের মাঝে খুঁতখুঁতে স্বভাব দেখা যায়। স্যাপিওরা যথেষ্ট রসিক হয় কিন্তু অযৌক্তিক রসিকতা তাদের বিরক্ত করে তুলে।
৮. স্যাপিওসেক্সুয়ালদের অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা পছন্দ না, তাদের বন্ধু ও প্রেমের সংখ্যা কম। তাই বেশিরভাগ মানুষই তাদেরকে অহঙ্কারী ভাবেন।
কী মনে হলো এতদূর পড়ে? স্যাপিওসেক্সুয়াল মানুষদের এইসব বৈশিষ্ট্যের সাথে নিজের মিল পাচ্ছেন কি কোথাও?
ক্রেডিট : Nishat Tasnim | Science Bee