বৃষ্টি হচ্ছে আর হাতে কদম নিয়ে তার শোভা অনুভব করবেন না তা কি করে হয়! কিন্তু ভাবুনতো, খুঁজেখুঁজে ব্যাকুল হয়েও একটা কদম গাছ পাবেন না একসময়; তখন হাতে নিয়ে ফুলের শোভা দূরে থাক, পরের প্রজন্মকে ছবি দেখিয়ে চেনাতে হবে এই ফুল। আর এর জন্য দায়ী হবো আমরা যারা নির্বিচারে ফুল ছিঁড়ে ফেলছি। ভাবছেন ফুল ছিঁড়লে গাছ কীভাবে বিলুপ্ত হবে?
ভাদ্রমাসে যখন গাছে গাছে ফল থাকে না তখন পাখিদের প্রাণীদের খাবারের আকাল চলে। কদম তখন প্রধান খাবার হয়ে ওঠে বাদুড় ও কাঠবিড়ালির জন্য। ওরাই বীজ ছড়ানোর বাহন। ফলে ফুল যদি আগেই ছিঁড়ে ফেলা হয় তাহলে পাখিরা খাদ্য বঞ্চিত হবে। একসময় আমরা কদমের শোভা বঞ্চিত হবো। কদম গাছ ও ফুলের পরিচিতিতে জানা যায়, কদমের কাণ্ড সরল, উন্নত, ধূসর থেকে প্রায় কালো এবং বহু ফাটলে রুক্ষ, কর্কশ। শাখা অজস্র এবং ভূমির সমান্তরালে প্রসারিত। নিবিড় পত্রবিন্যাসের জন্য কদম ছায়াঘন।
শীতে কদমের পাতা ঝরে যায়, বসন্তে কচি পাতা গজায়। কদমের একটি পূর্ণমঞ্জরিকে সাধারণত একটি ফুল বলেই মনে হয়। তাতে বলের মতো গোল, মাংসল পুষ্পাধারে অজস্র সরু সরু ফুলের বিকীর্ণ বিন্যাস।
কদম তিনবার পুষ্পিত হয়। ভাদ্রমাসে যখন গাছে গাছে ফল থাকে না তখন পাখিদের, প্রাণীদের খাবারের আকাল চলে, সেটা তাদের মঙ্গাকাল। ঠিক তেমনই যেমনটা কার্তিকে আমাদের মঙ্গা হতো। ফলে ওই সময় কদম প্রধান খাবার হয়ে ওঠে বাদুড় ও কাঠবিড়ালির। ওরাই বীজ ছড়ায়। পাখ-পাখালি না খেলে কদম বীজ থেকে গাছ হবে না। কদম বাঁচাতে-পাখিদের বাঁচাতে কদম ফুল ছেঁড়া বন্ধ রাখুন। এছাড়া কদমের অনেক গুন, সেগুলো বিষয়ে নিজেদের মধ্যে তথ্যবিনিময় হওয়া জরুরি।
কদম ফল পাকলে ফলটি অনেকে খায়। গাছের ছাল জ্বরের ঔষধ হিসেবেও উপকারী। ফল মাংসল, টক। পাখি, বাদুড় ও কাঠবিড়ালির খুব প্রিয় এই খাদ্য। ওরাই বীজ ছড়ানোর বাহন। একটা ফলের ভেতরে প্রায় ৮ হাজার বীজ থাকে। পাখিদের খাদ্য ধ্বংস করে দিচ্ছি কিনা সেটা ভেবে দেখা দরকার এবং অযথা ফুল ছেঁড়া বন্ধ করতে হবে। ফুল বেশি বেশি ছিঁড়লে যেকোনও উদ্ভিদের বিস্তার ব্যাহত হয়। কারণ ফল পরিপক্ক না হলে বীজের অঙ্কুরোদগম হবে না। তবে ফল পেকে গেলে এটা ফেটে যায় এবং বাতাস অথবা বৃষ্টির পানির মাধ্যমেও বীজের বিস্তার ঘটে।
ক্রেডিট: Bangla Tribune