খেজুরের গুণ কী? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
190 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (141,850 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

খেজুরের বিস্ময়কর গুণ!

খেজুর, চমৎকার উপকারি একটি ফল। দেশের বাজারে বছরভরই পাওয়া যায় এ ফল। অনেকেরই পছন্দের তালিকায়ও রয়েছে খেজুর। তবে খেজুর যারা পছন্দ করেন না তারা হয়ত জানেনই না যে এটি খেলে শারীরিকভাবে কী দারুণ উপকার মেলে।

খেজুরে রয়েছে এমিনো এসিড, প্রচুর শক্তি, শর্করা ভিটামিন ও মিনারেল। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। খেজুর শরীরের প্রয়োজনীয় গ্লুকোজের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। খেজুরের গুণের কারণে পুষ্টিবিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন ‘পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ডায়েট ফুড’। এবার খেজুরের যাবতীয় পুষ্টিগুণ জেনে নেওয়া যাক-

ইন্সট্যান্ট এনার্জি:
বিজ্ঞানীরা খেজুরকে বলে থাকেন ইন্সট্যান্ট এনার্জির ভাণ্ডার। মানে নিমিষেই প্রাণশক্তি। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ফুড সায়েন্সেস এন্ড নিউট্রিশনের এক রিপোর্টে বলা হয়, কেউ যদি দুর্বল বা ক্লান্ত বোধ করে, তাহলে কয়েকটা খেজুর খেয়ে নেওয়ার পর পরই সে চাঙ্গা এবং প্রাণশক্তি অনুভব করবে। খেজুরে থাকা গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজের মতো প্রাকৃতিক শর্করা এই ‘এনার্জি’র উৎস। তাই খাদ্যতালিকায় দুটো খেজুর রাখলে সারাদিন প্রাণবন্ত থাকা যাবে।

কোলেস্টেরল কমায় এবং ধমনীতে চর্বি জমতে দেয় না:
মিষ্টি হলেও খেজুরে কোনো ফ্যাট নেই, নেই কোন কোলেস্টেরল। বরং খেজুরের ‘ক্যাটাচিনস’ নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং বাড়ায় ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ। তাছাড়া খেজুর ধমনীতে চর্বির স্তর জমতে দেয় না।

হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিস:
এই তিনটি রোগের বিরুদ্ধেই খেজুর লড়ে খুব সফলভাবে। খেজুরে আছে এন্টিঅক্সিডেন্ট ফ্ল্যাভোনয়েডস। মিশরের সুয়েজ ক্যানেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুরের ফ্ল্যাভোনয়েড উপাদানটি ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে উপকারী। এছাড়া খেজুরে আছে আইসোফ্ল্যাভন ও ক্যারোটেনয়েডস নামে আরও দুটি উপাদান। গবেষণায় দেখা গেছে, এই উপাদান দুটি হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে বেশ কার্যকরী। এছাড়া খেজুরের ফেনোলিক এসিড নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।

রক্তচাপ কমায়:
আমরা যেসব খাবার খাই এর অনেকগুলোতেই থাকে উচ্চমাত্রার লবণ। আর উচ্চ রক্তচাপের বড় কারণ হলো এটি। কিন্তু খেজুরে কোনো সোডিয়াম (লবণ) নেই। বরং আছে বেশ ভালো মাত্রার পটাশিয়াম, যা সোডিয়াম কমাতে সাহায্য করে। এ কারণেই বলা হয়, খেজুর হচ্ছে প্রাকৃতিক প্রতিষেধক যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

হাড় মজবুত করে:
খেজুরে আছে সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, কপার এবং ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি খনিজ উপকরণ। যা হাড়ের জন্যে উপকারি। ফলে অস্টিওপরেসিসসহ হাড়ের যে কোনো রোগ প্রতিরোধের জন্যে খেজুর খাওয়া যেতে পারে। 

দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়:
খেজুরে আছে প্রচুর ভিটামিন ‘এ’ এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট ‘ক্যারোটানয়েডস’ যা দৃষ্টিশক্তির জন্য উপকারি। এমনকি বয়স হয়ে গেলে চোখের পেশীর সংকোচন-প্রসারণ ক্ষমতা কমে যাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা খেজুর প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত করে:
অস্ট্রেলিয়ায় পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুর স্মৃতিশক্তি এবং শেখার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেছে। খেজুরে থাকা নানা ধরনের এন্টিঅক্সিডেন্টই এ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া বয়স হয়ে গেলে ব্রেনের যে ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকি দেখা দেয় তাও চমৎকারভাবে প্রতিরোধ করে খেজুর। কারণ কর্টিসল এবং অক্সিডেন্ট উপকরণের অভাবে ব্রেনের ক্ষয় হয়। কিন্তু এই উপকরণ দুটি খেজুরে রয়েছে ভরপুর।

পাইলস ও কোষ্ঠকাঠিন্য:
সাধারণত খাদ্যে ফাইবার বা আঁশের অভাবে পাইলস ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোগগুলো হয়। খেজুরে যেহেতু প্রচুর আঁশ থাকে, তাই নিয়মিত খেজুর খেলে এ রোগগুলো আপনি সহজে প্রতিরোধ করতে পারবেন। ইউনিভার্সিটি অব রচেস্টার মেডিকেল সেন্টারের এক গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে মাত্র ২০-৩৫ গ্রাম খেজুর খেলেই কোষ্ঠকাঠিন্যকে প্রতিরোধ করা যায়।

ওজন রাখে নিয়ন্ত্রণে:
খেজুরে আছে ভিটামিন বি, ভিটামিন কে, রিবোফ্লোভিন, নিয়াসিন এবং আরও অনেক ধরনের পুষ্টি উপকরণ। এসবের মিলিত ফসল হলো মেটাবলিজম বাড়ানো। অর্থাৎ শরীরে যতটুকু ওজনের প্রয়োজন হয় তা ধরে রাখে খেজুর। তাছাড়া খেজুর এমন একটি খাবার যা অল্প খেলেই তৃপ্তি হয়, ফলে বেশি খাওয়ার চাহিদা থাকে না। ফলে শরীরে ওজন আর বাড়ে না।

ত্বক সুন্দর করে:
নিয়মিত খেজুর খেলে আপনার ত্বক হবে সতেজ, পরিচ্ছন্ন এবং প্রাণবন্ত! খেজুরে আছে প্রচুর ভিটামিন, এন্টিঅক্সিডেন্ট। যেমন- ভিটামিন ‘সি’ ত্বকের নমনীয়তা বাড়ায়। ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ায় কমনীয়তা। অধিকন্তু খেজুর দেহের মেলানিনের মাত্রা কমিয়ে বয়সের চিহ্নকে দূরীভূত করে। 

চুল পড়া বন্ধ করে:
খেজুরে আছে প্রচুর আয়রন। যা রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ায়। আর চুলসহ গোটা শরীরেই তা ভারসাম্যপূর্ণভাবে পৌঁছায়। ফলে চুল পড়া যেমন কমে, তেমনি নতুন চুল গজায়ও।

রক্তশূন্যতার সমস্যা:
রক্তশূন্যতায় ভুগলে অবসাদ, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা- ইত্যাদি সমস্যাগুলো দেখা দেয়। রক্তশূন্যতার রোগীরা খেজুর খেতে পারেন নিশ্চিন্তে। কারণ খেজুরে আছে প্রচুর আয়রন। তাছাড়া খেজুর রক্ত পরিষ্কারও করে।

প্রসবকালীন জটিলতা কমায়:
গর্ভবতী মায়েদের জন্যে দরকার বাড়তি ক্যালরি। আর খেজুরের চেয়ে উপকারি সমৃদ্ধ ক্যালরির উৎস খাবার কমই আছে। জর্ডানের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রসবের চার সপ্তাহ আগ পর্যন্ত যে মায়েরা পর্যাপ্ত খেজুর খেয়েছেন, প্রসবকালীন জটিলতা তাদের কম হয়েছে। সন্তানসম্ভবা মায়েদের জরায়ুর পেশী মজবুত করেছে খেজুর, সে প্রমাণও পাওয়া গেছে এই গবেষণায়।  

বাড়তি ভিটামিনের প্রয়োজন নেই:
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, নিয়মিত খেজুর খেলে বাড়তি ভিটামিন খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। খেজুরে আছে ২৩টি অ্যামাইনো এসিড। যা আপেল, কমলা, কলার মতো জনপ্রিয় ফলেও নেই। এই অ্যামাইনো এসিড ‘কার্সিজেনিক’ নামের টক্সিনকে দেহের বাইরে বের করে দিতে সাহায্য করে।

খেজুর যেহেতু একটি মিষ্টি ফল এবং এতে ক্যালরির পরিমাণ বেশি, তাই এটি পরিমিত খাওয়াই উত্তম। পুষ্টিবিজ্ঞানীরা খেজুরের এই উপকারগুলো পাওয়ার জন্যে দিনে দুটি খেজুরই যথেষ্ট বলে মনে করেন।

ক্রেডিট: একুশে টিভি

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+2 টি ভোট
2 টি উত্তর 258 বার দেখা হয়েছে
30 এপ্রিল 2021 "লাইফ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন মেহেদী হাসান (141,850 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
1 উত্তর 2,676 বার দেখা হয়েছে
18 এপ্রিল 2021 "গণিত" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন হায়াত (20,400 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 235 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 572 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 392 বার দেখা হয়েছে
28 ফেব্রুয়ারি 2022 "চিন্তা ও দক্ষতা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Rayhan Shikder (9,310 পয়েন্ট)

10,826 টি প্রশ্ন

18,535 টি উত্তর

4,745 টি মন্তব্য

840,910 জন সদস্য

64 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 62 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. mehrob.durjoy

    140 পয়েন্ট

  2. Curious

    140 পয়েন্ট

  3. Shihabuddin

    130 পয়েন্ট

  4. Shoumik

    110 পয়েন্ট

  5. kubeto22

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল #science কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি মাথা স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন গাছ মনোবিজ্ঞান খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার দুধ উপায় হাত শব্দ মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য বাচ্চা হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...