পৃথিবীর সব মানুষ উধাও হয়ে গেলে কী হবে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+3 টি ভোট
704 বার দেখা হয়েছে
"চিন্তা ও দক্ষতা" বিভাগে করেছেন (141,850 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)
 
সর্বোত্তম উত্তর

আপনি কি একবারও ভেবে দেখেছেন যে পৃথিবী থেকে যদি হঠাৎ এই সকল মানুষ উধাও হয়ে যায় তবে এই পৃথিবীর কি হবে? কিইবা হবে, মানুষ ছাড়া মানুষের তৈরি এই সকল নির্মাণের? কিভাবে বসবাস করবে বাকি প্রাণীরা এই পৃথিবীতে?

তাহলে চলুন আজকের এই পোস্টে অনুমান করা যাক, মানুষ ছাড়া পৃথিবীর কি হবে?

সবার প্রথমে যেই পরিবর্তন টা হবে এই পৃথিবীতে সেটা হলো পৃথিবীর সকল আলো ধীরে ধীরে নিভে যাবে। কারণ, পৃথিবীর অধিকাংশ পাওয়ার স্টেশন ফসিল ফিউয়েলের সাহায্যে চলে আর এগুলোকে চালানো হয় মানুষের দ্বারা। তাই মানুষ না থাকলে এগুলো চলবে কি করে? মানুষ ছাড়া এই পৃথিবীতে মাত্র ৪৮ ঘন্টা পরে পৃথিবীর সকল নিউক্লিয়ার প্লান্ট সেফটি মোডে চলে আসবে। কারণ, এনার্জি কনজাংকশন কমে যাবে। সকল উইন্ডমিল ততোক্ষণ চলবে যতক্ষণ তাদের মদ্ধে লুব্রিকেণ্ট থাকবে। আর আস্তে আস্তে সকল সোলার প্যানেল কাজ করা বন্ধ করে দিবে। কারণ, সেগুলোকে পরিষ্কার এবং নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোন মানুষ আর এই পৃথিবীতে থাকবে না। সোলার প্যানেলের উপরে মাটি জমতে থাকবে আর এই অবস্থায় সম্পূর্ণ পৃথিবী কে মহাকাশ থেকে একদম কালো দেখাবে।

কিন্তু কিছু কিছু সিস্টেম যা মানুষ দ্বারা তৈরিকৃত সেই সব জিনিস কাজ করতে থাকবে অনায়াসেই। যেমন কিছু Dam যা কিনা পানির Flow দ্বারা Active হয়। যেমন চায়নার Three Gorges Dam। আমেরিকার Hua Na Dam। এমন সব সিস্টেম মাসের-পর-মাস চলতে থাকবে এবং একটানা বিদ্যুৎ তৈরি করতে থাকবে। কিন্তু, মানুষের অন্যতম সৃষ্টি মেট্রো ট্রেন কিছুদিনের মধ্যেই মাটির নিচে একদম পানির তলায় চলে যাবে। কারণ, প্রতিটি মেট্রো ট্রেনের আন্ডারগ্রাউন্ড প্যাসেজের সাইডে পাম্প তৈরি করা থাকে যাতে পানি না ঢোকে মেট্রোতে। আর যখন খারাপ হয়ে যাবে সেই সকল পাম্পগুলো তখন মেট্রো সম্পূর্ণ পানির নিচে চলে আসবে। কিন্তু মানুষ ছাড়াও তো এই পৃথিবীতে মিলিয়নের বেশি প্রজাতির বসবাস করে। তাদের কি হবে?

প্রথমে তো মানুষের দ্বারা পালিত পশু পাখি না খেতে পেরেই মরে যাবে। যারা খাদ্যের খোঁজে বাহিরে বের হবে তাদেরকে বাজিরের পশুরা বা জংলি পশুরাই মেরে খেয়ে ফেলবে। আর এই পৃথিবীতে থাকা সকল গবাদি পশুরা যেমন গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি তারা সবাই ধীরে ধীরে মারা যাবে। কারণ, তাদের বেঁচে থাকার জন্য দরকারি খাবার যোগানের জন্য তাদের মালিকেরা আর থাকবে না। কিন্তু, এই পৃথিবীর সকল পশুপাখিরা আরো বেশি বিপদে পরবে মানুষ পৃথিবী থেকে হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যাওয়ার এক মাস পর।

বিদ্যুৎ তৈরির জন্য যত Cooling Water, Cool Production এ ব্যবহার করা হয় তা সব তরল পদার্থ থেকে ঊহ্য হতে শুরু করবে। যার ফলে প্রত্যেকটি পাওয়ার প্ল্যান্ট ধীরে ধীরে গলতে থাকবে এবং একসময় ফেটে যাবে। এর ফলে তৈরি হবে রেডিয়েশন। যার ফলে লক্ষ লক্ষ প্রাণী ওই রেডিয়েশন এর প্রভাবে মারা যাবে।

ঠিক এক বছর পর পৃথিবীতে বেঁচে থাকা প্রাণীরা আকাশে অনেক তারাকে পৃথিবীতে পরতে দেখবে। কিন্তু আসলে এগুলি তারা হবে না। সেগুলো সব মানুষেরই তৈরি করা বিভিন্ন যন্ত্র যা কিনা এতদিন মহাকাশে পৌঁছেছে। যেমন স্যাটেলাইট। যা কিনা মানুষ ছাড়া একদমই অকেজো হয়ে পরবে এবং পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের টানে নিচের দিকে আসতে থাকবে এবং বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এসে গতীর প্রভাবে তা আগুনের গোলায় পরিণত হবে। যা পৃথিবীর নিচ থেকে দেখে উল্কাপাত মনে হবে।

সময়ের সাথে সাথে পৃথিবী আবার নিজের মতোই হতে শুরু করবে। মানুষের দ্বারা তৈরি পলিউশন এবং রেডিয়েশন খুব তাড়াতাড়ি পৃথিবী থেকে দূর হয়ে যাবে। কারণ, নতুন ভাবে এসব তৈরি করার মতো কেউ আর থাকবে না। প্রানীরা আবার নতুন করে জন্মাতে শুরু করবে। দুবাই, লাসভেগাস, রাজেস্থান, মিশরের মত শহর গুলি এবং দেশগুলি বালির উপর তৈরি। তাই, আস্তে আস্তে এইসব যায়গাগুলি ধুলা মাটির নিচে তলিয়ে যাবে। আর বাকি সব শহরের রাস্তাঘাট সবকিছু জঙ্গলে পরিণত হবে। সকল বাড়ি-ঘর এবং বিল্ডিং এর মধ্যেও উদ্ভিদ জন্মাবে যা কিনা পরিণত হবে জিবীত প্রানীদের বাসস্থানে। কারণ সেই সময় গাছপালা কাটার মত কেউ আর থাকবে না।

এভাবে কিছু সময় চলতে থাকার পর প্রায় ৩০০ বছর পর মানুষের তৈরি অধিকাংশ বড় বড় মেটালের নির্মাণ যেমন আইফেল টাওয়ার, লন্ডন ব্রিজ এবং বাকি সকল ব্রিজ ও বড় বড় বিল্ডিং সব ভাঙতে শুরু করবে। জং লেগে কিংবা কোনো রকম মেয়েইনটেইনেন্স না হওয়ার কারণে। এই নির্মাণ গুলো ধসে পড়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা পানি সব জায়গায় প্রসারিত হবে। পানির এই ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে পশুপাখিদের অনেক বেশি সুবিধা হবে। যার ফলে নতুন নতুন প্রজাতির প্রাণী জন্মাতে শুরু করবে। এমনও হতে পারে যে বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীরা আবার জন্ম নিতে শুরু করেছে। সকল মানুষ হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যাওয়ার ফলে শুধুমাত্র স্থলভূমি এবং স্থলভূমিতে বসবাস করা স্থলভূমির সকল প্রানীদের যে সুবিধা হবে তা কিন্তু নয়। পানি এবং জলজ প্রাণীদের জীবন যাপনে উন্নতি আসবে আর ধীরে ধীরে শহড়গুল পরিবর্তন হতে হতে প্রকৃতির সৌন্দর্যে পরিণত হবে।

এক হাজার বছর পর মানুষের নির্মাণের শুধুমাত্র কিছু অবশিষ্ট থাকবে। যেমন মিশরের পিরামিড, চায়নার “দ্য গ্রেট ওয়াল”। এক লক্ষ বছর পর তাও অবশিষ্ট থাকবে না। কিন্তু, অবশিষ্ট থাকবে কিছু জিনিস যা কিনা মানুষেরই তৈরি করা। তা হলো প্লাস্টিকের বোতল, প্লাস্টিকের তৈরি দ্রব্য এবং প্লাস্টিকের নোংরা আবর্জনা। এগুলোও প্রায় ৫০ লক্ষ বছর পর আর থাকবে না। অর্থাৎ, তারপর যদি পৃথিবীতে কোন বুদ্ধিমান সভ্যতার সৃষ্টি হয় তাহলে তারা হয়তো কোনদিনও জানতেই পারবে না যে, এই পৃথিবীতে আমার আপনার মত মানুষের বসবাস ছিল। তাই এটা বোঝা একদমই কঠিন না যে, আমরা আমাদের পরিবেশকে কতটা ক্ষতি করে থাকি। তাই এখন থেকেই একটু সচেতন হবেন। এই পৃথিবী, পরিবেশ আপনার আমার আমাদের সকলের। এর রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই।

তথ্যসূত্র : বিজ্ঞান পত্রিকা

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 682 বার দেখা হয়েছে
12 ডিসেম্বর 2022 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ubaeid (28,320 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
1 উত্তর 238 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 719 বার দেখা হয়েছে
+13 টি ভোট
1 উত্তর 454 বার দেখা হয়েছে

10,775 টি প্রশ্ন

18,456 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

265,667 জন সদস্য

179 জন অনলাইনে রয়েছে
3 জন সদস্য এবং 176 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  2. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  3. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  4. boostmark

    100 পয়েন্ট

  5. tsmtcocom

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...