Muhammad Ashik-
প্লুটোকে গ্রহ থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়ছে কেন?
১৯৩০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আমেরিকান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্লাইড টমবগ(Clyde Tombaugh) আমাদের সৌরমণ্ডলের নবম গ্রহ অর্থাৎ প্লুটো(Pluto) আবিষ্কার করেন।তারপর ইংল্যান্ডের এগারো বছরের একটি মেয়ে প্লুটোর নামকরণ করে।এই গ্রহের ৫ টি উপগ্রহ রয়েছে, যাদের নাম - শ্যারন,নিক্স,স্টিক্স,কারবেরোস,হাইড্রা।প্লুটো গ্রহের উপরিভাগে নাইট্রোজেন গ্যাসের স্তর রয়েছে।এর কক্ষপথের দৈর্ঘ্য সূর্য থেকে প্রায় ৫,৯১৩,৫২০,০০০ কিলোমিটার।সূর্য থেকে অনেক দূরে অবস্থান করা হয় এই গ্রহের তাপমাত্রা খুবই কম, মানে প্রায় মাইনাস ২২৯ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হয়।এই গ্রহের ভর ১.৩০৩e২২ কিলোগ্রাম এবং ব্যাস ২৩৭২ কিলোমিটার।
প্লুটো পৃথিবীর তুলনায় অনেক ছোট একটি গ্রহ।পৃথিবী যেমন সূর্যকে পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করে, প্লুটো ঠিক তার বিপরীত অর্থাৎ পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে সূর্যকে আবর্তন করে।প্লুটো ছাড়াও নেপচুন এবং শুক্র গ্রহও সূর্যকে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে আবর্তন করে।এই গ্রহটি সূর্য থেকে এতটাই দূরে অবস্থান করে যে সূর্য থেকে এখানে আলো পৌঁছাতে প্রায় ৫ ঘন্টা সময় লাগে, যেখানে সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো পৌঁছাতে মাত্র ৮ মিনিট সময় লাগে। সূর্যকে একবার সম্পূর্ণ প্রদক্ষিণ করতে এই গ্রহের ২৪৮ বছর সময় লাগে, অর্থাৎ পৃথিবীর ২৪৮ বছর প্লুটোর এক বছরের সমান।১৯৩০ সালে আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত একবারও প্লুটো সূর্যকে সম্পূর্ণ প্রদক্ষিণ করতে পারেনি।
প্লুটোকে বামন গ্রহ বলার কারণঃ
আবিষ্কারের পর থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্লুটোকে গ্রহ হিসেবে মানা হতো।কিন্তু ২০০৩ সালে এরিস আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে গ্রহের সংজ্ঞা বদলে যায়।ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়নের মতে, গ্রহ তাকেই বলা হবে যে- (১) সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে, (২) গোলাকার হবে এবং নির্দিষ্ট ভর থাকবে এবং (৩) নিজের কক্ষপথের এবং চারপাশের পরিবেশকে পরিষ্কার রাখবে।অর্থাৎ সামনে থাকা কোন কিছুকে নিজের দিকে টেনে নেবে বা নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দেবে।প্রথম দুটি শর্ত মেনে চললেও তৃতীয় শর্তটি প্লুটো মানে না।এই কারনে ২০০৬ সাল থেকে প্লুটোকে বামন গ্রহ(Dwarf Planet) বলা হয়।