ব্ল্যাকহোল হল মহাবিশ্বে ধ্বংসাত্মক বস্তু গুলোর মধ্যে অন্যতম। এটির সংস্পর্শে যা আসে এটি তাকে শুষে নেয় নিজের মধ্যে। এর অভিকর্ষজ ক্ষমতা এতই বেশি যে আলো পর্যন্ত এর থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না ।
কিন্তু মহাবিশ্বের শুধুমাত্র একটি ব্ল্যাকহোলের মতো ধ্বংসাত্মক বস্তু আছে তা কিন্তু নয়। এখানে আরো একটি বস্তু আছে যা কিনা একজন ব্ল্যাকহোলের মতোই ধ্বংসাত্মক। এটি হচ্ছে হোয়াইট হোল বা শ্বেত বিবর ।
এখন কি হবে যদি এই দুটি বস্তুর মহাবিশ্বে একসাথে দেখা হয় এবং একটি আরেকটির সাথে যুদ্ধে লেগে যায় ?
বাস্তবে কি এমনটা হতে পারে ?
আচ্ছা তাহলে কে জিতবে ব্ল্যাকহোল নাকি হোয়াইটহোল ?
তবে যুদ্ধ শুরু করার আগে চলুন জেনে নেয়া যাক আমাদের দুজন প্রতিপক্ষ কে কে? কে এই ব্ল্যাকহোল আর কে এই হোয়াইট হোল ।
মনে করুন মহাবিশ্বের কোন একটা কোনায় ব্ল্যাক হোল আছে । ব্ল্যাকহোলের নামটার সাথে আপনি হয়তো অনেকটাই পরিচিত যতটা না হোয়াইট হোল এর ক্ষেত্রে । এটি তার সামনে যা আছে সব কিছুকেই শুষে নেয় নিজের মধ্যে ।
আবার ধরুন মহাবিশ্বের অন্য আরেকটি প্রান্তে রয়েছে একটি হোয়াইট হোল, এই নামটির সাথে আপনি হয়তো খুব একটা বেশি পরিচিত নাও হতে পারেন ।
এটি সম্পূর্ণ ব্ল্যাকহোলের থেকে বিপরীত ধর্মী বলা যায় । যেখানে ব্ল্যাকহোল সবকিছু নিজের দিকে টেনে নেয়, এখানে এটি সবকিছু উগলে দিতে থাকে ।
যদিও এখানে আমাদের দুইটি প্রতিপক্ষের সম্পূর্ণ বিপরীত যুদ্ধ স্ট্র্যাটেজি রয়েছে, তো কে জিতবে এই যুদ্ধে?
যদিও আমরা হোয়াইট হোল সম্পর্কে খুব একটা বেশি জানিনা তবুও হোয়াইট হল কিন্তু ব্ল্যাকহোলের থেকে সবচাইতে বেশি ধ্বংসাত্মক হতে পারে। যা একটির পর একটি একটি করে অনেকগুলো গ্রহকে,নক্ষত্রকে ধ্বংসও করে ফেলেছে। হ্যাঁ এটা সত্য ,আর হোয়াইট হোল হচ্ছে এক একটি উৎকৃষ্ট যাযাবর । যা এই মহাবিশ্বে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে । science bee.
সায়েন্টিস্টরা বলছেন যে এটি এক সময় ব্ল্যাকহোল ছিল যা পরিবর্তিত হয়ে এখন হোয়াইট হলে রূপান্তরিত হয়েছে। সাইন্টিস্ট অনুমান করেছে যে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর পর একটি ব্ল্যাকহোল সম্পূর্ণরূপে একটি হোয়াইট হলে পরিণত হয়ে যাবে । আর এত মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে এটি যতসব বস্তু,গ্রহ , উপাদান নিজের মধ্যে গিলে নিয়েছে তা এবার হোয়াইট হোল হয়ে সব উঠলে দিকে থাকবে।কিন্তু একটি হোয়াইট হোল হয়তো ব্ল্যাক এর মত এতটা বেশি দীর্ঘজীবী হবেনা । তাই আমরা যদি একটি ব্ল্যাকহোল আর একটি হোয়াইট হোল এর মধ্যে যুদ্ধ বসাতে চাই তবে আমাদের দ্রুত কিছু করতে হবে । দ্রুত বলতে গেলেও এটি মিলিয়ন মিলিয়ন বছরের ই ব্যাপার। science bee.
এদিকে হোয়াইট হোল ব্ল্যাকহোলের থেকে একটু ব্যতিক্রমধর্মী হলেও এটি ব্ল্যাকহোলের মতোই ধ্বংসাত্বক বা বেশি ধ্বংসাত্মক।কারণ হোয়াইট হোল থেকে যে সকল পদার্থ বেরিয়ে আসবে তার সবগুলোই প্রায় আলোর বেগে বেরিয়ে আসবে ।
তো মিলিয়ন মিলিয়ন বছর ধরে আমাদের মহাবিশ্বের ক্ষতিসাধন করার পর হোয়াইট হোল আর ব্ল্যাক হোল এবার সামনাসামনি হলো । তারা মহাবিশ্বের বিভিন্ন গ্রহ ,এস্টোরয়েড এমনকি নক্ষত্রের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকল এবং এবার তারা সামনাসামনি । এবং এবার তারা তাদের সবচাইতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে চলেছে । science bee.
এবার ব্ল্যাকহোল সিম্পলি এডভান্টেজ পেয়ে যাবে ।এটি সুযোগ পেতেই এর সামনে যা আসে সবকিছুকেই গ্রাস করে নিতে থাকলো । এটি হোয়াইট হোলকে গিলে ফেলার চেষ্টা করছে ।এদিকে আমাদের শক্তিশালী অন্য অরেকটি প্রতিপক্ষ নিজের সর্বশক্তি দিয়ে যুদ্ধ করে যাচ্ছে টিকে থাকার জন্য ।কিন্তু এত শক্তিশালী হয়েও এটি কোনো সুযোগ পাবে না । এটির নিজের উপাদান বিলিয়ে দেয়া ছাড়া আর কিছু করারও নেই । যদিও এটি মহাবিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী উপাদান।
হোয়াইট হোল যুদ্ধের জন্য যেসব বস্তু আলোর বেগে নিক্ষেপ করছে অন্যদিকে এটিই ব্ল্যাকহোলের জন্য জ্বালানি হয়ে যাচ্ছে ।
কিন্তু এতকিছুর পরেও এটি কোনো দ্রুত যুদ্ধ হবে না ।ব্ল্যাকহোল হোয়াইটহোলটিকে প্রায় হাজার হাজার বছর ধরে খেয়ে যাবে ।যেহেতু এটি সব কিছু গিলে নিচ্ছে, এর মধ্যে ভরের পরিমাণ বাড়তে থাকবে আর এটি বড় হতে থাকবে ।এদিকে হোয়াইট হোল ছোট হতে থাকবে ।
এখন ব্ল্যাকহোল ফাইনাল আঘাত দেয়ার জন্য প্রস্তুত ।এটি হোয়াইট হোলটিকে সম্পূর্ণ গিলে নিবে ।
এবার এই ব্ল্যাকহোলটি বিশালাকার ধারণ করেছে ।হয়তো সবচাইতে বিশাল আকার ধারণ করেছে । এটি মিসিয়ে ৮৭ এর মত বা এর থেকেও বেশি বড় হতে পারে ।যা ৩৮ বিলিয়ন কিলোমিটারের আয়তন নিয়ে আছে ।
ধারণার জন্য যদি বলি তাহলে এটি পৃথিবীর থেকে ৩ মিলিয়ন গুন বড় ।
তাহলে আমাদের যদি হোয়াইট হোল আর ব্ল্যাকহোল এর মধ্যে সংঘর্ষ হয় তবে একটি বিশালাকার ব্ল্যাকহোলের জন্ম নিবে আর যা তার সামনে আসবে সবকিছুকেই গ্রাস করতে থাকবে ।
আর এটা যদি কোনোভাবে পৃথিবীর কাছে চলে আসে ? ওয়েল, তাহলে পৃথিবী এবার আসলেই বিশাল বিপদের সম্মুখীন ।
©Sadiqul Alam Shakil
#sbspace