NISHAT TASNIM
মুড সুইং এর জন্য এমন হয়। মানুষের একটি বিশেষ মনস্তাত্ত্বিক পর্যায় এই মুড সুইং। যখন একজন মানুষের মেজাজে খুব দ্রুত পরিবর্তন হয় এবং হতেই থাকে, সেই অবস্থাকে মুড সুইং নামে অভিহিত করা হয়। যেমন ধরুন, আপনার মেজাজ এই ভালো তো এই বিগড়ে যাচ্ছে, কখনো হাসছেন তো পরক্ষণেই হতাশায় চুপসে যাচ্ছেন, ক্রমাগত বিপরীতমুখী সব আবেগের মুখোমুখি হচ্ছে আপনার মন। তবে বুঝে নিন, আপনি মুড সুইংয়ের অদ্ভুত অবস্থায় পড়েছেন।
মুড সুইং হওয়া শুরু হলেই কিছু সহজ পন্থা অবলম্বন করে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।সময় থাকতে এই সমস্যা আপনাকে বুঝতে হবে। যদি দেখেন আপনার খুব ঘনঘন এরকম হচ্ছে তাহলে বিষয়টি অবহেলা করবেন না।
১| পর্যাপ্ত ঘুম (Get Proper Sleep) ডাক্তাররা বলছেন ভাল করে ঘুমলে অনেক সময় মুড সুইংয়ের সমস্যা সেরে যায়। কারণ ঘুমের অভাবে স্নায়ুজনিত সমস্যা থেকেও মুড সুইং (Mood Swings) হয়।প্রতিদিন অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমোতে হবে। শুতে যাওয়ার আগে বেশি টিভি দেখবেন না বা মোবাইল দেখবেন না।
২| কোনও রকমের উত্তেজক পদার্থ গ্রহণ না করা (Avoid Caffeine and Alcohol) বারবার করে কফি, চা বা কোনও উত্তেজক পানীয় গ্রহণ করবেন না। মাদক বা মদ্যপানের তো কোনও প্রশ্নই ওঠেনা। এগুলো আপনার স্নায়ুকে আস্তে আস্তে বিকল করে দেবে। মূলত স্নায়বিক কারণেই মুড সুইং হয় তাই এগুলো এড়িয়ে চলুন।
৩| জলপান করা (Drink Too Much Water) কোনওরকম এনার্জি ড্রিঙ্ক নয় বা চিনি মেশানো কোনও নরম পানীয় নয়, আপনি সারাদিন শুধু প্রচুর পরিমাণে জলপান করুন। বড়জোর জলে একটা লেবু চিপে নিতে পারেন। এতে শরীর থেকে বাজে পদার্থ বেরিয়ে যাবে এবং শরীর অনেক হাল্কা লাগবে।
৪| ছোট ছোট ভাগে খাবার খাওয়া (Eat Small Amount Through Out The Day) মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে অনেকে বেশি বেশি খাবার খায়। আর এই খাওয়ার বেশিরভাগটাই জাঙ্ক ফুড। যেহেতু এটা সেইসময় খেতে খুব ভাল লাগে টাই তাঁদের মনে হয় এটা তাঁদের মানসিক শান্তি দেবে। আসলে বিষয়টি কিন্তু সেটা নয়। এতে উল্টে আপনার ওজন বাড়বে এবং নানারকম সমস্যা দেখা দেবে।তার চেয়ে ছোট ছোট সুস্বাদু কিন্তু পুষ্টিকর খাবার খান।
৫| যোগব্যায়াম (Do Not Skip Yoga) যোগব্যায়ামের মাধ্যমে মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তাই যোগাক্লাসে ভর্তি হন বা বাড়িতেই নিয়মিত যোগব্যায়াম অভ্যেস করুন। প্রাণায়াম করুন। নিজের শরীর, মন ও নিঃশ্বাসের উপর ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ গড়ে তুলুন। মন খারাপের আভাস পেলেই ধ্যান করার চেষ্টা করুন।
৬| নিজের যত্ন নেওয়া (Take Care of Yourself) নিজের যত্ন নিন। এই যত্ন নেওয়ার অর্থ শুধু পার্লারে যাওয়া বা শপিং করা নয়। সামগ্রিক যত্নের কথা এখানে বলা হচ্ছে। অর্থাৎ সঠিক সময়ে খাওয়া দাওয়া, বেড়াতে যাওয়া, আড্ডা দেওয়া সবকিছুই এর মধ্যে পড়ে। আপনি যদি নিজেকে খুশি রাখতে না পারেন তাহলে অন্যরাও আপনাকে নিয়ে বিরক্ত হয়ে যাবেন।
৭| নিয়মিত এক্সারসাইজ (Regular Exercise) প্রতিদিন অন্তত দশ মিনিট এক্সারসাইজ করুন। তার মানে এই নয় যে আপনাকে জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাতে হবে। যে ধরনের এক্সারসাইজে আপনি স্বচ্ছন্দ আপনি সেটাই করুন। সাইক্লিং, সাঁতার, স্কিপিং যেটা আপনার ভাল লাগে সেটাতেই নিজেকে নিযুক্ত করুন। ঘাম ঝরলে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বেরিয়ে যাবে এবং আপনি এতে অনেক বেশি পজিটিভ বোধ করবেন।
৮| ডায়েটে পরিবর্তন (Change Your Diet) কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে আপনার রোজকার ডায়েটেও। কার্বোহাইড্রেট ও প্রসেসড খাবার এড়িয়ে চলুন। পরিবর্তে কমপ্লেক্স কার্ব ও প্রোটিন মিশিয়ে খান। খেয়াল রাখুন প্রতিদিনের খাবারে যেন পর্যাপ্ত সবজি আর ফল থাকে।