ক্ষুধা লাগলে কেন ‘মন-মেজাজ’ খারাপ থাকে?
ক্ষুধা ইংরেজি Hungry, আর রাগ ইংরেজি Angry. ক্ষুধা লাগার কারণে যেই খিটখিটে মেজাজ বা রাগ হয় সেটাকে বলে Hangry. যা Hungry এবং Angry এর মিলিত রূপ। এই শব্দটি নতুন এবং বিজ্ঞান জগতেও ইদানীং এর ব্যবহার হচ্ছে।
কার্বহাইড্রেড, প্রোটিন বা ফ্যাট আমরা যা-ই খাই না কেন এগুলো হজম হয়ে রূপান্তরিত হয় গ্লুকোজ, এমিনো এসিড ও ফ্যাটি এসিডে। এরপর এগুলো রক্তে মিশে এবং পৌঁছে যায় সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আর টিশ্যুতে। যার ফলে দেহ শক্তি উৎপাদন ও কাজ করতে পারে।
আমাদের খাদ্যগ্রহনের অনেক্ষন পার হয়ে গেলে সাধারনত আমরা ক্ষুধা অনুভব করি। আমাদের শরীরে বা টিশ্যুতে শক্তি উৎপাদনের জন্য যেই পরিমান পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন, রক্তের মাধ্যমে সে পরিমান পুষ্টি উপাদান সরবরাহ না হলেই আমরা ক্ষুধার্থ হই। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। অর্থাৎ দেহে শক্তির অভাব দেখা দেয়। স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের তুলনায় মস্তিষ্ক বেশি কাজ করে। আর মস্তিষ্ক তার কাজগুলো সঠিক ভাবে করার জন্য গ্লুকোজের উপর বেশি মাত্রায় নির্ভরশীল। খুব সহজ একটা উদাহরণ দেয়া যায়। একটু চিন্তা করে দেখুন তো, ক্ষুধার্ত অবস্থায় কি কোন কাজে খুব ভাল ভাবে মনযোগ দেয়া যায়? আপনি নিজের অজান্তেই হাস্যকর রকমের সব ভুল করে বসবেন ক্ষুধা পেটে কাজ করলে। এছাড়াও সামাজিকতা বা সামাজিক রীতিনীতিগুলোও তখন আয়ত্বের বাইরে চলে যায়। যার ফলে হয়ত আপনি অযথাই কাউকে চড় বসিয়ে দেয়া বা রাগ করার মত কাজগুলো করে বসেন। যার জন্য যদিও পরে অনুশোচনা করে থাকেন।
এছাড়াও এ সময় কিছু হরমোন নিঃসরনের জন্য জন্য মস্তিষ্ক থেকে বিভিন্ন অঙ্গে সিগনাল পাঠানো হয় যেন সেগুলো আরো গ্লুকোজ উৎপন্ন করতে পারে। এই হরমোন উৎপাদনের ফলে অর্গানগুলো খানিকটা উত্তেজিত হয় আর তাদের মধ্যে একটা যুদ্ধ যুদ্ধ অবস্থার তৈরি হয়। যার ফলশ্রুতিতে রাগারাগি বা হাতাহাতির মত ঘটনার উদ্রেক হয়।
একটানা দীর্ঘ সময় কাজ, ডায়েট কন্ট্রোল বা খাম খেয়ালির জন্য দীর্ঘক্ষণ ক্ষুধার্ত থাকা উচিত নয়। বিশেষজ্ঞগণ বলেন তীব্র ক্ষুধা অনুভুত হবার আগেই হালকা কিছু হলেও খেয়ে নেয়া ভাল। না হলে শরীরের ফ্যাট ভাঙ্গা শুরু হয়ে যায়। এতে শরীর ও মনের উপর একটা খারাপ প্রভাব পড়ার আশংকা থাকে।