মানুষ স্মৃতি হারিয়ে সব কিছু ভুলে গেলেও যে ভাষায় কথা বলত সেটা ভুলে না। কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+10 টি ভোট
8,643 বার দেখা হয়েছে
"চিন্তা ও দক্ষতা" বিভাগে করেছেন (123,400 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+2 টি ভোট
করেছেন (123,400 পয়েন্ট)
 
সর্বোত্তম উত্তর

Mobin Sikder- 

এটির কারণ হচ্ছে মস্তিষ্কের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অন্যটি হয়না।

আমাদের মস্তিষ্কের দুইটি অংশ দ্বারা কথা বলা নিয়ন্ত্রিত হয়। তারা হচ্ছে সেরেব্রাল কর্টেক্সের ব্রোকাস এরিয়া এবং ভার্নিক এরিয়া। আমাদের কথা বলা এই দুই অংশের উপর অধিকাংশে নির্ভরশীল কিন্তু স্মৃতিশক্তি এদের উপর নির্ভরশীল নয়। আবার দেখবে, কথা বলার জন্য মাসল মেমোরির ও ব্যবহার হয়, স্মৃতিশক্তি ক্ষতি হবার সময় এই মাসল মেমোরিরও তেমন ক্ষতি হয় না। এজন্য তারা কথা ঠিকই বলতে পারে কিন্ত আগের কথা মনে করতে পারে না অথবা নতুন কথা শিখতে কষ্ট হয়।

যদি এই দুইটি এরিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবেই সে আর কথাও বলতে পারবে না। 

আসলে মস্তিষ্কে আমরা দুইভাবে বিভক্ত করতে পারি। একটি হচ্ছে Declarative(implicit) এবং অন্যটি হচ্ছে Procedural(explicit)। আবার Declarative Memory এর দুইটি অংশ, একটি হচ্ছে semantic ( যেখানে মানুষ খুব সাধারণ বিষয়গুলো আয়ত্ত করে যেমন ২+২=৪ অথবা বাংলাদেশের রাজধানীর নাম কি!) , অন্যটি হচ্ছে Episodic (যেখানে বিভিন্ন স্মৃতির কাজগুলো হয়ে থাকে যেমন তোমার ১৩ তম জন্মবার্ষিকীতে কি রঙের কেক কেটেছিলে)।

তো এই সিস্টেমগুলো একে অন্যের থেকে আলাদা, যখন কেউ স্মৃতিশক্তি হারায় সে মূলত ইপিসোডিক মেমোরি লস করে। যেহেতু সিস্টেমগুলো আলাদা স্থানে রয়েছে সেহেতু সে খুব সাধারণ বিষয়গুলো মাথায় রাখতে পারে।

এর বিপরীত টাও ঘটতে পারে যেখানে সিমেন্টিক মেমোরি লস করলে কিন্তু ইপিসোডিক মেমোরি ঠিক থাকলো, সেক্ষেত্রে সেই মানুষটি খুব সাধারণ বিষয়গুলো মাথায় রাখতে পারবে না কিন্তু ঠিকই সে অতীতের ঘটনাগুলো মাথায় রাখতে পারবে।

তাহলে আমরা পুরো বিষয়টির একটা সারমর্ম টানতে পারি যে মেমোরি লস মানেই পুরো মেমোরি নষ্ট হয়ে যাওয়া না। একটা ফাংশন নষ্ট হয়ে যাওয়া মাত্র, একাধিক ও নষ্ট হতে পারে।

©Mobin Sikder || Science Bee

+1 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)

জন্মের পর থেকে শিশু তার মা,বাবা এবং পরিবারের অন্যান্য লোকদের মুখ থেকে মাতৃভাষা শুনে মনে রাখে।

সহজাত বৈশিষ্টের কারণে এই মাতৃভাষা অবচেতন স্মৃতি হিসেবে জমা হতে থাকে।
অবচেতন স্মৃতি দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে পরিণত হয়।

এই স্মৃতি মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল কর্টেক্স এর বাম পাশে স্থায়ী স্মৃৃৃৃতি ভান্ডাড়ে জমা হয়। দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি মজবুতভাবে সংরক্ষিত হলে তা ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। শিশু প্রথম ভাষা শেখার সময় মাতৃভাষা বারবার ব্যবহার করে ফলে এই স্মৃতি বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে আরও মজবুত হয়।
এ কারণে কোন মানুষকেই মাতৃভাষা মুখস্থ করতে হয়না।

শিশু কথা বলতে শেখে ১-২ বছরের মধ্যে। জীবনের ১ম তিন বছরে মস্তিষ্কে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১মিলিয়ন সিন্যাপস তৈরি হয়। এসময় মস্তিষ্ক খুব দ্রুত স্মৃতি জমা করে।শিশু এ সময় খুব কম বিষয় মুখস্ত করে তাই মস্তিষ্কের স্মৃতি ধারণ ক্ষমতাও বেশি থাকে।
৬ বছরের মধ্যে মস্তিষ্কের ৯০% গঠন পূর্ণ হয়। এই ৬ বছর পর মস্তিষ্কের রূপান্তর প্রায় সম্পন্ন হওয়ার কারণে শিশু নতুন বিষয় মুখস্থ করতে থাকে বা নতুন পড়াশুনা শিখতে থাকে এগুলো অর্জিত স্মৃতি হিসেবে জমা হয়। অর্জিত স্মৃতি দ্রুত মস্তিষ্কে জমা হয় কিন্তু খুব দ্রুত ডিলিট হয়ে যায়। চিন্তা করুন একটা বইয়ের ১০০০ শব্দ আপনি এক সপ্তাহে মুখস্ত করে ফেলেন কিন্তু শিশুর মা,বাবা দাদা, ইত্যাদি ছোট ছোট শব্দ শিখতে প্রায় ১বছর লেগে যায়।
এই শব্দগুলো শিশু জোর করে মুখস্ত করে না এটা সহজাতভাবে মস্তিষ্কে জমা হয় অবচেতন বা সহজাত স্মৃতি হিসেবে। তাই মানুষ মাতৃভাষা ভুলে যায় না।
শুধু ফ্রন্টাল কর্টেক্স নয় মাতৃভাষা এক সময় মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে অল্প অল্প করে জমা হতে থাকে। ভেবেচিন্তে কথা বলার সময় এসব ক্ষুদ্র স্মৃতি নিউরোট্রান্সমিটারের মাধ্যমে একত্রিত হয় এবং Broca’s Area তে প্রেরিত হয়। এসময় আমরা ধীর গতিতে কথা বলি। কিন্তু স্বতঃস্ফূর্তভাবে দ্রুত কথা বলার সময় যাতে অল্প সময়ে ভাষা ডেলিভারি দেয়া যায় সেজন্যে ঐ ক্ষুদ্র স্মৃতি ইউনিট এককভাবে ভাষা ব্যবহারে কাজ করে। এতে সময় অনেক কম ব্যয় হয়।কিন্তু এসময় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
কিছুটা কম্পিউটারের ক্যাশ মেমোরির মত।
তাহলে এখন আমরা বুঝতে পারলাম মাতৃভাষার প্রধান স্টোরেজ ফ্রন্টাল কর্টেক্স এর বামপার্শ্ব এবং সহায়ক স্টোরেজ পুরো মস্তিষ্ক। এদের পরিচালক হিসেবে কাজ করে Broca’s Area ও Wernicke’s area। মস্তিষ্কে বড় ধরণের কোন আঘাত লেগে অথবা স্ট্রোকের কারণে মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট কোন অংশ অকেজো হয়ে গেলে দেহের নির্দিষ্ট অঙ্গ বিকল হয়ে যায় কিন্তু মাতৃভাষা ভুলে যায় না।

এর কারণ হলো, মাতৃভাষার প্রধান স্টোরেজ অকেজো হলেও সহায়ক স্টোরেজ সহজাত বৈশিষ্টের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে নেয়।

আবার তীব্র মেন্টাল ডিপ্রেশন বা আঘাত জনিত কারণে মানুষের স্মৃতি নষ্ট হয়ে গেলেও মাতৃভাষা ভুলে যায় না। এর কারণ হলো, অর্জিত স্মৃতি মস্তিষ্কের সমস্যার কারণে ডিলিট হলেও সহজাত বা অবচেতন স্মৃতি ডিলিট হয় না। একটা উদাহরণ দিয়ে বুঝাই, ধরুন কম্পিউটারের মেমোরি ফুল হওয়ার কারণে কম্পিউটার চালু হচ্ছে না এসময় কম্পিউটার সেভ মুপে চালু করলে শুধু অত্যাবশ্যকীয় মেমোরি সচল রেখে বাঁকি মেমোরি বন্ধ করে কম্পিউটার চালু হবে।
একই রকম ভাবে মস্তিষ্কের স্মৃতি নষ্ট হলেও অবচেতন বা সহজাত স্মৃতি যা বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয় তা কখনো নষ্ট হয় না।
যেহেতু মাতৃভাষা সহজাত স্মৃতি সেহেতু মাতৃভাষা ভুলে যায় না।

তবে মারাত্মকভাবে মস্তিষ্কের ৮০% এর বেশি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা Broca’s Area নষ্ট হলে কথা বলার ক্ষমতা ধ্বংস হয় ফলে সেই সময় মাতৃভাষাতেও কথা বলতে পারবেন না।

ক্রেডিট: Koto Kisu Ojana

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+5 টি ভোট
1 উত্তর 1,125 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 443 বার দেখা হয়েছে
17 ডিসেম্বর 2021 "মনোবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন বিলাস পাল (4,210 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 2,702 বার দেখা হয়েছে

10,776 টি প্রশ্ন

18,469 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

271,495 জন সদস্য

111 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 110 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Shariar Rafi

    420 পয়েন্ট

  2. Tazriyan

    190 পয়েন্ট

  3. Khandoker Farhan

    110 পয়েন্ট

  4. Eyasin

    110 পয়েন্ট

  5. 78wincomim

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...