মানুষ জীবিত অবস্থায় যে ওজন থাকে মৃত্যুর পর তার ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। মৃত্যুর পরও আমাদের শরীরের ওজন একই থাকে। বরং পরিবেশ, ঋতু, মৃত্যুর ধরণ অনুযায়ী মৃত্যুর পর মানুষের ওজন সাধারণত কিছুটা কমে যেতে পারে। এর কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
১. তরল নিঃসরণঃ মৃত্যুর পর শরীরের বিভিন্ন তরল যেমন - ঘাম, প্রস্রাব ইত্যাদি প্রাকৃতিকভাবে বের হয়ে যেতে শুরু করে। এর ফলে শরীরের ওজন কিছুটা কমে যেতে পারে।
২. গ্যাস নিঃসরণঃ মৃত্যুর পর মানুষের শরীরের ভেতরের ব্যাকটেরিয়াগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং পচন ধরা শুরু করে। এই প্রক্রিয়ায় গ্যাস উৎপন্ন হয় যা শরীর থেকে বের হয়ে যায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। পচন প্রক্রিয়ার শুরুতে গ্যাস তৈরি হওয়ার কারণে পেট কিছুটা ফুলে যায়। পেট ফুলা দেখে মনে হতে পারে যে ওজন বেড়ে গেছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে গ্যাসের কারণে শরীরের আয়তন বৃদ্ধি পায়, ওজন নয়। গ্যাসের জন্য মৃতদেহের ওজন একই থাকে।
৩. পানিশূন্যতাঃ মৃত্যুর পর শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। কোষের ভিতরে থাকা পানি শুকিয়ে যেতে থাকে কারণ তখন আর পানি গ্রহণ করার প্রক্রিয়া চালু থাকে না। এর ফলে ওজন কমে যেতে পারে।
৪. আপেক্ষিকতাঃ একজন জীবিত মানুষকে যখন আপনি তুলতে যান তখন সেই মানুষটিও আপনাকে সাপোর্ট দেয় বা কো-অপারেট করে বিভিন্ন ভাবে যার কারণে একটু হালকা মনে হতে পারে। কিন্তু মৃত মানুষকে তুলতে গেলে আপনি সেই মানুষটি থেকে কোনো সাপোর্টটা পান না এজন্য ওজন বেশি মনে হতে পারে।
৫. মৃতদেহ শক্ত হয়ে যাওয়াঃ মরার পর দেহ ধীরে ধীরে শক্ত হতে শুরু করে এবং মৃতদেহের হাড় ও হাড়ের জয়েন্টগুলো শক্ত ও সংকুচিত হয়ে যায় আর এই অবস্থাকে বলে rigor mortis. এর ফলে মৃতদেহের বিভিন্ন অর্গানের মুভমেট অনেক কষ্টকর হয়ে যায় এবং দেহ শক্ত হয়ে যায়। আর এই শক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক সময় মনে হতে পারে যে ওজন বেড়ে গেছে কিন্তু বাস্তবে তা হয় না। ওজন একই থাকে।
সোর্সঃ