ঘুমের মধ্যে আচমকা ঝাঁকুনিকে 'হিপনিক জার্কস'বলা হয়। হিপনিক জার্ক দ্রুত হৃৎস্পন্দন, দ্রুত শ্বাস, ঘাম এবং কখনও কখনও "শক" বা শূন্যে পড়ে যাওয়ার মতো এক অদ্ভুত সংবেদনশীল অনুভূতির সাথে সম্পর্কিত। এটি কোনো স্বচ্ছ স্বপ্নের অভিজ্ঞতা বা হ্যালুসিনেশনও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, গভীর ঘুমের মধ্যে অনেকেরই এক ঝটকায় ঘুম ভেঙে যায়। এসময় ওই ব্যক্তি কখনও ঘুমের মধ্যে শূন্য থেকে পড়ে যাচ্ছে অথবা সিঁড়ি থেকে পড়ে যাচ্ছে।
অনেক সময় কেউ দেখেন তাকে কেউ ধাক্কা দিচ্ছে। আর ঘুমের মধ্যে এমন দেখেই তা শরীর রিয়েক্ট করে। যার কারণে শরীর কেঁপে ওঠে বা পা দিয়ে বিছানায় সজোরে আঘাত করে ঘুম ভেঙে যায়।
ঘুমের এই ব্যাঘাত ঘটার বিষয়টির প্রভাব পড়ে আপনার ব্যক্তিগত জীবনে এবং কর্মক্ষেত্রে। এ সমস্যায় ভোগা ব্যক্তির ৮ ঘণ্টা ঘুম হলেও শরীর থেকে ক্লান্তির ছাপ তাদের কাটে না। অনেকে আবার একে বিনাইন মায়োক্লিনিক জার্ক বা স্লিপ সুইচ বলে।
আশ্চর্যের বিষয় হলো চিকিৎসকরা এ বিষয়ে যা বলছে তা রীতিমতো আপনাকে অবাক করবে। তারা বলছেন, এ সমস্যাটি মোটেও গভীর ঘুমের মধ্যে ঘটে না। এটি ঘটে ঘুমের একেবারে শুরুর দিকে।
ঘুমের প্রথমদিকে তন্দ্রাভাব থাকে। আর মস্তিষ্কও কিছু একটা ভাবতে থাকে। তন্দ্রাজালের এ সময়টাতে মানুষের স্লিপ সুইচ হয়।
কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলছেন, এ সময় মস্তিষ্ক বিভিন্ন সংকেত আদান প্রদানে ভুল করে থাকে। আর সে কারণেই ঘটে ঘুমের মধ্যে বিপত্তি। ঘুমের মধ্যে ভয় বা ভূতের স্বপ্ন দেখলেও স্লিপ সুইচ হতে পারে আপনার।
গবেষকরা বলছেন, ঘুমের মধ্যে এ সমস্যা হলে এটি একটি শারীরিক সমস্যা হিসেবে ধরে নেয়া হয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে এ রোগটির নাম প্যারাসামোনিয়া।
যখন কোনো পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তির দিনে ৮ ঘণ্টা ঘুম হয় না তখন তার মস্তিষ্ক ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত হয়ে ওঠে। অবচেতন মনে তখন নানা ধরনের চিন্তা আর ভয় বাসা বাঁধতে শুরু করে। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে স্বপ্নের মধ্য দিয়ে, আর তাতেই দেখা দেয় স্লিপ সুইচের সমস্যা।
এ সমস্যা বেশি করে পেয়ে বসে যারা ধুমপায়ী তাদের মধ্যে। অ্যালকোহল বা কফি খাওয়ার প্রবণতাও এ সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে আরও বেশি।
এ সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে সুশৃঙ্খলিত লাইফস্টাইল এবং স্বাস্থ্যসম্মত ডায়েট ও ব্যায়ামকে জীবনের অংশ করে নিলেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
সংগ্রাহক : Shah Sultan Nur
© Somoy tv, Wikipedia.