এমনটা কি কখনো হয়েছে যে, আপনি একটি উঁচু ভবনে, ব্রীজে বা পাহাড়ে উঠেছেন তখন মনে হলো, 'লা°ফ দেই'! অথচ, আপনি বি'ষন্ন বা হতা'শাগ্রস্ত নন। এমনকি আ'ত্মহ'ত্যা করা কোনো ইচ্ছে আপনার নেই। কখনো ছিলোও না। তাহলে কেন এমনটা মনে হলো?
এই যে আপনার অবচেতন মন আপনাকে লাফ দিতে প্ররোচিত করছে, ইংরেজিতে এই প্ররোচনার একটি নাম আছে, 'The call of the void এবং ফ্রেঞ্চ ভাষায় যা l’appel du vide। বাংলায় করলে হবে, 'শূন্যতার ডাক'!
শূন্যতার ডাক! নিবিড় এক বাংলা! যাইহোক, চলুন খুঁজি, মনের এই নিবিড়-নিষ্ঠুর প্ররোচনার পেছনে কি-ই বা কারন আছে!
আমরা নবম-দশম শ্রেনীর জীববিজ্ঞান বইয়ে প্রতিবর্তী ক্রিয়া (Reflex Action) সম্পর্কে পড়েছি৷ মনে না থাকলে সমস্যা নেই, আমি মনে করিয়ে দিচ্ছি! আকস্মিক কোনো উদ্দীপনায় আমারা যে স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করি তাই প্রতিবর্তী ক্রিয়া। সহজ উদাহরণ হলো, আঙুলে সুঁই ফুটে গেলে নিজের অজান্তে মুহুর্তেই হাত সরিয়ে নেয়া।
এটি চাইলেই আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। এখানে সম্পূর্ণ কাজটি করে সুষুম্নাকাণ্ড।
উপরোক্ত বিশ্লেষণের সাথে সম্পূর্ণ না হলেও অনেকটা সংযোগ আছে 'শূন্যতার ডাকের'।
যখন আমরা খুব উঁচু স্থান থেকে নিচে তাকাই অথবা যখন আমাদের সামনে বি'পদজনক কোনো বস্তু থাকে তখন আমরা নিরাপদে সরে যাওয়ার তাড়না অনুভব করি। আমদের মস্তিষ্ক সংকেত তৈরি করে বলতে থাকে, 'পিছে হাটো'! 'এতে হাত দিও না'!
এই ঘটনাটি খুব দ্রুত হয়ে যায়। হয়তো মনের অজান্তে আমরা কিছুটা নিরাপদে সরেও যাই। কিন্তু, সরে যাবার পর মনে হয় আমি সরে গেলাম কেন! আমি কি লা'ফ দিতে চাচ্ছিলাম?
এখানে ঘটে যাওয়া দুটি ঘটনাই কয়েক সেকেন্ডের ভেতর ঘটে যায় এবং লা'ফ দেয়ার বিষয়টি আমাদের মাথায় চলে আসে। এরপর এই বিশ্রী বিষয়টি নিয়ে আমারা আরো কয়কবার বিস্তারিত কল্পনা করি!
তখন আমরা ধরেই নেই যে, 'তখন আমি আসলে লা'ফ দিতে চাচ্ছিলাম'!
- নাহিদ জাহান ভূঁইয়া।
তথ্যসূত্র;
১. Hethline.
২. The Bubble.
৩. Live Science.
৪. জীববিজ্ঞান (নবম-দশম)।