অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছে যে, আজকে প্রকাশিত এই ঐতিহাসিক ছবিটি ৪.৬ বিলিয়ন অর্থাৎ ৪৬০ কোটি বছরের আগের হলো কিভাবে?
এটা সহজে বুঝতে হলে আমাদের আলোক সময় সম্পর্কে জানতে হবে। আমরা জানি মহাবিশ্বের এই বিশাল থেকে বিশালতর দূরত্ব গুলো আলোকবর্ষ দিয়ে প্রকাশ করা হয়।
এখন বলি আলোক সময়টা কি? সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে সময় নেয় ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড। আলোক সময়ের হিসেবে পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব ৮.৩১ মিনিট আলোক সময়। আলোর গতির সাথে এই দূরত্ব হিসেব করা হয়। এখানে একটা কথা বলে রাখি পৃথিবী থেকে এই মুহুর্তে আমরা সূর্যের যে অবস্থা দেখছি তা সূর্যে ঘটে গেছে ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড আগে। সূর্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা পৃথিবীতে আসতে সময় নেই ৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ড। মুলতো আমরা অতীত দেখতে পায়।
এখন আসি আলোক বর্ষে, আলো এক বছর সময়ে যতটুকু পথ অতিক্রম করতে পারে তাকে বলা হয় ১ আলোক বর্ষ। ১ আলোক বর্ষ = ৯.৪৬১×১০^১২ কিলোমিটার। এই বিশাল মহাবিশ্বের দূরত্ব যদি আমরা সাধারণ কি.মি. প্রকাশ করতে যায় তাহলে অনেক ঝামেলা পোহাতে হবে।
আমাদের সৌর জগতের সবছেয়ে কাছে নক্ষত্র Proxima Centauri। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ৪.২৪ আলোক বর্ষ। অর্থাৎ এই তারার আলো পৃথিবীতে আসতে সময় নেয়
৪ বছর ৩ মাস প্রায়। আমরা মুলত পৃথিবী থেকে যখন এই নক্ষত্রকে দেখতে পায় সেটা মূলত তার আরো ৪ বছর ৩ মাস আগের অবস্থা। সে হিসেবে মহাকাশের সকল কিছুরই অতীত দেখতে পায় আমরা।
জেমস ওয়েভ স্পেস টেলিস্কোপের যে ছবিটা প্রকাশ পেয়েছে তার দূরত্ব পৃথিবী থেকে ৪.৬ বিলিয়ন আলোক বর্ষ দূরে। অর্থাৎ এই ছবিতে আমরা গ্যালাক্সি গুলোর যে অবস্থান দেখছি তা মুলত ৪.৬ বিলিয়ন বছরের পুরনো।
একটা মজার হাইপোথিসিস আপনাদের বলি।
ধরুন ছবি তে প্রকাশিত কোন গ্যালাক্সির কোন একটি গ্রহ থেকে এই মুহুর্তে আমাদের চেয়েও উন্নত মস্তিষ্কের কোন প্রাণী আছে। তারা যদি আরো উন্নত কোন টেলিস্কোপ দিয়ে আমাদের পৃথিবীর তে নজর দেয় তাহলে তারা এই মুহুর্তে পৃথিবীতে ডাইনোসরের বিচরণ বা তার'ও পূর্বের অবস্থান দেখতে পাবে।
লিখেছেন AI Robin (Team Science Bee)