চান্দ্র মাসের গড় সময় হলো ২৯ দিন ১২ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ৩ সেকেন্ড, অর্থাৎ এক নতুন চাঁদ থেকে পরের নতুন চাঁদ পর্যন্ত। কিন্তু এটা স্থির থাকে না. কারণ সূর্যের মহাকর্ষ বলের প্রভাবে চন্দ্রের কক্ষপথ হালকা পরিমাণে বিকৃত হয়; যার ফলে চান্দ্রমাসের দৈর্ঘ্য ২৯.২৬ থেকে ২৯.৮০ দিন পর্যন্ত হয়। আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্যে যেমন নিশ্চয়তার সাথে গ্রহ নক্ষত্রের কোন সময় কী অবস্থান হবে তা বলা যায়, তেমনই বলা যায় চাঁদের ক্ষেত্রেও; কিন্তু সেই অবস্থানে থেকে চাঁদকে পৃথিবী থেকে কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের মানুষ দেখতে পাবে কিনা সেটা শতভাগ নিশ্চয়তার সাথে বলা যায় না।
কেন এক দেশে চাঁদ দেখা গেলেও অন্য দেশে দেখা যেতে দেরি হতে পারে?
কারণ খালি চোখে চাঁদকে দেখতে হলে চন্দ্র আর সূর্যের মাঝে ১০.৫ ডিগ্রি কোণ থাকতেই হবে। এবং যে পরিমাণ দূরত্ব অর্জন করলে এই কোণ তৈরি হবে, সে পরিমাণ যেতে যেতে চাঁদের ১৭ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায় প্রথম কোনো প্রান্ত থেকে নতুন চাঁদের ফালি দেখবার পর থেকে (‘Conjunction’)। এ কারণেই আজ আমেরিকাতে চাঁদ দেখে গেলেই যে আজই বাংলাদেশে চাঁদ দেখা যাবে তা নয়। কিংবা সৌদি আরবে চাঁদ উঠলো বটে, কিন্তু বাংলাদেশে ন্যূনতম কোণ না পেলে এখানে চাঁদ দেখা যাবে না, সাধারণত পাওয়া যায়ও না। তাই চাঁদের বয়স কত সেটা আদৌ আসল কথা নয়, সেই কোণ হয়েছে কিনা বা ইংরেজিতে যেটাকে ‘Elongation’ বলে তা অর্জিত হয়েছে কিনা সেটাই হচ্ছে চাঁদ চোখে দেখতে পাবার নির্ণায়ক। তাই আমরা জানি আজ চাঁদ আকাশের অমুক অবস্থানে আছে, কিন্তু তারপরেও সেটা আমাদের চোখে ধরা দেবে না। এবং এই ধরা দেওয়া না দেওয়ার উপর ভিত্তি করেই হাজারো বছর ধরে ধর্মীয় নিয়মকানুন ও সংস্কৃতি কিংবা নতুন মাসের হিসেব চলে আসছে।
তথ্য - ইন্টারনেট