নিশাত তাসনিম : মানুষ খালি চোখে দেখতে না পেলেও আমাদের চারপাশের পরিবেশে জীবাণু ছড়িয়ে রয়েছে। মানুষের ত্বক, অন্ত্র, মুখমন্ডল সব জায়গায় এদের বসবাস। জীবাণু যে শুধু ক্ষতিকর তা নয়, উপকারি জীবাণুও রয়েছে।
পৃথিবীর সব জীবাণু, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ইত্যাদি গায়েব হয়ে গেলে প্রথমত সব ধরনের সংক্রমক রোগ বিলীন হয়ে যাবে। জীবন নির্ভর করে জীবনের মৌলিক উপাদানের ক্রমাগত চক্রের মতো চলা ও পুনর্ব্যবহার করার উপর। উদাহরণস্বরূপ, উদ্ভিদ পানি (হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন), সূর্যালোক এবং নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাসিয়ামের মতো অন্যান্য উপাদান ব্যবহার করে সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে বেঁচে থাকে। উদ্ভিদ এই সমস্ত মৌলিক রাসায়নিক পরিবেশ থেকে নেয় এবং উদ্ভিদজাত খাবার খাওয়ার পরে এইসব উপাদান পৃথিবীতে পুনরায় নানা মাধ্যমে রিসাইকল হয়ে ফিরে আসে।
অনুমান করে বলুন তো এই সমস্ত প্রক্রিয়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে কে? জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া। উদাহরণস্বরূপ, জীবাণু বাতাস থেকে নাইট্রোজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডকে উদ্ভিদ ও প্রানীর ব্যবহারযোগ্য উপাদানে রূপান্তর করে। যেসব প্রাণী নিজের খাবার নিজে তৈরি করতে পারেনা তাদের জন্য পৃথিবী সমস্ত জীবাণু গায়েব হয়ে যাওয়া একটি ভয়ানক খবর। কারণ জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া ছাড়া উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে খাবার উৎপাদন করতে পারবেনা এবং এক সময় মারা যাবে। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর অন্ত্রে উপকারি অনেক ব্যাকটেরিয়া আছে, ব্যাকটেরিয়া ছাড়া প্রাণীরা নিজেদের গ্রহণ করা খাবার হজম করতে পারবেনা।
জাবর কাটা প্রাণী, যেমন : গরুর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া তাদের সেলুলোজ হজম করতে সাহায্য করতে, ব্যাকটেরিয়া না থাকলে গরু সেলুলোজ ভেঙে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে পারবেনা। মোটকথা, জীবাণু গায়েব হয়ে গেলে পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্র এবং জৈব রসায়নের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।
রেফারেন্স : https://journals.plos.org/plosbiology/article?id=10.1371%2Fjournal.pbio.1002020