ট্রি-ম্যান সিনড্রোম এক ধরনের বিরল চর্মরোগ। এই রোগে আক্রান্ত মানুষকে বৃক্ষমানব বলা হয় কারণ রোগীর দেহে গাছের বাকল ও ডালের মতো শক্ত বস্তু জন্মাতে থাকে। এই রোগের বৈজ্ঞানিক নাম Epidermodysplasia verruciformis (EV)। এখনো পর্যন্ত বৃক্ষমানব রোগের ২০০ এর বেশি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত মানুষ ২ জন।
কারণঃ
ট্রি-ম্যান সিনড্রোম বংশগতভাবে হওয়া অটোজোমাল রেসেসিভ জেনেটিক রোগ। EVER1/TMC6 এবং EVER2/TMC8 জিনের নিষ্ক্রিয় পিএইচ মিউটেশনের ফলে এই রোগ হতে পারে। এই জিনগুলো ত্বককোষে জিংক এর পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করে এবং বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে ইমিউন ফাংশন বাধাগ্রস্ত হয়। তাছাড়া ত্বকে Human Papillomaviruses (HPVs) এর প্রভাবে এই রোগ হতে পারে। HPV এর অনিয়ন্ত্রিত সংক্রমণের ফলে হাতে পায়ে আঁচিল, আঁশযুক্ত, বাকলের মতো অংশের বৃদ্ধি দেখা দেয়। সায়েন্স বী
লক্ষণঃ
ট্রি-ম্যান সিনড্রোম যেকোনো বয়সে হতে পারে। স্ত্রী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এই রোগের ঝুঁকি আছে। এই রোগে আক্রান্ত মানুষের দেহে প্রথমে বাদামী রঙের আঁচিল দেখা দেয়। আঁচিলগুলোর বৃদ্ধি রোদ লাগা অংশে বেশি হয়; যেমন: হাত, পা, মুখ, কানের লতিতে। ত্বকের সমতল অংশ ফুলে গোলাপি, সাদা বা বাদামী রঙ ধারণ করে। ফুলে উঠা অংশকে প্যাপিউল বলে। হাতে ও পায়ে আঁশের মতো ফোসকা দেখা দেয় যাকে প্লেক বলে। ধীরে ধীরে রোগীর সম্পূর্ণ দেহে বাকল ও শিকড় দেখা দেয়।
চিকিৎসাঃ
বৃক্ষমানব রোগের স্থায়ী চিকিৎসা এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিকড়ের মতো গঠনগুলোকে অপসারণ করা হলেও এটি স্থায়ী সমাধান নয়। ঔষধ, ক্রায়োথেরাপি, লেজার সার্জারীর মাধ্যমে এই রোগের বিস্তার কিছুটা কমিয়ে রাখা যায়৷ রোগীদের রোদের সংস্পর্শে আসা এবং ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হয়। আক্রান্ত ব্যক্তিদের ত্বকে এক পর্যায়ে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই রোগীদের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শমত চলতে হয়।
© নিশাত তাসনিম (সায়েন্স বী)
রেফারেন্স : https://www.healthline.com/health/epidermodysplasia-verruciformis
https://www.medicalnewstoday.com/articles/tree-man-syndrome