Nishat Tasnim
জন্ডিস (Jaundice) আসলে কোন রোগ নয়, এটি একটি রোগের লক্ষণ মাত্র। জন্ডিস হলে রক্তে বিলরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং ত্বক, চোখের সাদা অংশ এবং অন্যন্য মিউকাস ঝিল্লি হলুদ হয়ে যায়। এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। প্রতিরোধই এ রোগ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায়।
জন্ডিসের কারণঃ
রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে জন্ডিস দেখা দেয়। সাধারণত লিভারের রোগই জন্ডিসের প্রধান কারণ। আমরা যা কিছু খাই তা লিভারেই প্রক্রিয়াজাত হয়। লিভার বিভিন্ন কারণে রোগাক্রান্ত হতে পারে। হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি এবং ই ভাইরাসগুলো লিভারে প্রদাহ সৃষ্টি করে যাকে বলা হয় ভাইরাল হেপাটাইটিস। বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই জন্ডিসের প্রধান কারণ এই হেপাটাইটিস ভাইরাসগুলো। উন্নত দেশগুলোতে অতিরিক্ত মধ্যপান জন্ডিসের একটি অন্যতম প্রধান কারণ।
এ ছাড়াও অটোইমিউন লিভার ডিজিজ, বংশগত কারণসহ আরও নানান ধরনের লিভার রোগেও জন্ডিস হতে পারে। ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াতেও অনেক সময় জন্ডিস হয়। তা ছাড়া থ্যালাসিমিয়া ও হিমোগ্লোবিন ই-ডিজিজের মত যেসকল রোগে রক্ত ভেঙ্গে যায় কিংবা পিত্তনালীর পাথর অথবা টিউমার হলে জন্ডিস হতে পারে। আবার লিভার বা অন্য কোথাও ক্যান্সার হলেও জন্ডিস হতে পারে। জন্ডিস মানেই লিভারের রোগ এমনটি ভাবা তাই একেবারেই ঠিক নয়।
জন্ডিস প্রতিরোধে করণীয়ঃ
১. হেপাটাইটিস এ ও ই খাদ্য ও পানির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। আর হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি এবং হেপাটাইটিস ডি দূষিত রক্ত, সিরিঞ্জ এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়ায়। তাই সব সময় বিশুদ্ধ খাবার ও পানি খেতে হবে।
২. হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস বি হওয়ার আশংকা মুক্ত থাকতে হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস বি এর ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন।
৩. শরীরে রক্ত নেয়ার প্রয়োজন হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় স্ক্রিনিং করে নিতে হবে। ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ ব্যবহার করতে হবে। মদ পান ও নেশাদ্রব্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
৪. কল কারখানার নির্গত রাসায়নিক পদার্থ থেকে দূরে থাকুন। সেলুনে সেভ করার সময় অবশ্যই নতুন ব্লেড ব্যবহার করতে বলবেন।
৫. জন্ডিস অনেক ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণও হতে পারে তাই এই রোগ থেকে বাঁচতে সচেতন হতে হবে।।