আলোর প্রধান উৎস সূর্য। সূর্যের আলো দেখতে সাদা। আমরা জানি, সাদা আলো তৈরি হয় বিভিন্ন আলোর সংমিশ্রণে। সূর্যের সাত রঙের আলো সাদা রং হয়ে সবকিছুর উপরে পড়ে। সাদা হলেও এরমধ্যে কিন্তু অনেকগুলো রং থাকে। এই আলো যখন কোনো বস্তুর উপরে পড়ে, তখন বস্তুটি অনেকগুলো রং শোষণ করে নেয়। যে রংটুকু শোষণ করে না, সেটুকু প্রতিফলিত হয় বস্তুর গায়ে। ফলে প্রতিফলিত রংটাই হয় ওঠে ওই বস্তুর রং।
পানির ক্ষেত্রেও এমনটা হয়। কিন্তু পানির উপরে যে আলো পড়ে, পানির ভিতর দিয়ে যাবার সময় সাদা আলোর সব কয়টি রং প্রায় সমান অনুপাতে শোষিত হয়। এখানে নিদির্ষ্ট রং এর কোন আলোর সবটুকু শোষিত হয় না। তাই পানি বর্ণহীন।
এখানে উল্লেখ্য যে,
অল্প পরিমাণ পানি বা জল বর্ণহীন মনে হতে পারে কিন্তু পুরুত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে পানির গাঢ় নীল বর্ণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। যেমন- সাগরের পানি কিন্তু নীল দেখা যায়।
ব্যাপারটি ঘটে সূর্য থেকে আগত আলোকরশ্মির কারণে যা প্রকৃতপক্ষে সাত রঙের আলোর সমাহার। যখন এই আলোকরশ্মি সাগরের পানিতে এসে প্রবেশ করে তখন লাল,কমলা,হলুদ এইসব দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো পানির মধ্যে দৃঢ়ভাবে শোষিত হয়ে যায়। কিন্তু ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘের "নীল আলো" তেমনটা শোষিত না হয়ে প্রতিফলিত হয়। তখন আমরা সাগরের পানি নীল রঙের দেখতে পাই।
অপরদিকে, সাগরের পানিতে যদি অধিক পরিমাণ ময়লা, কাদা, শ্যাওলা বা দূষক পদার্থের উপস্থিতি থাকে তবে ঐ পানিতে এই নীল আলো বিকিরণের ব্যাপারটা ঘটতে পারে না। কারণ কাদা, ময়লা এগুলো সবধরণের আলোকেই বিকিরণে বাঁধা দেয়। ফলে সাগরের পানি তখন বিভিন্ন রং (কালচে, সবুজ, হালকা হলুদাভ, ঈষৎ লাল ইত্যাদি) ধারণ করে।