Nishat Tasnim -যাবতীয় জলের উৎস (যেমন– সমুদ্র, নদী, পুকুর, খাল-বিল ইত্যাদি) সবই এই পৃথিবীপৃষ্ঠে, তাই স্বাভাবিক ভাবে পৃথিবীপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুতে উপরের বায়ুর তুলনায় একটু বেশি জলীয় বাষ্প থাকে। আবার আমরা জানি, সূর্যরশ্মি ভূপৃষ্ঠে প্রতিফলিত হয়ে প্রথমে পৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুকে উত্তপ্ত করে, তাই ভূ-পৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ু উপরের বায়ুর তুলনায় একটু বেশি গরম থাকে। অর্থাৎ, পৃষ্ঠসংলগ্ন জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু বেশি উষ্ণ হয়।
এই "উষ্ণ জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু" উপরের বায়ুর থেকে তুলনামূলকভাবে হালকা হওয়ায় উপরের দিকে উঠতে থাকে (ঠিক যেমনটা একটি হিলিয়াম গ্যাস ভর্তি বেলুনকে ছেড়ে দিলে উপরে উঠে)। এই উষ্ণ বায়ু যত উপরের দিকে উঠে ততই এর তাপমাত্রা কমতে থাকে (কারণ ,উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে তাপমাত্রা হ্রাস পায়) এবং এর মধ্যে বায়ুর চাপও কমতে থাকে। (কারণ, উপরে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে বায়ুমণ্ডলের চাপ হ্রাস পায়, তাই পারিপার্শ্বিক বায়ু চাপের সাথে সাম্যাবস্থায় আসতে ওই "উষ্ণ জলীয়বাষ্পপূর্ণ" বায়ুরও চাপ কমে যেতে থাকে। চাপ কমে যাওয়ার জন্য "ওই বায়ু" তার মধ্যস্ত জলীয় বাষ্পকে আর ধরে রাখতে পারে না, ওই জলীয়বাষ্প তখন খুব ছোট ছোট জলকণা বা বরফকনাতে পৃথক হয়ে পড়ে(জলীয়বাষ্প থেকে জলকণা বা বরফকনায় পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াটিকে ঘনীভবন বলে,এই প্রক্রিয়ায় জলীয়বাষ্প আকাশে ভাসমান বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধূলিকণার উপর ঘনীভূত হয়)। এগুলি এতই ছোট ও হালকা যে এদের উপর gravity এর প্রভাব নগন্য। তাই এরা আকাশেই ভেসে বেড়াতে থাকে। এরকম অসংখ্য জলকণা বা বরফ কনা একসঙ্গে আকাশে মেঘ (cloud) হিসেবে ভেসে বেড়ায়।
মেঘ সাদা হওয়ার কারণ নিহিত আছে আলোকরশ্মির একটি বিশেষ ধর্ম "বিক্ষেপন" বা "scaterring" এর মধ্যে। উপরিউক্ত "জলকণা বা বরফকণা" গুলি আকারে "বায়ুতে উপস্থিত বিভিন্ন গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলি"-এর থেকে তুলনামূলক ভাবে বড় হয়। তাই এরা সূর্য থেকে আগত আলোকরশ্মিতে উপস্থিত "সমস্ত তরঙ্গদৈর্ঘের" আলোকে বিক্ষিপ্ত করে, তাই সাতটি বর্ণের সম্মিলিত রূপ হিসেবে আমরা মেঘকে সাদা তুলোর মত দেখতে পাই । (আমরা জানি, সাতটি মৌলিক বর্ন যোগ হয়ে সাদা "রং" দেখায়। নিউটন prism এর দ্বারা ভেঙে দেখিয়েছিলেন যে সাদা বর্ণ সাতটি বর্ণ, যথা- বেগুনি, নীল, আকাশি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল , এর সমষ্টি।