পৃথিবীর সব মশাকে মেরে ফেললে কী হবে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+3 টি ভোট
871 বার দেখা হয়েছে
"তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে করেছেন (141,850 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর
পৃথিবীতে এমনও কিছু কীট-পতঙ্গ আছে যারা মানুষের রক্ত চোষণের মাধ্যমে রোগজীবাণুর বিস্তার ঘটায় এবং প্রতিবছর পুরো বিশ্বে প্রায় ১ মিলিয়ন (১০ লক্ষ) মানুষের মৃত্যু ঘটে থাকে। মূলত এই পতঙ্গটি হলো মশা। কিন্তু পৃথিবীর সমস্ত মশাকে যদি আমরা নিমিষের মধ্যেই ধ্বংস করে দেই তখন কি হবে? মানুষের জন্য কি এটি আরও শান্তি বয়ে আনবে?

ছোট পতঙ্গ হিসেবে মশা সত্যিকারার্থে খুবই মারাত্মক যা ম্যালেরিয়া, পীতজ্বর, ডেঙ্গুজ্বরের মত অসংখ্য রোগের বিস্তার ঘটায় এবং মানুষকে কামড় ও লালা অনুপ্রবেশের মাধ্যমে রোগের বিস্তৃতি ঘটায়। সেই লালা মানুষের দেহের রক্তনালিতে প্রবেশ করে যা আবার বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া বহন করে।

তবে ব্যাপারটি এমন নয় যে মশা শুধু মানুষের উপরই প্রভাব ফেলে বরং সারা বিশ্বে প্রাণীদের থেকে শুরু করে খামারের পশুপাখি মশার থেকে রেহাই পাচ্ছে না। মশার শুধু একটি কামড়ই মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

তাহলে আমরা কিভাবে মশাদের থেকে রেহাই পাব?

প্রথমতই আপনাকে পুরো বিশ্বের মশার সংখ্যা গণনা করে বের করতে হবে যা নিতান্তই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু অনুমান করা হয় এদের মধ্যে প্রায় ৭ ট্রিলিয়ন মশা শুধুমাত্র আলাস্কাতেই রয়েছে। তাহলে ভাবুন পুরো বিশ্বে মশাদের সংখ্যা কততে দাঁড়াবে!

তবে চিন্তার কারণ নেই। মশার থেকে মুক্তির অসংখ্য পদ্ধতি রয়েছে। তন্মধ্যে বাদুড় মূলত কোনোরকম ঝুঁকি ছাড়াই মশাদের ভক্ষণ করে থাকে। তারা ১ ঘন্টায় ৬০০ মশা ভক্ষণ করতে পারে। কিন্তু বাদুড় যদি এভাবে মশা ভক্ষণ করতে থাকে সেক্ষেত্রে আকাশে উড়া অসংখ্য বাদুড় থেকে আমরা কিভাবে মুক্তি পাব? বুঝতেই পারছেন এটি কোনো ভালো আইডিয়া হবে না।

সেজন্য আমাদেরকে মশার প্রজনন পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত হতে হবে। আপনি এখন ভাবতে পারেন মশা যখন ক্ষুধার্ত তখনই তো আমাদের রক্ত চুষে নেয়। বাস্তবিক পক্ষে ব্যাপারটি এমন নয় বটে। মূলত তারা তাদের লার্ভার বিকাশের জন্য মানুষের রক্ত পান করে থাকে। তাই এর বিকল্প হিসেবে আমরা জেনেটিক্যালি মডিফাইড পুরুষ মশাগুলোকে ছেড়ে দিতে পারি। কারণ পুরুষ মশা কামড়ায় না এবং এরা কেবল বলেন বন্ধ্যা সন্তান উৎপাদনে সক্ষম।

কিন্তু তারপরে কি হবে? হ্যাঁ, লক্ষাধিক মানুষ হয়তো মশার কামড় থেকে বাঁঁচবে এবং মশা যেসব রোগ বহন করে তা থেকেও মানুষ মুক্তি পাবে। সেই পাশাপাশি অন্যান্য পশুপাখিরাও মশার যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাবে।

তবে এরকম ঘটলে ব্যাপারটি আসলে ভালো হবে না। কারণ খাদ্য শৃঙ্খলে মশার ভূমিকা অনেক। পৃথিবীতে অসংখ্য পাখি, বাদুড় ও ব্যাঙ রয়েছে যারা মশা ভক্ষণ করে বেঁচে থাকে। এছাড়াও মশা উদ্ভিদের পরাগায়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে পৃথিবীতে প্রায় কয়েক হাজার প্রজাতির মশা রয়েছে, কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র ৬ শতাংশ অর্থাৎ ৬ ভাগ মশা মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের কামড়িয়ে থাকে ও রোগ ছড়ায়। শুধু তাই নয়, বরং মশা আমাজন রেইনফরেস্ট রক্ষা করতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাহলে এখন ভাবুন তো, মশা কি প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে প্রাণীকুলে ভূমিকা রাখছে না? অবশ্যই রাখছে!
0 টি ভোট
করেছেন (135,480 পয়েন্ট)
পরিসংখ্যান বলছে প্রতি বছর যে পরিমাণ পরিযায়ী পাখিরা এখানে আসে তাদের মূল খাদ্য হয় মশা। তাই যদি মশাই না থাকে, তাহলে প্রায় ৫০ শতাংশ পরিযায়ী পাখি আর দুই মেরুতে আসবে না। ফলে সেখানকার পরিবেশে বদল আসতে শুরু করবে।

শুধু তাই নয়, এখানে ভিন দেশ থেকেও বছরের নানা সময় লক্ষাধিক গবাদি পশু এই অংশে মাইগ্রেট হয়ে থাকে। মশার কামড় থেকে বাঁচতে যে জায়গায় মশার ঝাঁক বেশি থাকে, সে জায়গা এড়িয়ে অন্য পথ বেছে নেয় এই গবাদি প্রাণীরা। এমনটা তারা বহু বছর ধরে করে আসছে। হঠাৎ যদি কোনও এক বছর এই মশার ঝাঁক না থাকে, তাহলে কোন দিকে যেতে হবে, তা তো বুঝতেই পারবে না এই গবাদি পশুরা। ফলে রাস্তা হারিয়ে হয়তো কাতারে কাতারে মারাই যাবে।

আর এরা এত সংখ্যায় মারা গেলে মাংসাশী প্রাণীরা কী খাবে? এদের গোবরের মাধ্যে থাকা বীজের কারণে যে গাছেদের জন্ম হয় তাওতো আটকে যাবে। ফলে পরিবেশের স্থিরতা বিঘ্নিত হবে। আর এমনটা হলে যে তার প্রভাব কোনও না কোনও সময় মানুষের উপরও পড়বেই, তা কী আর বলার অপেক্ষা রাখে!

খাবারের অভাব দেখা দেবে পরিবেশ সংক্রান্ত একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে মশারা না থাকলে তাদের লার্ভাও থাকবে না। ফলে মাছেদের মূল খাদ্যে টান পড়বে। আর এমনটা হলে শুধু মশারা নয়, খাদ্যের অভাবে একের পর এক মাছেদের প্রজাতিও বিলুপ্ত হতে থাকবে। প্রসঙ্গত, মশাদের লর্ভা খেয়ে বেঁচে থাকা প্রাণীদের সংখ্যা কিন্তু কম নয়। অনেক পোকা-মাকড়, মাকড়শা, টিকটিকি, এমনকী ব্যাঙদের মূল খাদ্য হল মশা। তাই মশারা না থাকলে মাছেদের মতো এদেরও হয়তো পৃথিবীর বুকে আর দেখা যাবে না।

পাখিদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো কমবে সম্প্রতি প্রকাশিত এক সমীক্ষা রিপোর্টে প্রশ্ন করা হয়েছে, যেসব পাখিরা মূলত মশা খেয়ে বেঁচে থাকে তাদের কী হবে। মশারা না থাকলে তো এরাও পর্যাপ্ত খাবার পাবে না। তখন? পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে তখন কিছুটা বাধ্য হয়েই পাখিদের অন্য কিছু খেতে হবে। একই অবস্থা হবে বাদুড়দেরও। এমনটা চলতে থাকলে এক সময়ে গিয়ে মারাত্মক খাবারের অভাব দেখা দেবে। আর এমনটা হলে যে তা প্রাণী জগতের কাছে সুখবর নয়, তা নিশ্চয় বলার অপেক্ষা রাখে না।

সব শেষে: তুল্য-মূল্য বিচার করে বিজ্ঞানীদের মনে হয়েছে মশারা না থাকলে পরিবেশে মারাত্মক একটা শূন্যস্থান তৈরি হবে, যার প্রভাব খাদ্য চক্রের উপর থেকে নীচ পর্যন্ত পড়বে। কিন্তু কোনও প্রাণীই একমাত্র মশা বা তার লার্ভার উপর ভরসা করে বেঁচে নেই। তাই প্রভাবটা যে মারাত্মক কিছু হবে, তেমন নয়। বরং বহু মানুষ মশার কারণে হওয়া রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। তাই বিজ্ঞানীরা মনে করছেন যুদ্ধে যেমন কোল্যাটারাল ড্যামেজ হয়, তেমনি মশারা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে কিছু প্রাণী হয়তো মারা যাবে, কিন্তু মারাত্মকভাবে লাভবান হবে মানবজাতি। এমন ভাবনায় আবার প্রমাণ করে মানুষ কতটা স্বার্থপর। তারা যে নিজের থেকে বেশি কারও কাথা ভাবে না, তা হয়তো আরেকবার প্রমাণ হয়ে যাবে যদি সত্যিই কোনও দিন এই পৃথিবী থেকে মশাদের চিহ্ন মুছে যায়।

সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 488 বার দেখা হয়েছে
+8 টি ভোট
1 উত্তর 425 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 681 বার দেখা হয়েছে
12 ডিসেম্বর 2022 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ubaeid (28,320 পয়েন্ট)
+3 টি ভোট
1 উত্তর 704 বার দেখা হয়েছে

10,775 টি প্রশ্ন

18,456 টি উত্তর

4,742 টি মন্তব্য

265,566 জন সদস্য

59 জন অনলাইনে রয়েছে
4 জন সদস্য এবং 55 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Farhan Anjum

    140 পয়েন্ট

  2. Saif Sakib

    110 পয়েন্ট

  3. Tasfima Jannat

    110 পয়েন্ট

  4. IsidroHigh46

    100 পয়েন্ট

  5. BerylAnderse

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...