Nishat Tasnim- চরম হতাশা, বেদনা, ক্রোধ ইত্যাদি তীব্র কোন আবেগ মানুষকে গ্রাস করলে যদি কেউ নিজেকে নিজে হত্যা করে , তবে তাকে আমরা আত্মহত্যা বলে থাকি। মানুষ ছাড়াও অন্য প্রানী আত্মহত্যা করে। যেমনঃ-
লেমিং নামক প্রানীরা নিজ স্বজাতির মাঝে জনসংখ্যার বিস্ফোরণ রোধ করার জন্য আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।সাধারণত, দৌড়োতে থাকা পশুর পালে ঝাঁপ দিয়ে এবং সমুদ্র উপকূলীয় উঁচু পাহাড় থেকে ঝাপ দেয়ার মাধ্যমে তারা আত্মহননের কাজটি করে থাকে।
এছাড়াও পাখিরা মাঝে মাঝে তাদের দেহ থেকে ঠুকরে ঠুকরে পালক তুলে ফেলে, এমনকি মাঝে মাঝে যতটুকু সম্ভব পুরো দেহেরই পালক তুলে ফেলে। অতঃপর নিজের দেহের মাংসতে ঠোকর দেয়ার মত ভয়াবহ কাজও করে থাকে! বনমানুষ নিজেদের শরীরে নিজেরা কামড় দিয়ে থাকে। কুকুর এবং বিড়ালরা অত্যাধিক পরাজয়ের অনুশীলন করে থাকে। ধারনা করা হয়, এই কাজটি তাদের ধৈর্য্য শক্তি বাড়িয়ে তোলে এবং যে কোন পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে।
তাছাড়া জাতিংগা নামের একটি গ্রাম ভারতের আসাম রাজ্যের দিমা হাসাও জেলায় অবস্থিত। পাহাড়বেষ্টিত এই গ্রামটিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি ‘বার্ড সুইসাইড জোন’। সাধারণত বর্ষাকালকে বেছে নেয় তারা। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে, আগস্ট থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে পাখিদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়।
ভারতের বিশিষ্ট পাখি বিজ্ঞানী আনোয়ার উদ্দিন চৌধুরী ২০০০ সালে একটি গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ‘দ্য বার্ড’স অফ আসাম’ নামের এই বইতে তিনি যে রহস্য তুলে ধরেন তার সারমর্ম হলো বর্ষাকালের রাতে জাতিংগা গ্রামের চুম্বকীয় স্তরে বেশ পরিবর্তন ঘটতে দেখা যায়। এ সময় আকাশের পাখিদের পৃথিবী তার কেন্দ্রের দিকে প্রচণ্ড বেগে আকর্ষণ করতে থাকে। ফলে পাখিরা দিশেহারা হয়ে সেখানকার পাহাড়ে আছড়ে পড়ে গুরুতর আহত হয় এবং আঘাতের কারণে কিছুক্ষণ পর তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তবে এই চুম্বকীয় স্তরের পরিবর্তন কেন ঘটে তা আবিষ্কার করতে পারেননি তিনি। এখন সেসব নিয়ে অধিকতর গবেষণা চলছে।