আমরা জানি, একটা জীব কেমন হবে তা তার ডিএনএ নির্ধারণ করবে। ডিএনএর মধ্যে অবস্থিত জিনগুলোই মূলত জীবের শারীরিক এবং শারীরবৃত্তিক প্রক্রিয়া এবং আচরণগত সাড়া নিয়ন্ত্রণ করে। তার মানে, প্রত্যেকটা প্রাণী কোন উদ্দীপনার প্রতি কেমন ভাবে সাড়া দিবে বা কতক্ষণের জন্য সাড়া দিবে তার সবকিছুই সেই প্রাণীর ডিএনএর মধ্যকার তথ্য নির্ণয় করবে।
প্রত্যেক প্রাণীর ক্ষেত্রে কিছু আচরণ সহজাত এবং কিছু আচরণ অর্জিত। সহজাত আচরণগুলো জিনগত এবং বংশানুক্রমে এগুলো একই প্রজাতিভুক্ত প্রাণীর মধ্যে সঞ্চারিত হতে পারে কিন্তু অর্জিত আচরণগুলো পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং এই আচরণগুলো বংশানুক্রমে সঞ্চারন করা সম্ভব হয় না। একটা সহজ উদাহরণ দেই। ধরো তুমি একটা অন্ধকার রুমে ঢুকে লাইটটা জ্বালালে আর সাথে সাথে দেখলে একটা তেলাপোকা রুমের কোণায় থাকা একটা আলমারির নিচে লুকিয়ে গেলো। তেলাপোকা সম্প্রদায় অন্ধকারে থাকতে পছন্দ করে আর তাই আলো দেখলেই সে অন্ধকার কোনো একটা জায়গায় লুকাতে পারলে বাঁচে। এটা তেলাপোকার সহজাত আচরণ এবং এই তেলাপোকার পরবর্তি যত বংশধর হবে সকলেই অন্ধকার কোনো স্থানে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। আবার, খেয়াল করে দেখবে তোমার পোষা কুকুরটা যেভাবে তোমার কথা বুঝতে পারে, রাস্তার সাধারণ কুকুরগুলো কিন্তু সেটা পারেনা। এই ধরনের আচরণগুলো অর্জিত এবং ভবিষ্যতে তোমার কুকুরের যত বংশধর হবে তারা কিন্তু জন্মগত ভাবে মানুষের কথা বুঝতে পারার ক্ষমতা নিয়ে জন্মাবে না, তারা তাদের আশেপাশের পরিবেশ থেকে এই আচরণ করার ক্ষমতা অর্জন করবে।
তাহলে বলা যায় একটা প্রাণীর মধ্যে যত ধরনের আচরণ প্রকাশ পায়, সেগুলো সহজাত এবং অর্জিত আচরণের মিশ্রণ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে কখন কোন ধরনের আচরণ প্রকাশ পাবে তা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে ডিএনএ অনেক বড় একটি ভূমিকা পালন করে।