সি হর্স Actinopterygii পরিবারের মেরুদণ্ডী প্রাণী। একে হিপোক্যাম্পাস ও বলা হয়। সি হর্সের মুখ ও গলা দেখতে অনেকটা ঘোড়ার মতো। বাঁকানো লেজ দিয়ে এরা যেকোনো কিছু আঁকড়ে ধরতে পারে। মাছ হওয়া সত্ত্বেও সি হর্সের দেহে কোনো আঁশ নেই। বরং এদের দেহ চামড়া ও হাড় দিয়ে আবৃত থাকে। এরা গিরগিটির মতো রঙ পরিবর্তন করতে পারে। সি হর্স কেবলমাত্র একটি সঙ্গী নিয়েই জীবন কাটায় যাকে বলে monogamy।
প্রজনন ঋতুতে পুরুষ সি হর্স নাচ দেখিয়ে, রঙ পরিবর্তন করে সঙ্গীকে আকর্ষণ করে। পুরুষ ও স্ত্রী সি হর্সকে এই সময় একে অপরের লেজ আঁকড়ে ধরে চলতে দেখা যায়। মিলনের পূর্বে এরা প্রায় আট ঘন্টা একে অপরের সাথে নাচে, একে বলে true courtship dance বা predawn dance। নাচের সময় পুরুষ সি হর্স গর্ভধারণের জন্য সমুদ্রের পানি দিয়ে abdominal pouch বা পেটের থলি পরিষ্কার করে নেয়। এদের পেটের থলি বিশেষ ত্বক দিয়ে গঠিত।
মিলনের সময় পুরুষ সি হর্সের পেটের থলির উপরের ছিদ্রে স্ত্রী সি হর্স অভিপজিটর এর সাহায্যে হলুদ ডিম্বাণু নিঃসরণ করে। পুরুষ সি হর্সের পেটের থলিতে থাকে সমুদ্রের পানি, এই পানিতে পুরুষ সি হর্স শুক্রাণু নিঃসরণ করে। তারপর শুক্রাণু ও ডিম্বাণু মিলিত হয়ে তৈরি হয় ভ্রুণ। গর্ভকালে পুরুষ সি হর্সের পেট ফুলে যায় এবং এই সময় তারা বেশি খাবার ও অক্সিজেন গ্রহণ করে। এদের গর্ভকালীন সময় প্রায় ২৪ দিন হয়।
পুরুষ সি হর্সের গর্ভধারণে প্রায় ৩০০০ ভিন্ন ভিন্ন জিন জড়িত। সি হর্স গর্ভের শিশুকে ইনফেকশন এর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল অণু নিঃসরণ করে। একটি পুরুষ সি হর্স একবারে ৫ টি থেকে ১০০০ টি বাচ্চা দিতে পারে। সদ্যজাত সি হর্সকে যাতে কোনো প্রাণী খেয়ে না ফেলে তাই তারা রাতে বাচ্চা দেয়। এদের মধ্যে থেকে কম সংখ্যক শিশুই পূর্ণবয়স্ক হতে পারে, বাকিরা জলজ প্রাণীদের শিকারে পরিণত হয়।
ক্রেডিট: নিশাত তাসনিম (সাইন্স বী)