পৃথিবী পৃষ্ঠের ওপর যেমন নানারূপ ভূমিরূপ দেখা যায়, ঠিক তেমনি বিশাল সমুদ্র গর্ভের নিচেও নানা রূপ ভূমিরূপ সৃষ্টি হতে দেখা যায়। যেমন - মহীসোপান, মহীঢাল, সমুদ্র সমভূমি, শৈল শিরা, খাত প্রভৃতি। এখানে মহীসোপান ও মহীঢালের পার্থক্য সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
মহীসোপান ও মহীঢালের পার্থক্য গুলি হল
সংজ্ঞা গত পার্থক্য
মহাদেশের শেষ ভাগ গুলি ধীরে ধীরে ঢালু হয়ে সমুদ্রে নেমে গেছে । তট রেখা থেকে সমুদ্রের দিকে 200 মিটার বিস্তৃত মৃদু ঢালু অঞ্চল টির নাম মহীসোপান।
মহীসোপানের শেষভাগ থেকে ভূভাগ হঠাৎ খাড়াভাবে নিচে নেমে গভীর সমুদ্রগর্ভ পর্যন্ত বিস্তৃত ঢালু অংশকে মহীঢাল বলা হয়।
প্রকৃতি গত পার্থক্য
উপকূল বরাবর মহাদেশীয় প্রান্তভাগ সমুদ্রের জলে অবনমনের ফলে মহীসোপানের সৃষ্টি হয়।
মহীঢাল হল মহীসোপানের শেষ সীমানা থেকে গভীর সমুদ্র সমভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত খাড়া অংশ।
গভীরতা
মহীসোপানের গভীরতা 200 মিটার পর্যন্ত হয়
মহীঢালের গভীরতা 2000 মিটার থেকে 2500 মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
বিস্তৃতি
মহীসোপান অঞ্চল সমগ্র সমুদ্রতলের প্রায় 7.6 শতাংশ জায়গা জুড়ে বিস্তৃত।
মহীঢাল সমগ্র সমুদ্রতলের 15 শতাংশ জায়গা জুড়ে বিস্তৃত।
ভূমিঢাল
মহীসোপান অঞ্চলগুলি মৃদু ঢাল বিশিষ্ট হয় এবং ঢাল এর পরিমান 1 ডিগ্রির কম হয়।
মহীঢাল অঞ্চলগুলি খাড়া ঢাল বিশিষ্ট হয় এবং ঢালের পরিমাণ 2 ডিগ্রি থেকে 5 ডিগ্রি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
সামুদ্রিক সঞ্চয়
ভূমি ঢালের পরিমাণ খুব কম হয় বলে মহীসোপান এ বিভিন্ন জৈব অজৈব পদার্থের সঞ্চয়ের পরিমাণ অনেক বেশি।
ভূমিভাগ খাড়া ঢাল বিশিষ্ট হওয়ায় জৈব ও অজৈব পদার্থের সঞ্চয়ের পরিমাণ কম।
প্ল্যাংটনের বিদ্যমানতা
মহীসোপান অঞ্চলে প্ল্যাংটনের এর প্রাচুর্য থাকায় বাণিজ্যিক মৎস্য চারণক্ষেত্রের বিকাশ ঘটে।
মহীসোপান অঞ্চলে প্ল্যাংটনের অভাবে বাণিজ্যিক মৎস্য চারণক্ষেত্র গড়ে উঠতে পারে না।
বন্দর ও পোতাশ্রয়ের সৃষ্টি
মহীসোপান অঞ্চল বন্দর ও প্রোতাশ্রয় গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে।
মহীঢাল অঞ্চলে বন্দর ও পোতাশ্রয় গড়ে ওঠে না।
সম্পদ
মহীসোপান অঞ্চল থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল সংগৃহীত হয়।
মহীঢাল অঞ্চলের প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল পাওয়া যায় না।