আমাদের ব্রেইন এ ডোপামিন নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে- যা কিছু কিছু পরিস্থিতিতে আমাদের ভাল লাগার অনুভূতি জোগায়। মানুষ এবং মোবাইল এর সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একই রকম ঘটে।
যদি প্রশ্নটা এমন হয় যে “এত কিছু থাকতে” কেন মোবাইল আসক্তি ?- তবে বলে রাখা ভাল- এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বা টিনেজারদের ক্ষেত্রে। ষাটোর্ধ মানুষের এ প্রবণতা খুবই কম।
কিছু পরীক্ষায় উঠে এসেছে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম,ইউটিউব, মেসেজিং, ভিডিও গেমস এসব এ সবচেয়ে বেশি সময় কাটানো হয়।
অ্যাপ প্রোগ্রামাররা এখানে কিছু অনন্য ট্রিক্স অনুসরণ করে। যেমন: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এর লাইক-কমেন্ট আমরা অপ্রত্যাশিত প্যাটার্ন এ জানতে পারি (কোনো বাঁধাধরা নিয়ম এর বাইরে)। আবার, ভিডিও গেমস এর পরবর্তী লেভেল এ নতুন কিছু এক্সপ্লোর এর সম্ভাবনা থাকে। মানব মস্তিষ্ক সবসময়ই অপ্রত্যাশিত জিনিস এ কৌতূহলী থাকে। মূলত এ কৌতূহল মেটানোর জন্যই আমাদের ব্রেইন আমাদের সর্বদা তাড়না দিতে থাকে।
যদি প্রথম পর্যায়ে ফোন এর কোনো এপ্স এর কারণে আমাদের ভাল লাগার অনুভূতি তৈরি হয় ( বা, ডোপামিন নিঃসরণ হয়), তবে পরবর্তীতে ওই এপ্স ই বারবার ডোপামিন নিঃসরণকে স্টিমুলেট করে- যার কারণে বারবার আমরা ফোনেই ফিরে আসি।
এছাড়াও কিছু পরোক্ষ কারণ রয়েছে:
- আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি
- সামাজিকীকরণ এ অবহেলা বা একাকীত্ব
- ডিপ্রেশন বা দুশ্চিন্তা
- অলস সময় কাটানো।
মোবাইল আসক্তি থেকে চাইলেই কিন্তু খুব সহজে বের হয়ে আসা যায়:
- রিয়েল-লাইফ এ বন্ধুদের সাথে বেশি সময় কাটানো / পরিবারকে যথেষ্ট সময় দেয়া।
- বিভিন্ন দক্ষতা বৃদ্ধির উপর বিশেষ জোর দেয়া। ( যেমন: নতুন ভাষা শেখা, গল্পের বই বিশ্লেষণ করা, টেকনোলজি সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি করা। )
- সামাজিক কাজকর্ম এ নিজেকে যুক্ত করা।
- খেলাধুলা করা ইত্যাদি ।
মানুষ এর ইচ্ছাশক্তির কাছে যেকোনো খারাপ আসক্তি হার মেনে যায় । ডোপামিন যদি মোবাইল এর জন্য নিঃসরণ না হয়ে, যেকোনো প্রোডাক্টিভ কাজে আমাদের আনন্দ দিয়ে ফেলতে পারে- তবে আমরা সহজেই এ আসক্তি থেকে বের হয়ে আসতে পারব।