মাছ পানি ছাড়া কেন বাঁচতে পারে না? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+4 টি ভোট
1,710 বার দেখা হয়েছে
"প্রাণিবিদ্যা" বিভাগে করেছেন (160 পয়েন্ট)

3 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)

মানুষ সহ প্রায় সকল স্থলচর প্রাণীরা পানিতে ডুবে গেলে সল্প সময়ের ভেতর মারা যায়। অন্যদিকে পানিতে বসবাসকারী জীব অর্থাৎ জলজ প্রাণীসমূহ (বিশেষত মাছ) পানি ছেড়ে ডাঙায় উঠ‍ালেই মারা যায়। কিন্তু এর কারণ কি? মাছেরাও তো অক্সিজেন নেয়। তাহলে অক্সিজেন পেলেও পানি ছাড়া মাছ মারা যায় কেনো ? চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক…

পানি ছাড়া মাছ মারা যাবার কারণ মূলত দুটি :
শ্বসন
পানির চাপ

শ্বসন বা শ্বাস প্রক্রিয়া :

মাছ সহ জলজপ্রাণী সমূহ পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন ব্যবহার করে শ্বাসকার্য চালায় ও বেঁচে থাকে। কিন্তু পানির চেয়ে তো বায়ুতে অক্সিজেনের ঘনত্ব বা পরিমাণ বেশি তাহলে মরার কারণ কি?

কারণ হলো মাছের শ্বাসযন্ত্র। মাছ ফুলকার সাহায্যে শ্বাস নেয়। মাছ পানিতে চলার সময়ে মুখ হা করে থাকে যা দিয়ে পানি প্রবেশ করে এবং ফুলকার ছিদ্র (কানকো) দিয়ে বেরিয়ে যায়। এই পানি যখন ভেতরে ঢুকে, তখন ফুলকার কাছে থাকে অক্সিজেন, যা কিনা ফুলকার সংস্পর্শে এলে ফুলকায় থাকা বায়ু সংগ্রাহক মেকানিজম এর মাধ্যমে মাছের দেহে চলে যায়। মেকানিজমটা হলো এই, পানিতে ফুলকার অংশগুলো চারপাশ থেকে উন্মুক্ত থাকে ও সবদিক থেকে অক্সিজেন নিতে পারে। তো মাছ যদি ডাঙায় তুলে আনা হয়, তখন ফুলকার এই মেকানিজম আর কাজ করেনা। ফুলকা তখন বায়ু থেকে শুধু বায়ুতে উন্মুক্ত অংশ দিয়েই অক্সিজেন নিতে পারে ফলে মাছ শ্বাসকষ্টে মারা যায়।

একইভাবে মানুষ সহ প্রাণী ডুবে গেলে মানুষের নাক মুখ দিয়ে পানি ঢুকে যায়, যেগুলো ফুসফুসে চলে যায়। কিন্তু আমাদের ফুসফুস পানি থেকে অক্সিজেন আলাদা করার জন্য তৈরি নয়, যার কারণে মানুষ শ্বাস নিতে পারেনা এবং পরিশেষে দম আটকে মারা যায়…

পানির চাপ :

আমরা জানি, সেসব পদার্থের ভর আছে, তারা অভিকর্ষ বলের প্রভাবে চাপ প্রয়োগ করে। পানি বাতাসের তুলনায় প্রায় ৬০০ গুন বেশি ঘন। পানির প্রতি ৩৩ ফুট গভীরতায় পানির চাপ এক এটম বায়ুর চাপের আকারে বাড়ে। অর্থাৎ আমাদের মাথার উপরে থাকা এই ৪০০ কিলোমিটার বায়ু মন্ডল একক ক্ষেত্রফলের (যেমন‍ঃ এক বর্গ মিটার বা এক বর্গ ইঞ্চি) উপরে যে চাপ প্রয়োগ করে সেই চাপ ৩৩ ফুট বা ১০.০৫৮৪ মিটার পানির নিচের সম ক্ষেত্রফলের উপরে পানির চাপের সমান। ৬৬ ফুট নিচে পানির চাপ বায়ুমন্ডলের চাপের দ্বিগুন হয়ে যাবে। এভাবে প্রতি ৩৩ ফুট অন্তর এই চাপ ১ এটম হারে বাড়তেই থাকবে।

আমরা জানি যে, চাপ যত বাড়ে বস্তু ততই সংকুচিত হয়। সেক্ষেত্রে মাছ পানির নিচে বা গভীরে থাকে বিধায় তাদের দেহের ব্লাড প্রেসার, ফুসফুসের বায়ু থলীর প্রেসার সব কিছু বেশি থাকে। যখন মাছকে উপরে উঠানো হয় বা ডাঙায় আনা হয়, তখন বাইরের চাপ কমতে থাকে ফলে মাছের দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সমূহ যেগুলো বেশি চাপে ছিলো, ওগুলো দেহ থেকে বায়ু ছেড়ে বাইরের চাপের সাথে সমতা আনার চেষ্টা করে। এই কারণে মাছের দেহ ফুলে যায়, অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, চোখ কোটর থেকে বেরিয়েও আসতে পারে। চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে মাছ মারা যায়…

একই কারণে পানিতে ডুবে মরা মানুষেরও চোখ বড় হয়ে যায়, দেহ ফুলে যায় ও জিভ বেরিয়ে আসে। যদিও এর সাথে ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকাও রয়েছে !

মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায় কেনো?

অন্যদিকে মানুষ যখন পানিতে ডুবে যায়, তখন দেহ পানির চাইতে কম ঘনত্বের হওয়ায় দেহ প্রাথমিকভাবে ভাসতে থাকে। তবে যখন নাক মুখ দিয়ে দেহে পানি ঢুকতে থাকে তখন দেহের ঘনত্ব পানির চেয়ে বেড়ে যায় ফলে মানুষ পানিতে ডুবে যায়। ডুবতে থাকা অবস্থায় মানুষ বা প্রাণীর দেহ যত গভীরে যেতে থাকে, ততই দেহের উপরে পানির চাপ বাড়তে থাকে। ফলে এই চাপের কারণে দেহ থেকে বাতাস বের হয়ে যেতে থাকে, সংকুচিত হতে থাকে ও ঘনত্ব আরো বেড়ে যায়। ফলে আরো গভীরে দেহ ডুবে যেতে থাকে। একসময় মানুষের মৃত্যু ঘটে…

ডুবুরিরা যখন ডুব দেয়, তখন অক্সিজেন ছাড়াও প্রায় ৭৫% নাইট্রোজেন ব্যবহার করে। তারা গভীরে ডুব দেয়ার পর দেহের বায়ুর চাপ পানির সাথে সমতা রাখার জন্য এই নাইট্রোজেন ব্যবহার করে। এরপর পানির উপরে ফেরত আসার সময়ে তারা ধীরে ধীরে আসে ও ঘন ঘন শ্বাস নেয়, যাতে উপরের লো প্রেসারের কারণে দেহের রক্ত থেকে আস্তে আস্তে বায়ু বের হয়ে বাইরের চাপের সাথে সমতা রাখতে পারে। এখন এটা না করে তারা যদি একদম এক নাগাড়ে উপরে চলে আসে, তখন দেহে দ্রবীভূত অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন বাইরের চাপের সাথে সমতা রক্ষার জন্য দ্রুত রক্ত ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে যেয়ে বুদবুদের সৃষ্টি করবে। কোকের বোতলের ছিপি খুললে যে রকম বুদবুদ দেখা যায়, ঠিক ওই রকম অবস্থার তৈরি হবে তখন। এর ফলে দেহে প্রচণ্ড যন্ত্রণা এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। এজন্য ধীরে ধীরে উপরে উঠেন ডুবুরিরা…

এবং এই একই কারণে মহাকাশে প্রেস‍ারাইজড স্পেসস্যুট ইউজ করতে হয়। নয়ত বায়ু শূন্য মহাকাশে বা বায়ুশূন্য কোনো গ্রহ বা উপগ্রহে যাদের বায়ুর চাপ পৃথিবীর চেয়ে কম, সেখানে খালি গায়ে গেলে মানুষের দেহ ফেটে যাবে, রক্ত ফুটতে শুরু করবে…

তথ্যসূত্র : ছারপোকা ওয়েবসাইট

0 টি ভোট
করেছেন (5,380 পয়েন্ট)
মাছ একটি জলজ প্রাণী। তাই পানি ছাড়া বাঁচতে পারে না
0 টি ভোট
করেছেন (5,380 পয়েন্ট)
মাছ একটি জলজ প্রাণী। তাই পানি ছাড়া বাঁচতে পারে না।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+19 টি ভোট
5 টি উত্তর 782 বার দেখা হয়েছে
+8 টি ভোট
1 উত্তর 1,792 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
1 উত্তর 415 বার দেখা হয়েছে

10,776 টি প্রশ্ন

18,469 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

272,647 জন সদস্য

65 জন অনলাইনে রয়েছে
6 জন সদস্য এবং 59 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Shariar Rafi

    420 পয়েন্ট

  2. Tazriyan

    190 পয়েন্ট

  3. Shourov Viperr

    110 পয়েন্ট

  4. Khandoker Farhan

    110 পয়েন্ট

  5. Eyasin

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...