পৃথিবীর ওপর এক বিশাল গ্রহাণুর আঘাতের কারণে ডাইনোসর বিলুপ্তি হয়েছিলো।
গবেষকরা মনে করেন পৃথিবীতে এক বিরাট আকারের গ্রহাণুর আঘাতে যে বিস্ফোরণ ও পরিবেশগত পরিবর্তন হয়েছিল সেটাই ডাইনোসরদের নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবার কারণ।বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেই গ্রহাণুটি ছিল ১২ কিলোমিটার চওড়া। সেটা এসে পড়েছিল মেক্সিকো উপসাগর তীরবর্তী ইউকাটান উপদ্বীপ এলাকায়।সেই এলাকায় তৈরি হওয়া বিশাল জ্বালামুখের ভূপ্রকৃতি এবং শিলার গঠন তন্ন তন্ন করে পরীক্ষা করে দেখেছেন টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল এবং সেই গ্রহাণুর আঘাতের চিহ্ন তারা খুঁজে পেয়েছেন।গবেষকরা বলছেন, এত জোরে এটি পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়েছিল যে তাতে ২০০ কিলোমিটার চওড়া এবং কয়েক কিলোমিটার গভীর একটি গর্ত বা জ্বালামুখ তৈরি হয়েছিল। গর্তটির কিনারগুলো তার পর ভেতর দিকে ধসে পড়ে।এর ফলে সাগরে সৃষ্টি হয়েছিল এক ভয়াবহ সুনামি। তৈরি হয়েছিল দানবাকৃতির ঢেউ।
সমুদ্রের তলদেশের ওই জায়গাটির এক তৃতীয়াংশই ছিল জিপসামের তৈরি - যার অন্যতম উপাদান সালফার।বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেই সালফার হয়তো ওই গ্রহাণুর আঘাতজনিত বিস্ফোরণে সাগরের পানির সাথে মিশে গিয়েছিল এবং তা আকাশে ছড়িয়ে পড়েছিল।তার ফলে নাটকীয়ভাবে আবহাওয়া অত্যন্ত ঠান্ডা হয়ে যায়, এবং কোন প্রাণী বা গাছপালার বেঁচে থাকা দুরূহ হয়ে ওঠে।বিজ্ঞানীদের অন্যতম টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শন গুলিক বলছেন, একশ গিগাটন (এক গিগাটন মানে হলো ১০০ কোটি টন) সালফার বায়ুমন্ডলে মিশে যাবার ফলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চাইতে অন্তত ২৫ ডিগ্রি নিচে নেমে যায়।
তার মানে পৃথিবীর বেশির ভাগ এলাকার তাপমাত্রা তখন নেমে গিয়েছিল শূন্য ডিগ্রির নিচে।তিনি আরো বলছেন, রক্ষণশীল হিসেবে মনে করা হয় যে ওই ঘটনায় পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রায় ৩২৫ গিগাটন সালফার ছড়িয়ে গিয়েছিল।এত ঠান্ডা আবহাওয়ায় স্তন্যপায়ী প্রাণীরা বেঁচে থাকতে পেরেছিল, কিন্তু ডাইনোসররা বাঁচতে পারে নি।