বাঁশ আমাদের অত্যন্ত পরিচিত একটি উদ্ভিদ। বিভিন্ন কাজেই আমরা বাঁশ ব্যবহার করি। পান্ডাসহ অনেক জীবের প্রধান খাদ্য বাঁশ। আবার, বাঁশ একটি ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। গরু,ছাগল, হরিণসহ অনেক স্তন্যপায়ীরই প্রধান খাদ্য ঘাস। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তারা সবাই বাঁশ বা ঘাস খেতে পারলেও মানুষ কেনো পারে না?
উত্তর লুকিয়ে আছে বাঁশ এবং ঘাসজাতীয় উদ্ভিদের গঠন ও মানুষের অন্ত্রের ভিতর।
কচি বাঁশ বা বাঁশের অঙ্কুর চীন এবং এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার। কিন্তু পরিণত বাঁশ মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারে না। কারণ, বাঁশের কোষপ্রাচীরের প্রধান উপাদান সেলুলোজ, যা মানুষের অন্ত্রে পরিপাক হয় না। অর্থাৎ, বাঁশ খেয়ে আমরা হজম করতে পারবো না। এছাড়াও বাঁশে এমন কিছু ক্ষতিকর উপাদান থাকে যা অন্ত্রে সায়ানাইডের মতো বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করতে পারে। ফলে মানুষের অন্ত্রের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়।
একই কারণে মানুষ ঘাসও খেতে পারে না। ঘাসের প্রধান উপাদানও সেলুলোজ, যা হজম করার মতো এনজাইম মানব অন্ত্রে তৈরি হয় না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষ না পারলেও অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীরা কিভাবে বাঁশ বা ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ খেয়ে জীবনধারণ করে? তাদের অন্ত্রে এনজাইম উৎপন্ন হতে পারলে মানুষের অন্ত্রে হয় না কেনো?
উত্তর হচ্ছে, গরু, ছাগল, মহিষ এসব চতুষ্পদ স্তন্যপায়ীর অন্ত্রে কিছু মিথোজীবী ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা সেলুলোজ পরিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম 'সেলুলেজ' উৎপন্ন করে। ব্যাকটেরিয়া থেকে প্রাপ্ত এই এনজাইমের সহায়তায় এসব প্রাণী ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ হজম করে। মানব অন্ত্রে এই ব্যাকটেরিয়া অনুপস্থিত থাকায় মানুষ বাঁশ না ঘাস কোনোটাই হজম করতে পারে না।
Source: Quora
ক্রেডিট: মোঃ তৌফিক-ই-ইলাহী