ব্রণের ভিতরে কি থাকে তথা এর ভিতরে কি কি উপাদানের কারণে ব্রণ ফুলে উঠে তা কখনো ভেবেছেন কি?
হয়তো এটি অনেকেই ভেবে দেখেন না। যাদের ব্রণ উঠে তারা নিশ্চয়ই ব্রণের ভিতর সাদা জমাটবদ্ধ অংশ দেখতে পাবেন যা সাধারণ মানুষের কাছে পূঁয (Pus) হিসেবে পরিচিত। এই পূঁয হলো ব্যাকটেরিয়া, শ্বেত রক্তকণিকা, ত্বকের মৃতকোষ ও সিবামের একটি মিশ্রণ এবং এখানে প্রত্যেকটি উপাদান মিশ্রিত হয়ে পূঁয গঠিত হয়। মূলত এই চারটি মিশ্রণই ব্রণ উঠার জন্য যথেষ্ট।
আমরা জানি, মানবদেহের ত্বকে অসংখ্য ছিদ্র / ত্বকরন্ধ্র রয়েছে। প্রতিটি ছিদ্র/রন্ধ্রের ভিতর ছোট ছোট থলে আকারের সিবাসিয়াস গ্রন্থি (Sebaceous Glands) থাকে। এই গ্রন্থিই একধরনের তৈলাক্ত পদার্থ ক্ষরণ করে যা সিবাম নামে পরিচিত। সিবাম চুলকে মসৃণ ও ওয়াটারপ্রুফ করতে সাহায্য করে৷ কিন্তু এটি যে শুধু আমাদের চুলের জন্যই ভালো এমনটি নয় বটে বরং এটি "Propionibacterium acnes" নামক ব্যাকটেরিয়ার শক্তির উৎস বটে। সাধারণত "Propionibacterium acnes" আমাদের ত্বকে শান্তিপূর্ণভাবে দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করে। কিন্তু মাঝে মাঝে এরা নিয়ন্ত্রাধীন হয়ে পড়ে ও ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে যেখান থেকে মূল সমস্যার সৃষ্টি।
যখন আমাদের সিবাসিয়াস গ্রন্থি আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠে তখন তারা অতিরিক্ত সিবাম উৎপন্ন করে এবং এই অতিরিক্ত সিবাম ত্বকের রন্ধ্রে জমে ছিদ্র বন্ধ করে ফেলে। এই সময়ে সেই রন্ধ্রে থাকা জমাটবদ্ধ সিবামে ব্যাকটেরিয়া বংশবিস্তার করতে শুরু করে।(সাইন্স বী) এতে করে এদের সংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। এই ঘটনাটি আমাদের মস্তিষ্কে সতর্কতার সংকেত দেয় যা পরবর্তীতে হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেই মুহূর্তে আমাদের দেহ থেকে শ্বেত রক্তকণিকা ঐ জমাটবদ্ধ সিবামের দিকে নির্গত হয় এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে। ফলস্বরূপ, সেই আক্রান্ত স্থানে প্রদাহ শুরু হয় এবং স্থানটি ফুলে যায়, লাল হয় ও ব্যথা অনুভূত হয়। এমনকি, আমরা প্রায়ই ব্রণ নখ দিয়ে খুঁটে ফেলি যা করা মোটেই অনুচিত। কারন আমাদের নখে, আঙুলে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া থাকে।
ব্যাকটেরিয়াগুলো আবার ত্বকের ছিদ্রের মাধ্যমে প্রবেশ করে। ফলে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পায় যার পরিনতি আরও খারাপ হতে পারে।
লিখেছেন: Samsun Nahar Priya | Team Science Bee