জরায়ুমুখ ক্যানসার এখনো আমাদের দেশের নারীদের ক্যানসারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। প্রতি পাঁচজন নারী-ক্যানসার রোগীর একজন জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত। সাধারণত ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সীরা এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তবে ৪০-৫০ বছর বয়সীরা বেশি আক্রান্ত হন। সমাজের নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার এবং শিক্ষা-দীক্ষায় অনগ্রসর নারীরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
সহজে এবং খুব কম খরচে আক্রান্ত হওয়ার আগে ও প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার রোগ শনাক্ত করা যায়। এতে ক্যানসার নিরাময় হওয়ার সুযোগ থাকে প্রায় শতভাগ। রোগের পর্যায় যত বাড়তে থাকে, রোগ নিরাময়ের সম্ভাবনা ততই কমতে থাকে। তবে জরায়ুমুখের ক্যানসার এমন একধরনের ক্যানসার, যা দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে শনাক্ত হলেও নিরাময় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ৬০ থেকে ৭৫ শতাংশ। এমনকি রোগ নিরাময়যোগ্য হলেও চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে উপসর্গমুক্ত স্বাভাবিক জীবনে আনা যায়। কিন্তু চিকিৎসা ঠিকমতো না হলে রোগাক্রান্ত জায়গায় আবার গজিয়ে উঠে। জরায়ুসংলগ্ন অঙ্গ যেমন মূত্রথলি, পায়ুপথ, নিচের পেটে রোগ বিস্তৃত হয়। পরে অন্যান্য অঙ্গে যেমন ফুসফুস, লিভার, হাড়, লিম্ফ নোডে ছড়িয়ে যায়।
এ রোগ খুব ধীরে ধীরে সৃষ্টি হয়। জরায়ুমুখ ক্যানসার হতে দুই যুগেরও বেশি সময় লেগে যায়। প্রথম পরিবর্তন আবরণী কোষ অস্বাভাবিক হয়ে ওঠা। এর নাম ডিসপ্লেসিয়া; ক্যানসার নয়। দীর্ঘদিন জরায়ুমুখের কোষ ডিসপ্লেসিয়া থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে, আবার ক্যানসারে রূপ নিতে পারে। ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ে অংশ নিলে খুব সহজেই ডিসপ্লেসিয়া অবস্থায়, ক্যানসার পূর্বাবস্থায় (ক্যানসার ইন সিটু) এ রোগ নির্ণয় করা যায়। রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে, এমনকি রোগ দ্বিতীয় পর্যায়ে এসে গেলেও তেমন কোনো উপসর্গ হয় না। তাই রোগ সম্পর্কে সচেতন না হলে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করা কঠিন।
আরো জানতে বিস্তারিত: https://cutt.ly/rlHGvfM
©prothomalo