মৃত ব্যক্তির আঙুলের ছাপ দিয়ে সচরাচর ফোন খোলা যায় না কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+4 টি ভোট
1,991 বার দেখা হয়েছে
"প্রযুক্তি" বিভাগে করেছেন (141,820 পয়েন্ট)

3 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (141,820 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

২০১৮ সালের মার্চ মাসে দু’জন গোয়েন্দা একজন মৃত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে মৃতদেহটি দেখতে চান। সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, তাঁরা মৃত ব্যক্তির ফোন খুলতে চেয়েছিলেন এবং এই জন্য তাঁদের ঐ মৃত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপের প্রয়োজন ছিল। গোয়েন্দারা মৃত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ নেয়ার অনুমতি পেলেও, ফোনটি খুলতে পারেননি।

লিনাস ফিলিপ নামের ঐ ব্যক্তি ফ্লোরিডার লার্গোতে একটি ডিপার্মেন্টাল স্টোরের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। টাম্পা বে টাইমসের সূত্রে জানা যায়, গোয়েন্দারা ফিলিপের মৃত্যুর তদন্তের পাশাপাশি আরেকটি পৃথক মাদক সংক্রান্ত মামলার জন্যে তথ্য সংগ্রহ করছিলেন।

ফোবর্সের রিপোর্ট অনুযায়ী গোয়েন্দারা যা করছিলেন তা আইনত বৈধ কিন্তু নৈতিক প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। এবং গোয়েন্দাদের এই ব্যর্থতার হাত ধরে একটি বিজ্ঞান বিষয়ক প্রশ্নের অবতারনা ঘটে: আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ফোনের লক খোলার জন্যে কি ফোন ব্যবহারকারীকে জীবিত থাকতে হবে?

এই বিষয়ে আঙ্গুলের ছাপ সনাক্তকরণের উপর দীর্ঘদিন ধরে গবেষণারত, মিশিগান স্টেইট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর অধ্যাপক (“হ্যান্ডবুক অফ ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিকগনিশন” বইয়ের অন্যতম লেখক) অনিল জৈন বলেন, মৃত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপের সাহায্যে ফোন খোলার সম্ভাবনা নির্ভর করে ঐ ব্যক্তি কতক্ষণ আগে মারা গেছেন তার উপর।

অনিল জৈন সংবাদ মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন, এর কারণ হল অধিকাংশ স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সনাক্তকরণটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালনের মাধ্যমে কাজ করে।

আমাদের সবার শরীরে কিছু পরিমান বিদ্যুত প্রবাহিত হয়। যখন আমরা একটি আঙ্গুলের ছাপ সনাক্তকরন যন্ত্রের উপরে আঙ্গুল রাখি, তখন আমাদের আঙ্গুলের ছাপের ধারগুলি যন্ত্রের উপরিতল স্পর্শ করলেও, এর খাঁজগুলি স্পর্শ করে না। ইলেকট্রিক চার্জ সঞ্চয়কারী ক্ষুদ্র ক্যাপাসিটারগুলো আঙ্গুল থেকে আসা ইলেকট্রিক চার্জ অনেক বেশি পরিমানে সংগ্রহ করতে পারে যদি ক্যাপাসিটরগুলো আঙ্গুলের ছাপের খাঁজ গুলির উপর না বসে ধারের উপর বসে। সেন্সরগুলো আঙ্গুলের ধারের এই নকশাগুলো ব্যবহার করে একটি বিশদ চিত্র গঠন করে। কিন্তু যখন একজন ব্যক্তি মারা যায়, তখন তার শরীরে বিদ্যুতের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং স্ক্যানারের সঙ্গে যোগাযোগের আর কোন সম্ভাবনা থাকে না।

বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত না যে একজন ব্যক্তির মৃত্যুর ঠিক কতক্ষণ পর এই বিদ্যুৎ পরিবাহিতা বন্ধ হয়ে যায়। অনিল জৈনের ভাষ্যমতে, এটা পরীক্ষা করে বের করার জন্যে আপনার “অনেক মৃতদেহের প্রয়োজন এবং আপনাকে প্রতি ঘন্টা অন্তর মৃত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ফোন খোলার চেষ্টা করে যেতে হবে … আপনাকে একটানা মর্গে অপেক্ষা করতে হবে”। তিনি আরো বলেন, “এটা বেশ কঠিন একটি পরীক্ষা।”

তবে আঙ্গুলের ছাপ সনাক্তকারী সব যন্ত্র বিদ্যুৎ পরিবহনের মাধ্যমে কাজ করে না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আঙ্গুলের ছাপ সনাক্তকারী পুরনো যন্ত্রগুলো অপটিক্যাল সেন্সর ব্যবহার করে, যা আঙ্গুলের ছাপের ধার ও খাঁজের মধ্যবর্তী আলোর তারতম্যের পার্থক্য নির্ণয় করে একটি বিশদ চিত্র ধারন করে। কিন্তু এই পদ্ধতিকে ছবির মাধ্যমে সহজে ধোঁকা দেয়া যায়। যেহেতু বিদ্যুতের প্রয়োজন নেই, তাই সহজে এই সিস্টেমকে হ্যাক করা যায়।

এবং আরেকটি বিষয় হল, প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। উদাহরণস্বরূপ, আইফোন এক্স এর আঙ্গুলের ছাপ সনাক্তকরণের জন্যে আলাদা কোন বোতাম নেই। বরং এটি আপনার মুখ সনাক্ত করে ফোন আনলক করে।

অনিল জৈন জানান, আগামী দিনের ফোনগুলোর পর্দার নিচে অপটিক্যাল সেন্সর থাকবে। যদিওবা বিদ্যুৎ পরিবহনের ব্যপারটি এখানে সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে না, মৃত ব্যক্তির আঙ্গুল দিয়ে এই ফোন খোলা যাবে কিনা সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। অন্যান্য নতুন প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে আলট্রাসনিক স্ক্যানার যা আঙ্গুলের মধ্যে আলট্রাসনিক তরঙ্গ প্রেরণ করে আঙ্গুলের ছাপের ধার ও খাঁজের মধ্যেকার উদ্ভূত চাপের পরিমাপ নির্ণয় করে। এই প্রযুক্তি কীভাবে মৃত ব্যক্তির আঙ্গুলের সঙ্গে যোগাযোগ করবে তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।

তদুপরি, অনিল জৈনের মতে, এই সেন্সরের সবগুলোই “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চামড়ার পরিবর্তন” এর বিষয়টি দ্বারা প্রভাবিত হবে। “যদি কোন রক্ত প্রবাহ না থাকে, তবে আঙ্গুলগুলি কুঁচকে যাবে বা শুকিয়ে যাবে।” এর ফলে আঙ্গুলের ছাপের ধার ও খাঁজসমূহ পুরনো সংকেত পরিবর্তন করে নতুন সংকেত তৈরি করবে। এবং এ কারনে, মৃত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ তার জীবিত অবস্থায় আঙ্গুলের ছাপের সঙ্গে কোনভাবেই মিলবে না।

অনিল জৈন আরো বলেন, বেশিরভাগ ফোনে এমন কিছু বাফার আছে যা আপনার মৃত্যুর পর আপনার আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে অন্য কারো পক্ষে ফোন আনলক করা আরও কঠিন করে তুলবে। বেশিরভাগ ফোনে আপনাকে এক বা দুই দিনের নিষ্ক্রিয়তার পরে একটি পাসকোড টাইপ করতে হবে, এবং আপনি কেবলমাত্র একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক বার চেষ্টা করতে পারবেন।

কিন্তু কেউ যদি এইসব বাধা অতিক্রম করতে পারে এবং ফোনের মালিক যদি সদ্যমৃত হয়ে থাকেন, তবে তার নিঃসাড় আঙ্গুলের সাহায্যে একটি ফোন আনলক করা সম্ভব হবে।

Live Science অবলম্বনে লিখেছেন পুলক বড়ুয়া

0 টি ভোট
করেছেন (12,550 পয়েন্ট)
মৃত ব্যক্তির বা কাটা হাতের আঙুলের ছাপ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে কাজ করবে না। তবে হ্যাঁ সদ্য মৃত বা মৃত্যুর কয়েক ঘন্টার মধ্যে হাতের ছাপ কাজ করতেও পারে। তবে বিজ্ঞানীরা এই সময়ের সীমার ব্যাপারে কোনো মতামত দেননি।

আমি যে বললাম যে কাজ করবে না এটি আপনি বিশ্বাস করবেন কেনো? তাহলে আপনি একটি পরীক্ষা করতে পারেন। কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর ১০/১২ ঘণ্টার পর তার ফোনের লক ফিংগারপ্রিন্ট দিয়ে খোলার চেষ্টা করবেনে। আমার কথার প্রমাণ পেয়ে যাবেন।

আঙ্গুলের ছাপ শণাক্তকরণের উপর দীর্ঘদিন ধরে গবেষণারত, মিশিগান স্টেইট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর অধ্যাপক হ্যান্ডবুক অফ ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিকগনিশন বইয়ের অন্যতম লেখক অনিল জৈন বলেন, মৃত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপের সাহায্যে ফোন খোলার সম্ভাবনা নির্ভর করে ঐ ব্যক্তি কতক্ষণ আগে মারা গেছেন তার উপর।

অনিল জৈন সংবাদ মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন, এর কারণ হল অধিকাংশ স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে ফিঙ্গারপ্রিন্ট শনাক্তকরণটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালনের মাধ্যমে কাজ করে।

আমাদের সবার শরীরে কিছু পরিমান বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। যখন আমরা একটি আঙ্গুলের ছাপ শনাক্তকরণ যন্ত্রের উপরে আঙ্গুল রাখি, তখন আমাদের আঙ্গুলের ছাপের ধারগুলি যন্ত্রের উপরিতল স্পর্শ করলেও, এর খাঁজগুলি স্পর্শ করে না। ইলেকট্রিক চার্জ সঞ্চয়কারী ক্ষুদ্র ক্যাপাসিটারগুলো আঙ্গুল থেকে আসা ইলেকট্রিক চার্জ অনেক বেশি পরিমানে সংগ্রহ করতে পারে যদি ক্যাপাসিটরগুলো আঙ্গুলের ছাপের খাঁজ গুলির উপর না বসে ধারের উপর বসে। সেন্সরগুলো আঙ্গুলের ধারের এই নকশাগুলো ব্যবহার করে একটি বিশদ চিত্র গঠন করে। কিন্তু যখন একজন ব্যক্তি মারা যায়, তখন তার শরীরে বিদ্যুতের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং স্ক্যানারের সঙ্গে যোগাযোগের আর কোন সম্ভাবনা থাকে না।

বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত না যে একজন ব্যক্তির মৃত্যুর ঠিক কতক্ষণ পর এই বিদ্যুৎ পরিবাহিতা বন্ধ হয়ে যায়। অনিল জৈনের ভাষ্যমতে, এটা পরীক্ষা করে বের করার জন্যে আপনার অনেক মৃতদেহের প্রয়োজন এবং আপনাকে প্রতি ঘন্টা অন্তর মৃত ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ফোন খোলার চেষ্টা করে যেতে হবে,আপনাকে একটানা মর্গে অপেক্ষা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এটা বেশ কঠিন একটি পরীক্ষা।

তবে কাজ করবে কি করবে না সেটা নির্ভর করবে কি ধরনের পদ্ধতি ব্যাবহার করা হয়েছে।যদি সেটা ইলেকট্রন এর উপর নির্ভর করে হয় তাহলে মৃত্যুর অনেক পরে কাজ করবে না,যেমন মোবাইল ফোনের পিছনে দিকে যেসকল সেন্সর থাকে। কিন্তু যদি সেটা আলোক নির্ভর হয় তাহলে মৃত্যুর অনেক পরেও কাজ করবে যদি পচে না যায়,যেমন ফোনের ইন-ডিসপ্লে সেন্সর,সিম নিবন্ধনের অপটিক্যাল সেন্সর।
0 টি ভোট
করেছেন (28,740 পয়েন্ট)
মৃত ব্যক্তির বা কাটা হাতের আঙুলের ছাপ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে কাজ করবে না। ... অনিল জৈন সংবাদ মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেন, এর কারণ হল অধিকাংশ স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সনাক্তকরণটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালনের মাধ্যমে কাজ করে। আমাদের সবার শরীরে কিছু পরিমান বিদ্যুত প্রবাহিত হয়।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+10 টি ভোট
3 টি উত্তর 1,547 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
3 টি উত্তর 318 বার দেখা হয়েছে
+10 টি ভোট
4 টি উত্তর 4,536 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
5 টি উত্তর 3,769 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 647 বার দেখা হয়েছে

10,729 টি প্রশ্ন

18,374 টি উত্তর

4,730 টি মন্তব্য

242,683 জন সদস্য

75 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 75 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. akramul5556

    110 পয়েন্ট

  2. amir

    110 পয়েন্ট

  3. Winifred20S

    100 পয়েন্ট

  4. TaylorAnna75

    100 পয়েন্ট

  5. EpifaniaWhit

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য প্রাণী বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া গরম শীতকাল কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক শব্দ ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম হরমোন বিড়াল কান্না
...