গাজরের রং কিন্তু শুধু কমলাই নয়। বরং প্রথমে কমলা রঙের গাজরের কোনো অস্তিত্বই ছিল না। এখনও সাদা, হলুদ, বেগুনি বিভিন্ন বর্ণের গাজর দেখতে পাওয়া যায়। কমলা গাজরে বিটা ক্যারোটিন নামক রঞ্জক পদার্থের অতিরিক্ত উপস্থিতির এবং এন্থসায়ানিনের (anthocyanin) কম উপস্থিতির জন্য এর বর্ন কমলা হয়।
বেগুনি অথবা হলুদ গাজরের থেকে কমলা গাজরের উৎপত্তির কারণটা কিন্ত যতটা না বৈজ্ঞানিক, তার থেকে বেশি রাজনৈতিক। রোমানরা দক্ষিণ ফ্রান্সে Arausio নামে একটি শহর গড়ে তুলেছিল। এই Arausio শহরটিকে "Aurenja" নামে উচ্চারণ করা হত। খুব সম্ভবত, এর থেকে "orange" শব্দের উৎপত্তি। পরবর্তী কালে, William the Silent ১৫৪৪ সালে Nassau থেকে এসে শাসন ভার গ্রহণ করলে, তাঁকে William of Orange উপাধি দেওয়া হয়। তাঁর নেতৃত্বে ১৫০০ দশকের শেষ দিকে স্পেনীয়দের বিরুদ্ধে ডাচ শক্তি আত্মপ্রকাশ করে এবং স্বাধীন ডাচ প্রজাতন্ত্রের পত্তন ঘটে।
সেই সময় থেকে ডাচরা গাজর চাষের জন্য পরিচিত ছিল। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে হলুদ এবং বেগুনি গাজরের চাষ করা হত। ঘটনাচক্রে, সপ্তদশ শতকে হাইব্রিড ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে নতুন এক গাজরের স্ট্রেন উৎপন্ন হয় যার মধ্যে প্রচুর পরিমানে বিটা ক্যারোটিন ছিল এবং ফলত তা কমলা বর্ণের হয়। কিন্তু এই গাজরের উৎপত্তির সাথে সাথে William of Orange কে সম্মান প্রদানের উদ্দেশ্যে ডাচরা একে বিপুল পরিমাণে চাষ করতে থাকে এবং পৃথিবীর প্রত্যেক স্থানে এমন ভাবে ছড়িয়ে দিতে থাকে যাতে অন্য গাজরের স্ট্রেনগুলির অবলুপ্তি ঘটে। আর তারপর তো বাকিটা ইতিহাস।
বেগুনের ক্ষেত্রে anthocyanin এর উপস্থিতি, আরও সঠিক ভাবে বলতে গেলে nasunin নামক রঞ্জক পদার্থ এর বেগুনি বর্ণের কারণ। এমনকি, বেগুন কাটলে কিছুক্ষণ পরে তা খয়েরি বর্ন ধারণ করতে শুরু করে, তার কারণও এই রঞ্জক পদার্থটি।
Srimoyi