আমরা দেখি বৃষ্টির ফোটারা হয় গোলাকার। কোন সমতল পৃষ্ঠে বিচ্ছিন্নভাবে জমে থাকে ফোটা ফোটা পানির আকৃতি হয় গোলাকার। সহজভাবে এটাকে ‘যে কোনো কিছু সবচেয়ে কম ক্ষেত্রফল রচনা করে থাকতে চায়’ বলে ব্যাখ্যা করা হয়। যেহেতু কোন তরলকে গোলাকার পাত্রে রাখলে সবচেয়ে কম জায়গা দখল করবে। কিন্তু এটুকু কোন কৌতূহলী মনকে শান্ত করে না। প্রশ্ন আসে তরল পদার্থ কম ক্ষেত্রফল রচনা করতে চায় কেন? (মনে হচ্ছে তরলের বুদ্ধি আছে তাই সে বুদ্ধি করে কম জায়গা কিনতে চায়!!)
এর মৌলিক কারণ হচ্ছে তরলের (আমাদের আলোচনায় পানির) পৃষ্ঠটান (Surface tension)। পৃষ্ঠ টান হলো কোন তরল পদার্থের অণুসমূহের পারস্পরিক আকর্ষণী বলের কারণে (এটা দুটো বস্তুর মহাকর্ষী বল অবশ্যই নয়, বরং সবল নিউক্লিয় বল) সংকুচিত হবার প্রবণতা। আর যে বলের কারণে এই আকর্ষণের উদ্ভব ঘটে তাকে পদার্থবিদ্যার ভাষায় সংসক্তি বল (Cohesive force/Cohesive attraction/Cohesion) বলে। অর্থ্যাৎ সংসক্তি বল হলো পারস্পরিক আকর্ষণের কারণে অণূসমূহের কাছাকাছি লেগে থাকার ধর্ম। পানি সংসক্তির বলের ধর্ম খুব তীব্রভাবে মেনে চলে, কারণ পানির প্রতিটি অণূ অন্য অণুগুলোর সাথে চারটি হাইড্রোজেন বন্ধন গঠন করে।
বিপুল পরিমাণ পানিতে প্রতিটি অণু চারপাশের অন্য অনুগুলো দ্বারা সমানভাবে টানের মুখোমুখি হয়। এতে ভেতরের দিকে নেট বল শূন্য হয়। কিন্তু পৃষ্ঠে অবস্থিত অণুগুলোর ক্ষেত্রে সব দিকে অণু নেই (উপরের দিকে নেই) । ফলে, এরা শুধুই ভেতরের দিকে টান অনুভব করে।ফলে, আকৃতি বাধ্য হয়ে গোলাকাকার হয়।
বৃষ্টির ফোটার ক্ষেত্রে যেহেতু সব তলই বাইরের দিকে টানহীন তাই ভেতরের অণুর আকর্ষণে তারা গোলাকার হয়। অবশ্য অভিকর্ষ তাদেরকে নিঁখুত গোলক হতে বাধা দেয়।
অভিকর্ষসহ অন্যান্য বলের অনুপস্থিতিতে সব তরলের ফোটাই গোলাকাকার হবে।
Source: Quora