নাকে ঘ্রাণ না পাওয়াকে বলা হয় Anosmia।আমরা নাকে ঘ্রাণ বা গন্ধ পাই অলফেক্টরি নামক একটি নার্ভের মাধ্যমে। এটি আমাদের নাকের উপরি অংশে ছড়ানো রয়েছে। যা সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত। কোনও কারণে এই নার্ভটি অকার্যকর হয়ে গেলে আমরা ঘ্রাণ বা গন্ধ পাই না। আর ঘ্রাণ না পেলে আমাদের জিহ্বার টেস্ট বাড যা স্বাদ পেতে সাহায্য করে, তা-ও অকার্যকর হয়ে যায়। ফলে একই সাথে নাকে ঘ্রাণ না পেলে মুখে স্বাদও পাই না।
নাকের দুই দিকেই স্নায়ুতন্ত্র সমানভাবে থাকে, যাকে বলে গন্ধ গ্রহণের চিহ্নিত এলাকা। এই স্নায়ুতন্ত্র বা নার্ভ সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত। কোনো কারণে এই নার্ভটি অকার্যকর হয়ে গেলে আমরা ঘ্রাণ বা গন্ধ পাই না। আর ঘ্রাণ না পেলে আমাদের জিহ্বার টেস্ট বাড যা স্বাদ পেতে সাহায্য করে, তাও অকার্যকর হয়ে যায়। ফলে একই সাথে নাকে ঘ্রাণ না পেলে মুখে স্বাদও পাই না। তাই বলা হয় ঘ্রাণশক্তি এবং স্বাদ একে অন্যের পরিপূরক।
নাকের ঘ্রাণ শক্তি কমে যাওয়ার কারণ গুলো :
১. নাকের লোকাল/নিজস্ব কারণ:
* সাধারণ ঠান্ডা থেকে সর্দির কারণে নাক বন্ধ হয়ে থাকা
* অ্যালার্জিজনিত নাকের হাঁচি সমস্যা,
* সাইনুসাইটিস, * নাকের হাড় বাঁকা, * নাকের পলিপ,
* নাকের বিভিন্ন ধরণের টিউমার,
*এট্রফিক রাইনাইটিস (যেটাতে রোগী নিজে ঘ্রান পাবেনা, কিন্তু পাশের লোকজন গন্ধ পাবে)।
২. মস্তিষ্কের সমস্যা:
*বার্ধক্য জনিত, *পারকিনসন ডিজিজ, * ব্রেইন টিউমার, * আলঝেইমার ডিজিজ, * মস্তিষ্কের অপারেশন, * মাথায় আঘাত পাওয়া।
৩. অন্যান্য কারণ:
* অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস,
* রেডিও থেরাপি, * জন্মগত সমস্যা, * মানসিক রোগ।
৪.কারো কারো ক্ষেত্রে কিছু ওষধ:
যেমন- হৃদরোগীদের জিটিএন, ক্যাপট্রোপিল ইত্যাদি ড্রাগ এর কারণে। এছাড়াও জীবাণুনাশক ওষুষের সংস্পর্শে আসলে। একটানা দীর্ঘদিন ধরে নাকের ড্রপ (এন্টাজল/রাইনোজল/আফরিন) চিকিৎসক এর পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করলে।
বুকে ব্যাথা হওয়ার কারণঃ
বুকে ব্যথা হওয়া খুব দুর্লভ কোনো সমস্যা নয়। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর কারণ হিসেবে আক্রান্ত ব্যক্তি সন্দেহ করেন পেটে গ্যাস হওয়াকে। ব্যথা নিয়মিত হতে থাকলে আতঙ্ক দেখা দেয় হৃদরোগের ভয়ে। তবে পেটে গ্যাস হওয়া কিংবা হৃদরোগের সমস্যা ছাড়াও আরও বিভিন্ন কারণে বুকে ব্যথা অনুভুত হতে পারে।
ঋতুস্রাবের আগে কিংবা ভারী কিছু ওঠানোর কারণেও বুকে ব্যথা হতে পারে। আবার প্রচণ্ড ভয় কিংবা মানসিক অস্বস্তি থেকেও এই ব্যথা দেখা দিতে পারে। কীভাবে বুঝবেন আপনার ব্যথার ভাষা?
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল ব্যথার অন্তর্নিহিত কারণ বোঝার সহজ কিছু উপায়।
অতিরিক্ত আতঙ্কিত হলে: প্রচণ্ড ভয় পাওয়ার পর বুকের ব্যথায় আক্রান্ত হওয়ার কারণটা নিঃসন্দেহে মানসিক। প্রচণ্ড মানসিক অস্বস্তির ক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য। দুটোর কারণেই বুকে ব্যথার অনুভুতি দেখা দেয়। চিকিৎসকদের মতে, একজন রোগী প্রচণ্ড বুকে ব্যথা নিয়ে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের শরাণাপন্ন হলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে তার বুকে ব্যথার পেছনের হৃদযন্ত্রের কোনো ভূমিকা নেই।
মাথা ঘোরানো ও ঘাম হওয়া: মানসিক কারণ থেকে হওয়া বুক ব্যথার উপসর্গগুলো আতঙ্কের উপসর্গের সঙ্গে মিলে যায়। যেমন- বুক ব্যথার সঙ্গে রোগীর প্রচণ্ড ঘাম হবে, শরীরে কাঁপুনি দেখা দেবে, দম আটকে যাওয়ার যোগাড় হবে। আর দেখা দিতে পারে পেটের গোলমাল, বমিভাব, বোধশূন্যতা, শারীরিক ভারসাম্য হারানো ইত্যাদি।
স্থায়ী হয় কম: আশার কথা হল এধরনের বুক ব্যথা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না, সর্বোচ্চ ১০ মিনিট। ব্যথা যেমন আকস্মিকভাবে আছে তেমনি আকস্মিকভাবেই মিলিয়ে যায়। অপরদিকে ‘হার্ট অ্যাটাক’য়ের কারণে হওয়া বুক ব্যথার তীব্রতা ধীরে শুরু হয় এবং ক্রমেই বাড়তে থাকে।
মানসিক কারণে বুক ব্যথা বুকেই অনুভূত হয়: আরেকটি তফাৎ হল আতঙ্ক বা মানসিক চাপ থেকে হওয়া ব্যথা বুকে শুরু হয় এবং তা যতক্ষণ স্থায়ী হয় ততক্ষণ একই স্থানে অনুভুত হয়। তবে হৃদরোগজনীত ব্যথা শুরু হয় বুকে এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে, যেমন- চোয়াল, কাঁধ, হাত ইত্যাদি।
বুকের অন্যান্য জায়গায় ব্যথা: হৃদযন্ত্র থাকে শরীরের বাম পাশে। তাই হৃদরোগের উপসর্গ হিসেবে দেখা দেওয়া ব্যথা বাম পাশেই অনুভুত হয়। কালেভদ্রে বুকের মাঝখানেও ব্যথা হতে দেখা গেছে। তবে বুকের অন্য যেকোনো অংশে ব্যথা হলে তার নেপথ্যের কারণটা মানসিক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
আসল কথা হল
আতঙ্ক কিংবা মানসিক অস্বস্তি থেকে বুকে ব্যথা হওয়া অত্যন্ত সাধারণ ঘটনা। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কারণ নেই। তবে রোগী অনেকসময় ব্যথার কারণ বুঝতে না পেরে আরও আতঙ্কিত হয়ে যায়। তাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে ব্যথা যেখানেই হোক না কেনো তা যদি তীব্র হয় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। দুই ধরনের সমস্যাই চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময়যোগ্য।