শীতকালে শুধু ঠোঁট না, শরীরেও কাপুনি উঠে।
এক্ষেত্রে প্রথমত আপনার ত্বকে থাকা স্নায়ু ঠান্ডাটা বুঝতে পারে যা মস্তিষ্ককে সংকেত দেয়। মস্তিষ্কের যেই কোষ এবং অংশগুলো সেই সংকেতটা গ্রহণ করে তা হলো, Lateral Parabrachial Nucleus এবং সেখান থেকে যথাক্রমে Hypothalamus এর Preoptic Area তে প্রেরণ করে। Hypothalamus ই দেহের এই কম্পনটা নির্ধারণ করে। এছাড়াও মস্তিষ্কের এই অংশ আপনার অজান্তেই আপনার জন্য দেহের প্রয়োজনীয় নানা ধরনের কাজ করে থাকে, যেমন: হৃদস্পন্দন, ঘুমের চক্র, শ্বাস গ্রহণ। যদিও এই জিনিসগুলো ইদুরের উপর পরীক্ষা করে জানা গেছে তবে এক্ষেত্রে কিছুটা নিশ্চিত যে ইদুর এবং মানুষের কোনোকিছু অনুভব করার প্রক্রিয়াটা প্রায় একই। তাই বলা যায় যে বার্তাটা মানব মস্তিষ্কের একই অংশে প্রেরিত হয়। যাক, যখন আপনার মস্তিষ্ক ঠান্ডা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারবে তখন সে আবার দেহে বার্তা পাঠায় দেহের হাত, পায়ের শিরা/ধমনীগুলোকে সংকুচিত হতে থাকে যাকে Vasoconstriction বলা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য দেহের ত্বক থেকে রক্তপ্রবাহ মধ্যের দিকে, অর্থাৎ যেখানে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো থাকে, সেদিকে ধাবিত করা এবং যতটুকু সম্ভব তাপ সঞ্চয় করে রাখা। কারণ, আপনার মস্তিষ্ক অনুযায়ী আপনি একটা হাত কিংবা পা ছাড়া বেঁচে থাকতে পারবেন, কিন্তু লিভার, কিডনি, ফুসফুস কিংবা হৃদপিণ্ড ছাড়া পারবেন না। মূলত রক্তচলাচল ত্বকের দিকে বেশি না থাকার কারণেই শীতের দিনে ত্বক কিছুটা শুষ্ক হয়ে যায়।
একই সময়ে আপনার লোমকূপের সাথে সংযুক্ত ছোটো ছোটো পেশীগুলো সংকুচিত হয়ে যায় ফলে স্বাভাবিকভাবে একটু বাঁকা হয়ে নুয়ে থাকা লোমকূপগুলো সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। ফলস্বরূপ, ত্বক হয়ে যায় পালক ছিলা পাখির মত। যাকে বলা যায়, Gooseflesh.
পাশাপাশি আপনার দেহ দ্রুত তাপ উৎপন্ন করার জন্য কিছু পন্থা অবলম্বন করে, যেমন: দেহে থাকা ফ্যাট পুড়িয়ে ফেলে এবং দেহ কম্পন করে তথা এই কারনেই শীতকালে ঠোঁটের পাশাপাশি দেহে কাপুনি উঠে।
©কোরা