রান্না কিংবা অন্যান্য ব্যবহারের কাজে অনেকেই বৃষ্টির পানি ব্যবহার করে থাকেন।সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা আর বন্যা কবলিত এলাকাতে মানুষ অনেক সময় বৃষ্টির পানি খাওয়া বা রানার কাজে ব্যবহার করে। কিন্তু এই বৃষ্টির পানি আসলে কতটা নিরাপদ? নিরাপদ না হলে কেন নিরাপদ নয় সে ব্যাপারে অনেকেই জানেন না। বৃষ্টির পানির নিরাপদ ব্যবহার নিয়েই আমাদের এবারের আয়োজন-
আপনার শহরের সাপ্লাইয়ের পানি যদি ভালো হয় সেক্ষেত্রে বৃষ্টির পানি ব্যবহারের প্রশ্নই আসে না। আবার সাপ্লাইয়ের পানি ভালো না বলে যে বৃষ্টির পানি ব্যবহার করছেন সেটাও ঠিক না। কেন ঠিক না? মেঘ যখন বৃষ্টির পানি হয়ে ঝরে তখন আবহাওয়া ও বায়ুমন্ডলের সংস্পর্শে তাকে আসতে হয়। আর আমাদের এই বায়ুমন্ডলে অনেক ধুলোবালি এবং অনেক ক্ষতিকর পদার্থ থাকে যেগুলো বৃষ্টির ফোঁটার সাথে সহজেই মিশে যায়। তাই সরাসরি বৃষ্টির পানি ব্যবহার করা মোটেও নিরাপদ নয়।
বৃষ্টির পানিতে এসিড মিশ্রিত থাকে। এছাড়াও বাতাসের ধুলোবালি, অনেক ভারী ধাতব পদার্থ, গাছের লতাপাতার ময়লা, পাখির মলমূত্র ইত্যাদি মিশে থাকে। এসিড মিশ্রিত পানি ব্যবহারের জন্য ক্ষতিকর। এসিড মিশ্রিত না থাকলেও অন্য ময়লা, নোংরা এইসবে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর।
মানুষ সাধারণত যে পানি ব্যবহার করে তাতে শরীর গঠনের বিভিন্ন উপকারী উপাদান থাকে। যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফ্লোরাইড.. ইত্যাদি। এখন কেউ যদি নিয়মিত বৃষ্টির পানি ব্যবহার করতে থাকে তাহলে তার শরীরে এইসব উপাদানের ঘাটতি দেখা দেবে যা শরীরের জন্য অবশ্যই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
এছাড়াও আরেকটি ব্যাপার আছে। যে পৃষ্ঠ (সারফেস) থেকে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করছেন, ধরুন ঘরের চাল, ছাদ/ পানির ট্যাংক.. এগুলোর উপরিভাগে(সারফেস) বিভিন্ন ধরণের ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া সহ অনেক ধরণের অণুজীবী থাকে যা বৃষ্টির পানির সাথে মিশে যায়। ফলে এই পানি কখনই নিরাপদ নয়।
তবু যদি বৃষ্টির পানি ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে পানিকে অবশ্যই নিরাপদ উপায়ে স্বাস্থ্য সম্মতভাবে ফিল্টার করে নিন। মনে রাখবেন, সঠিকভাবে ফিল্টার না করে কোনভাবেই বৃষ্টির পানি ব্যবহার করা উচিত নয়। এছাড়া পানি ফুটিয়ে বা ক্লোরিন ট্যাবলেট ব্যবহার করেও পানি পান করার জন্য নিরাপদ করা যায়।
পানি অপর নাম জীবন। তবে মনে রাখতে হবে সেটা অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি হতে হবে।