প্রতিদিনই রাস্তায় হরেক রকম গাড়ির দেখা মেলে। আকার আকৃতি বা বর্ণে সেসবে থাকে নানা বৈচিত্র্য। যে কোনো গাড়ি বা যানবাহনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় অংশ হচ্ছে এর চাকা। প্রায় সব গাড়ির চাকা তৈরি হয় রাবারের টায়ার ব্যবহার করে। গাড়ি যেমনই হোক, টায়ারের রঙটা কিন্তু সবসময় কালো হয়। কালো রঙের টায়ার তৈরির পিছনে আসলে কারণ কী?
রাবারের প্রাকৃতিক রঙ হচ্ছে দুধসাদা। প্রথম দিককার টায়ারগুলো সাদা রঙেরই হতো। পরে এর স্থায়ীত্ব এবং কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তাতে কার্বন ব্ল্যাক মিশিয়ে টায়ার তৈরি শুরু হয়। কার্বন ব্ল্যাক হচ্ছে তেল বা গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানীর উপজাত। স্ট্যাবিলাইজিং পদার্থ হিসেবে এর পরিচিতি আছে। এটা অন্যন্য পলিমারের সাথে যুক্ত হয়ে টায়ারের ট্রেড যৌগ তৈরি করে। কার্বন ব্ল্যাক তাপ ও অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে রাবারের গুণগত মান বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে স্বায়ীত্ব বৃদ্ধি পায় টায়ারের।
সাদা টায়ার যেখানে ৫ হাজার মাইল পর্যন্ত ঠিকঠাক থাকত। সেখানে কার্বন ব্ল্যাকের তৈরি টায়ার ৫০ হাজার মাইল বা তার বেশি পথও নির্বিঘ্নে ব্যবহার করা যায়। টায়ারের কালো রঙ কেবল এর শক্তি এবং স্থায়ীত্ব বৃদ্ধিই করে না, একইসঙ্গে এটা ড্রাইভিংয়ের নিরাপত্তাকেও প্রভাবিত করে। যেহেতু টায়ারে ভর দিয়েই গাড়ি চলে, তাই টায়ারকে গাড়ির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। টায়ারের ওপর একটি গাড়ির হ্যন্ডেলিং, ত্বরণ বা ব্রেকিংসহ পুরো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অনেকখানিই নির্ভর করে। টায়ার শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কারণে যানবাহনের সার্বিক নিরাপত্তা বেড়ে যায়।
এছাড়া কালো রঙের টায়ারের আরেকটা ভালো দিক হচ্ছে, এটা সহজে ময়লা হয় না। আবার পরিষ্কার করাও সহজ। সাদা বা অন্য রঙের টায়ারের গাড়ি যে বর্তমানে একেবারেই নেই এমন নয়। তবে, সেগুলো দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করার জন্য উপযুক্ত নয়। এসব কারণে, নির্মাতা কোম্পানিগুলো সাধারণত কালো রঙের টায়ারই তৈরি করে।
লেখা : আব্দুল্লাহ্ আল মাকসুদ
সূত্র : লাইভ সায়েন্স