নতুন বইয়ের ঘ্রাণ হয় বইয়ের কাগজে ব্যবহৃত রাসায়নিক, কালি এবং বই ছাপার জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের উদ্বায়ী রায়াসনিক উপাদান থেকে। নতুন বইয়ের কাগজ প্রক্রিয়াকরণ এর সময় তন্তুগুলো কাগজের উপযোগী করে তুলতে ব্যবহার করা হয় নানা রাসায়নিক উপাদান। যেমনঃ অম্লতার জন্য সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড। আবার কাগজের তন্তুগুলোকে ধোয়া হয় অনেক রাসায়নিক উপাদানে। এছাড়া কাগজে কালি বাঁধানোর জন্য ব্যবহার করা হয় কিছু জৈব কো-পলিমার। যেমন: ভিনাইল অ্যাসিটেট ইথিলিন। কাগজে ব্লিচিং এজেন্ট হিসেবে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ব্যবহার করা হয়, তাছাড়া কাগজে আছে অ্যালকাইল কেটিন ডাইমার। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ এর কারণ হচ্ছে কাগজ তৈরিতে ব্যবহৃত জটিল উদ্বায়ী রাসায়নিক গুলোর বিক্রিয়া।
তাছাড়া অনেকের পুরানো বইয়ের ঘ্রাণও ভালো লাগে। পুরানো বইয়ের ঘ্রাণের জন্য দায়ী হাজার রকমের জৈব যৌগ৷ পুরানো বইয়ের ঘ্রাণ হয় সাধারণত সেলুলোজ ও লিগনিন এর ভাঙনের ফলে। আবার সময়ের সাথে সাথে বইয়ের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়ার জন্যও দায়ী লিগনিন। কাগজ সাধারণত কাঠ দিয়ে তৈরি এবং কাঠে আছে লিগনিন ও সেলুলোজ। সেলুলোজের কাজ হচ্ছে কাগজে লিগনিন এর তন্তুগুলোকে ধরে রাখা। কাগজের লিগনিন অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে বিক্রিয়া করে তৈরি করে অম্ল। এই অম্ল সেলুলোজকে ভেঙে ফলে, যার জন্য বইয়ের পাতা হলুদ হয়ে যায়। সময়ের সাথে এই অম্লীয় উপাদানগুলোর উপস্থিতিতে অ্যাসিড হাইড্রোলাইসিস বিক্রিয়া ঘটতে থাকে এবং উদ্বায়ী জৈব যৌগ তৈরি হয় যা পুরাতন বইয়ে ঘ্রাণের সৃষ্টি করে। এইসব বিক্রিয়ার ফলে এমন কিছু রাসায়নিক তৈরি হয় যার গন্ধ অনেকটা ভ্যানিলা, ঘাস ও আমন্ডের মতো হয়।
আমাদের নাকের ভিতরে আছে গন্ধ-অনুভতি বহনকারী ৪০০ রিসেপ্টর বা গ্রাহক-কোষ। এই গ্রাহক কোষ তৈরি করে এক ধরনের আঠালো মিউকাস যা গন্ধের অনুভূতি সৃষ্টি করে এমন উপাদান আটকে যায়। তারপর নাকের গ্রাহক কোষগুলো মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায় যার জন্য ঘ্রাণ অনুভূত হয়।
Nishat tasnim