বংশবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে।
নারী-পুরুষ আকর্ষণের জৈবিক মডেলকে স্তন্যপায়ী প্রাণীর বংশবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে একটি ড্রাইভ অর্থাৎ তাড়না হিসাবে মনে করা হয় যা ক্ষুধা বা তৃষ্ণার মতো। আকর্ষণের জৈবিক কারণ হিসাবে নিউরাল সার্কিটগুলি, নিউরোট্রান্সমিটার সব সময় কার্যকর ভূমিকা পালন করে ।
কামনা হল যৌন বাসনার প্রাথমিক ধাপ যা অক্সিটোসিন, টেস্টোস্টেরন এবং এস্ট্রোজেনের মতো হরমোন নিয়ন্ত্রন করে। এর প্রভাব কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়, আকর্ষণ আরও ব্যক্তিকেন্দ্রিক এবং রোমান্টিক হয় একটি নির্দিষ্ট সঙ্গীর জন্য, যার মাধ্যমে একটি স্বতন্ত্র লালসা বিকশিত হয়। স্নায়ুবিজ্ঞানের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, মানুষ মূলত প্রেমে পড়ে যখন তার মস্তিষ্ক নিয়মিত একটি নির্দিষ্ট সেটের রাসায়নিক পদার্থ ত্যাগ করে। উদাহরণস্বরূপ, নিউরোট্রান্সমিটার হরমোন, ডোপামিন, নরএপিনেফ্রাইন, এবং সেরোটোনিন এর কথা উল্লেখ করা যেতে পারে । এছাড়া অ্যাম্ফেটামাইন একই ধরনের পদার্থ যার ফলে মস্তিষ্কের কেন্দ্রীয় অংশ সক্রিয় হয়ে ওঠে, হার্টের কম্পনের হার বৃদ্ধি পায় , ক্ষুধা এবং ঘুম হ্রাস পায়, এবং উত্তেজনা বেড়ে যায় । গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই পর্যায় সাধারণত দেড় থেকে তিন বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
যেহেতু কামনা এবং আকর্ষণ এর পর্যায়গুলিকে অস্থায়ী বলে মনে করা হয়, তাই দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কের জন্য একটি তৃতীয় পর্যায় প্রয়োজন। সংযুক্তি হল এক ধরনের বন্ধন যার কারণে সম্পর্ক অনেক বছর এমনকি কয়েক দশক পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। সংযুক্তি সাধারণভাবে বিবাহ বা শিশু জন্মদান করার মত অঙ্গীকারগুলির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। তাছাড়া পারস্পরিক বন্ধুত্ব বা পছন্দের বিষয়গুলি ভাগ করে নেয়ার কারণেও সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে স্বল্পমেয়াদী সম্পর্কের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের ক্ষেত্র বেশি পরিমাণে রাসায়নিক অক্সিটোসিন এবং ভেসোপ্রেসিন নির্গত হয়। বিজ্ঞানী এনজো ইমানুয়েল এবং তার সহকর্মীরা নির্ধারণ করেন যে প্রোস্টেট গ্রন্থি স্নায়ু বৃদ্ধিকারক ফ্যাক্টর (এনজিএফ) নিঃসরণ করে, যখন মানুষ প্রথম প্রেমে পড়ে তখন এর মাত্রা অনেক বেশি থাকে, কিন্তু এক বছর পর তারা আবার পূর্ববর্তী স্তরে ফিরে আসে।