ভ্যাকসিন ট্রায়ালে ইঁদুর ব্যবহার এর কারণঃ-
১. ইঁদুরকে সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়:
ইঁদুর ছোট প্রাণী হওয়ায় এদেরকে খুব সহজেই পরিচালনা ও পরিবহণ করা যায় এবং এদের উপর পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়া সহজ। কল্পনায় ভেবে দেখুন অন্য কোনো স্তন্যপায়ী প্রাণির কথা, যেমন জিরাফ বা ক্যাংগারু, সেক্ষেত্রে তাদেরকে গবেষণাগারে রাখা বা একটা ইনজেকশন দিতেই বিজ্ঞানীদের অনেক বেগ পেতে হবে!
এছাড়া ইঁদুর তুলনামূলক ভাবে নিরীহ প্রাণি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় প্রাণিটিকে বিভিন্ন প্রকার অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে চাপ দেয়া হয় যা হতে পারে অনেক বেশি বিরক্তিকর বা উত্তেজক। যদি আপনি ইঁদুরকে বিরক্ত করেন তাহলে সে খুব বেশি হলে আপনার আঙ্গুলে কামড়ে দেবে। অন্যদিকে যদি আপনি সিংহ কে ধারালো কিছু দিয়ে খোঁচা দেন তাহলে গবেষক হিসেবে আপনার দিনটি খুবই খারাপ যাবে।
২. অপরিসীম প্রজনন ক্ষমতা সম্পন্ন:
ইঁদুরের উৎপাদন ক্ষমতা অনেক দ্রুত। এদের বংশবৃদ্ধির হার অন্যান্য অনেক প্রাণির তুলনায় বেশি। আর জীবনকাল কম হওয়ায় ওদের নতুন প্রজন্ম খুব দ্রুতই পাওয়া যায়। তাই এদের ভিন্ন ভিন্ন প্রজন্মান্তরে পরীক্ষা করা যায়।
৩. মানুষের সাথে মিল:
Koshland Science Museum এর মতে, ইঁদুরের ৯০% জিন আশ্চর্যজনক ভাবেই মানুষের সাথে মিলে যায়। একারণেই মানুষের বিভিন্ন প্রকার জিনের পরিবর্তন, ভ্যাক্সিন, অঙ্গ–তন্ত্রের মিল থাকায় তাদের নানা রোগ নির্ণয় ও ওষুধ আবিষ্কারের পরীক্ষাও ইঁদুরের সাহায্যে করা হয়।
এছাড়াও এরা জিনগত ভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। এদের জিনকে নির্দিষ্টভাবে মোডিফাই করা যায়। যা বিভিন্ন পরীক্ষণ, ভ্যাক্সিন টেস্ট, কোন রোগের জন্য কোন জিন দায়ী, নানা জেনেটিক মোডিফিকেশন ট্রায়ালের ফলাফল পর্যবেক্ষণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিপরীত জিন সম্বলিত এই প্রকার ইঁদুরকে ‘নকআউট ইঁদুর’ বলা হয়। আরেক ধরণের ইঁদুর আছে যাদের ট্রান্সজেনিক ইঁদুর বলা হয়। বাহির থেকে DNA এদের শরীরে প্রবেশ করানোর পরে প্রজনন করানো হয়। মানুষের যন্ত্রণাদায়ক নানা রোগের ম্যাপিং মডেল তৈরিতে সাহায্য করে এই ইদুর।
তথ্যসূত্র: প্রিয়, গুগল, উইকিপিডিয়া