যে জৈবছন্দ (biological rhythm) অনুযায়ী উদ্ভিদ, প্রাণী, ছত্রাক, cyanobacteria ইত্যাদি নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিবেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নির্দিষ্ট শারীরবৃত্তীয় চক্র সম্পন্ন করে, তাকে জৈব ঘড়ি বলে (biological clock) বলে। এ জৈবিক প্রক্রিয়া circadian clock বা circadian clock নামেও পরিচিত। জীবের অভ্যন্তরীন গঠন ও বৈশিষ্ট্যের কারণে দিবা-রাত্রির আলোর তারতম্য, ঋতু পরিবর্তন, পরিবেশ, তাপমাত্রা ইত্যাদির পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট সময়ান্তে জীবের অঙ্কুরোদ্গম, পুষ্পাগম, যৌন উদ্দীপনা, হরমোন উৎপাদন, ঘুম ইত্যাদি জৈবিক কার্যাদি সম্পন্ন হয়। উদ্ভিব ও প্রাণীর এ জৈবিক ছন্দ দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক, বার্ষিক এমনকি জোয়ার-ভাটা কিংবা দিন-রাত্রির ভিত্তিতে সংগঠিত হয়।
ফ্রেঞ্চ বিজ্ঞানী Jean-Jacques de Mairan ১৯৭২ সালে প্রথম উদ্ভিদের circadian rhythm রেকর্ড করেন। ধারণা করা হয়, জীবকোষের ফটোসেনসিটিভ প্রোটিন, কোষাভ্যন্তরের বিপাক প্রক্রিয়া ইত্যাদি পরিবেশের সঙ্গে সমন্বয় করে জৈবছন্দ তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
উদ্ভিদের ফটেপিরিওডিজম, লিফ মুভমেন্ট, গন্ধ বিকিরণ, মানুষের রাতের ঘুম, পাকস্থলীতে নির্দিষ্ট সময়ে গ্যাস্ট্রিক রসের নিঃসরণ, চন্দ্রমাসের ছন্দে অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের যৌনাচার ইত্যাদি জৈবছন্দের উদাহরণ। মানুষসহ অন্যান্য জীবের জন্য এ জৈবছন্দ অন্তত্য গুরুত্বপূর্ণ।