বাংলাদেশে বর্তমানে একেবারে উষ্ণ মরুভূমির মতো আবহাওয়া বিরাজ করছে। 'উষ্ণ' শব্দটা উল্লেখ করা জরুরি কারণ মরুভূমি শীতলও হতে পারে। উষ্ণ মরুভূমির বৈশিষ্ট্য হলো উচ্চ তাপমাত্রা, সীমিত আর্দ্রতা, কম বর্ষণ। পাশাপাশি দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে আর্দ্রতা কমে। যেমন রাজশাহীতে ১২ এপ্রিল বিকাল চারটার দিকে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হবে এবং আর্দ্রতা হবে ১৩% এবং গত রাতের তাপমাত্রা ছিল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আর্দ্রতা ছিল ৫৭%।
এই শুকনো পরিবেশ অনেক ঘটনা ঘটাচ্ছে, অনেকগুলোর সাক্ষী আপনিও। যেমন:
১. বাতাস অনেক শুকনো বলে তা সহজেই পানি টানতে পারছে। সেজন্য ঠোঁট শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে, চামড়া শুষ্ক হচ্ছে, ঘাম হচ্ছে না।
২. আর্দ্রতা কম বলে সূর্যের আলো বাতাসে প্রতিসরিত কম হচ্ছে তাই আলো এদিক-ওদিক না ছড়িয়ে সোজা চলে আসছে তাই রোদের তেজ অনেক বেশি।
৩. শুকনো বাতাস তাপ ধরে রাখতে পারে না। তাই দিনের গরম হয়ে ওঠা বাতাস হালকা হয়ে উপরে গিয়ে উপরের ভারী ও ঠান্ডা বাতাস নিচে পাঠাচ্ছে। দিনে মাটিতে শোষিত তাপ রাতে বিকিরিত হয় যা শুষ্ক বাতাস ধরে রাখতে পারছে না। হালকা ও গরম হয়ে উঠে যায় এবং উপরের ভারী ও ঠান্ডা বাতাস নিচে পাঠায়। রাতে নিচের দিকে ঠান্ডা বাতাসের আধিক্য বেড়ে যাওয়ায় রাতের তাপমাত্রা নেমে যাচ্ছে। তবে মরুভূমির শুষ্ক মাটি বা বালি একদমই তাপ ধরে রাখতে পারে না তাই মরুভূমিতে দিনে ৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও রাতে শূন্যের নিচে নেমে যায়। বাংলাদেশ মরুভূমি নয়, মাটিও শুকনো নয় তাই তাপমাত্রা অতটাও নামে না।
৪. রাতে তাপমাত্রা নেমে যাওয়ার সাথে সাথে বাতাসের আর্দ্রতাও বাড়ে। রাতে আর্দ্রতা বেড়ে ৭০% এর উপরে চলে গেলে একটা ঘটনা ঘটবে। উপরে বর্ণিত কারণে মাটি কর্তৃক বিকিরিত তাপ শুষ্ক বাতাস যেহেতু ধরে রাখতে পারে না, তাই ঠান্ডা বাতাসের আধিক্য ঘটে এবং এই ঠান্ডা বাতাসের আর্দ্রতা ধারণ ক্ষমতা কম। তাই যতটুকু জলীয়বাষ্প ধারণ করবে তার অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে কুয়াশা তৈরি করে। এই কুয়াশা radiation fog বা বিকিরণ কুয়াশা নামে পরিচিত।
@রাশিক আজমাইন | Team Science Bee